সুনাকের উত্থান যে কারণে ভারত পাকিস্তান উভয়ের গর্ব
যুক্তরাজ্যের কনজারভেটিভ পার্টির নেতা ঋষি সুনাক দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন। তবে ভারত ও পাকিস্তানে তার পূর্বপুরুষদের জন্মস্থান হওয়া নিয়ে চলছে তর্ক। উভয় দেশের মানুষজনই সুনাকের বংশের বিষয়ে দাবি ও পাল্টা দাবি করছে।
সুনাকের পরিবারের আদিনিবাস পাঞ্জাবের গুজরানওয়ালায়।
বিজ্ঞাপন
দেশবিভাগের পর পাঞ্জাবের সে অংশটি পড়েছে পাকিস্তানে। ঋষির পিতামহ রামদাস ভারতের স্বাধীনতা লাভের বছর বারো আগে সপরিবারে আফ্রিকায় চলে যান। সেখান থেকে তার ছেলে যশবীর (ঋষির বাবা) যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমান।
ঋষি সুনাক নিজেকে ‘গর্বিত হিন্দু’ বলে অভিহিত করেন। এক বক্তৃতায় নতুন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী জানান, তিনি তার ‘ভারতীয় শিকড়’ এবং পূর্বপুরুষদের জন্মস্থান নিয়ে গর্বিত। যুক্তরাজ্যের আদমশুমারিতে তিনি নিজেকে ‘ব্রিটিশ ভারতীয়’ হিসেবে উল্লেখ করেন। সুনাক সব সময় হিন্দু ধর্মের প্রতি তার বিশ্বাসের কথা বলেছেন। তিনি গো পূজা, মন্দিরে খাবার পরিবেশন করার মত কাজ করে থাকেন। গরুর মাংস খান না। ব্রিটিশ এমপি হওয়ার পর তিনি হিন্দু ধর্মগ্রন্থ গীতায় হাত রেখে শপথ নেন।
ঋষি সুনাক প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর তার পরিবার কোথায় ছিল তা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। তবে অনেক বিশেষজ্ঞই বলছেন, ভারত ও পাকিস্তানের স্বাধীনতার আগেই সুনাকের পরিবার ভারতবর্ষ ত্যাগ করে। তখন ভারত বা পাকিস্তান কোনোটাই ছিল না। তাই এটা ভারত ও পাকিস্তান উভয় দেশের গর্ব। যে ব্রিটিশরা প্রায় দুইশ বছর ভারতবর্ষ শাসন করেছে তাদেরই প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন একজন দক্ষিণ এশীয়।
পাঞ্জাবের কবি গুরভজন সিং গিল বলেন, ‘আসলে কোনো বিতর্ক নেই। সুনাকের সাফল্য ভারত ও পাকিস্তান উভয়েরই। প্রকৃতপক্ষে, উভয় পাঞ্জাবের মানুষদের যে বিষয়ে গর্ব করা উচিত তা হল, শিখ যোদ্ধা মহারাজা রঞ্জিত সিংয়ের জন্মস্থান গুজরানওয়ালায় তার আদি নিবাস। তিনি একটি সার্বভৌম দেশের প্রধান হচ্ছেন। সুনাকের পরিবারের শিকড় অবিভক্ত পাঞ্জাবে। তিনি যুক্তরাজ্যে জন্মগ্রহণ করেন, তাই স্বাধীনতার পরে ভারত বা পাকিস্তানের সঙ্গে তাঁর কোনও যোগসূত্র নেই’।