তরুণরা সঠিক ইতিহাস না জানলে বিপথগামী হতে পারে : হানিফ
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেল পৈশাচিক হত্যাকাণ্ডের নির্মম শিকারের প্রতীক বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ।
আজ শুক্রবার (২১ অক্টোবর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে সকাল ১০টায় ‘ভোরের পাখি শেখ রাসেল’ শীর্ষক শিশু-কিশোর চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার আয়োজন করে গৌরব ’৭১।
তিনি বলেন, আজ যারা গণতন্ত্র, মানবাধিকারের কথা বলেন, শিশু রাসেলের হত্যাকাণ্ড তাদের হৃদয়ে নাড়া দিতে পারেনি।
বিজ্ঞাপন
নিষ্ঠুর এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে তাদের কোনো কথা নেই কেন?
অভিভাবকদের উদ্দেশ করে হানিফ বলেন, জাতির পিতার নেতৃত্বে ৩০ লাখ শহীদের আত্মত্যাগ ও দুই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমহানির মধ্য দিয়ে এই বাংলাদেশ অর্জিত হয়েছে। এটা সবার জানা উচিত। এত ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত দেশকে স্বাধীনতার চেতনা থেকে বিচ্যুত হতে দেওয়া যাবে না। একাত্তরে যারা স্বাধীনতার বিরুদ্ধে ছিল তারা এক রাজনৈতিক মঞ্চে দাঁড়িয়ে ইতিহাস বিকৃত করছে। রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে জ্বালাও-পোড়াও করে উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করছে। এসব ইতিহাস প্রজন্মকে জানানো প্রয়োজন। কারণ তরুণ প্রজন্ম সঠিক ইতিহাস না জানলে বিপথগামী হতে পারে।
তিনি বলেন, শিশুরা জিপিএ-৫ পাওয়ার লক্ষ্য নিয়ে বড় হচ্ছে। প্রতিটি শিশুর প্রথম স্কুল তার ঘর, আর শিক্ষক মা-বাবা। শিশুদেরকে নীতি-নৈতিকতার আদর্শে গড়ে তুলতে পারেন মা-বাবা। আমরা সবাই শিশুদের ডাক্তার, ব্যারিস্টার, বড় আমলা বানাতে চাই; কিন্তু তাদেরকে মানুষ হিসেবে গড়ার চিন্তা নেই। যার কারণে সমাজ থেকে আদর্শ মানুষ হারিয়ে যাচ্ছে। পড়ালেখার পাশাপাশি শিশুদেরকে মেধা বিকাশের সুযোগ দিন এবং নীতি-নৈতিকতা শিখিয়ে দিন, যাতে আদর্শ মানুষ হতে পারে। এ সময় তিনি শিশুদের লেখাপড়ার পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সম্পর্কে পরিপূর্ণ ধারণা দেওয়ার অনুরোধ জানান।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. মশিউর রহমান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য জেড এম পারভেজ সাজ্জাদ ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য অ্যাডভোকেট সানজিদা খানম। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন গৌরব ’৭১-এর সভাপতি এস এম মনিরুল ইসলাম মনি এবং সঞ্চালনা করবেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক এফ এম শাহীন।
এদিকে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় সম্মানিত বিচারক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের গ্রাফিকস ডিজাইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. সীমা ইসলাম ও সহযোগী অধ্যাপক সিদ্ধার্থ দে এবং চিত্রশিল্পী কিরীটী রঞ্জন বিশ্বাস।
‘ভোরের পাখি শেখ রাসেল’ শীর্ষক এ চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় তিনটি বিভাগে অন্তত ৭০০ প্রতিযোগী অংশ নেন। এদের মধ্য থেকে প্রত্যেক বিভাগের ১০ জন করে মোট ৩০ জনকে পুরস্কৃত করা হয়।
‘ক’ বিভাগে প্রথম হয়েছেন রায়ের বাজার উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আরাধ্য বড়াল, দ্বিতীয় শপ্তক দাশ এবং তৃতীয় উদয়ন উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অভিনব সৌমিক দে। ‘খ’ বিভাগে প্রথম হয়েছেন ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের জারিফা তাসনীম, দ্বিতীয় আজিজ ফাউন্ডেশনের আনিশা সন্তনী এবং তৃতীয় ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রকৃতি মনোলীনা রায়। ‘গ’ বিভাগে প্রথম হয়েছেন বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফ স্কুল অ্যান্ড কলেজের তাজিয়া তাহসীন, দ্বিতীয় ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের মাহদিয়াত আদিবাহ এবং ওয়েস্ট ইংলিশ হাই স্কুলের আরফান হোসেন আমান।
পুরস্কার হিসেবে ক্রেস্ট, মুক্তিযুদ্ধের বই ও সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়। এ ছাড়া অংশগ্রহণকারী বাকি প্রত্যেককে মুক্তিযুদ্ধের বই ও সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়।