ইউক্রেনে ১০ লাখের বেশি পরিবার বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন
ইউক্রেনের বিদ্যুৎ গ্রিডকে লক্ষ্যবস্তু করে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলা অব্যাহত রয়েছে। দেশজুড়ে বিভিন্ন জ্বালানি অবকাঠামোতে আরো রুশ হামলার পর শনিবার ১০ লাখের বেশি পরিবার বিদ্যুৎবহীন ছিল। রবিবার থেকে রাজধানী কিয়েভে নিয়ম করে লোড শেডিং করা হচ্ছে।
ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ থেকে আলজাজিরার এক প্রতিবেদক জানান, রাতভর হামলা চালিয়ে যাচ্ছে রাশিয়া।
বিজ্ঞাপন
ইউক্রেনীয়রা বলছে, রুশ বাহিনী তাদের কৌশলে পরিবর্তন এনেছে। তারা বিশেষ করে জ্বালানি অবকাঠামোতে হামলা করছে। শনিবারের হামলা ছিল এ পর্যন্ত সবচেয়ে বিস্তৃত।
ইউক্রেনের বিমানবাহিনী জানিয়েছে, শনিবার দেশটির জ্বালানি অবকাঠামো লক্ষ্য করে ৩৩টি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা করে রাশিয়া। এর মধ্যে ১৮টি ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করা হয়েছে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট কার্যালয় জানিয়েছে, ক্ষতিগ্রস্ত বিদ্যুৎ সংযোগ পুনঃস্থাপনে প্রকৌশলীরা হিমশিম খাচ্ছেন। গত কয়েক দিনের রুশ হামলায় এক-তৃতীয়াংশ বিদ্যুৎকেন্দ্র বিভিন্ন মাত্রায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
কিয়েভের জ্বালানি কম্পানি ডিটিইকে তার ওয়েবসাইটে জানায়, সমস্যা এড়াতে রবিবার থেকে কিয়েভে নিয়ম করে লোড শেডিং শুরু করেছে জাতীয় জ্বালানি সংস্থা ইউক্রেনার্গো। কিয়েভের বাসিন্দাদের তিন দলে বিভক্ত করা হয়েছে। একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বিদ্যুৎ বন্ধ রাখা হবে। স্থানীয় সময় সকাল ১১টা থেকে বিদ্যুৎ বন্ধ রাখা শুরু হয়েছে।
কর্তৃপক্ষ বলেছে, টানা চার ঘণ্টার বেশি বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকার কথা নয়। তবে সরবরাহ ব্যবস্থার ক্ষতির মাত্রার ওপর ভিত্তি করে তা আরো দীর্ঘ হতে পারে। কিয়েভবাসীকে এরই মধ্যে বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে। ব্যবসায়ীদের বাহ্যিক আলোকসজ্জা ও বৈদ্যুতিক সাইন কমানোরও আহ্বান জানিয়েছে ইউক্রেনার্গো।
এদিকে শনিবার ইউক্রেনের বিরুদ্ধে অধিকৃত খেরসনের নোভা কাখোভকা জল বিদ্যুৎকেন্দ্রে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে তা ধ্বংসের পরিকল্পনার পাল্টা অভিযোগ তুলেছে রাশিয়া। এর আগে ইউক্রেনের কর্মকর্তা অভিযোগ করেছিলেন, রাশিয়া এই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র উড়িয়ে দিতে সেখানে বিস্ফোরক বসিয়েছে। তিনি আরো বলেন, রাশিয়া এ জন্য পরে কিয়েভের ওপর দোষারোপের পরিকল্পনা করছে। তবে কোনো পক্ষই নিজেদের অভিযোগের সমর্থনে প্রমাণ দিতে পারেনি।
আবার বাসিন্দাদের খেরসন ছাড়ার নির্দেশ
এদিকে অধিকৃত খেরসনের রুশ সমর্থিত কর্তৃপক্ষ আবারও সেখানকার বাসিন্দাদের ‘অবিলম্বে’ সরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। তাদের আশঙ্কা, ইউক্রেনীয় সেনারা খেরসন পুনরুদ্ধারে পাল্টা আক্রমণমূলক অভিযান চালাবে।
খেরসনের বর্তমান আঞ্চলিক প্রশাসন গত শনিবার এক টেলিগ্রাম পোস্টে আগামী দিনে ইউক্রেন বাহিনীর ‘সন্ত্রাসী হামলার’ হুমকি এবং কথিত পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করে বেসামরিক নাগরিকদের খেরসন ছাড়ার তাগিদ দেয়।
যুদ্ধ এলাকা থেকে রুশ অধিকৃত অঞ্চলটির আরো ভেতরের দিকে সরে যেতে নৌকায় নদী পার হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে রুশ কর্তৃপক্ষ।