বাইশের বিশ্বকাপে ’৯২-এর ছায়া
তাই বলে এত মিল! ব্যবধানটা ৩০ বছরের। দুটি আলাদা যুগ, আলাদা প্রজন্ম। বিশ্বকাপের ধরনও আলাদা; একটি ওয়ানডে বিশ্বকাপ, আরেকটি টি-টোয়েন্টি। এর পরও ১৯৯২ ওয়ানডে বিশ্বকাপের সঙ্গে কাকতালীয়ভাবে মিলে যাচ্ছে ২০২২ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ।
বিজ্ঞাপন
স্বাগতিকদের হতাশা : ১৯৮৭ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপ জয়ের পর ১৯৯২-এ নিজেদের মাটিতে ফেভারিট ছিল অস্ট্রেলিয়া। অথচ তারা সেমিফাইনালেই পৌঁছাতে পারেনি। ২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া নিজেদের মাটিতে ফেভারিট ছিল এবারও। কিন্তু অ্যারন ফিঞ্চের দল ছিটকে পড়ে শেষ চারের আগে।
এশিয়ানদের বিপক্ষে শুরু ইংল্যান্ডের : ’৯২-এ নিজেদের প্রথম ম্যাচটি এশিয়ার দল ভারতের বিপক্ষে খেলেছিল ইংল্যান্ড। শুরুতে ব্যাট করে গ্রাহাম গুচের দল করেছিল ৯ উইকেটে ২৩৬। জবাবে ভারত ২২৭-এ গুটিয়ে হার মানে ৯ রানে। সেই ম্যাচটা হয়েছিল পার্থে। সেই পার্থে এবারও প্রথম ম্যাচ খেলেছে ইংল্যান্ড। প্রতিপক্ষ ছিল এশিয়ার দল আফগানিস্তান। জস বাটলারের দল ম্যাচটি জেতে ৫ উইকেটে।
পাকিস্তানের বাজে শুরু : ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে পাকিস্তান ’৯২ বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচটি খেলে মেলবোর্নে। ১০ উইকেটের হারে ইমরান খানের দলের শুরু হয় বিশ্বকাপ অভিযান। এবারও সেই মেলবোর্নে পাকিস্তান খেলে প্রথম ম্যাচ। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারত বাবর আজমের দলকে হারায় ৪ উইকেটে। ২০২২-এর মতো ১৯৯২ সালেও কিন্তু ভারত হারিয়েছিল ইমরানদের।
পাকিস্তানের টানা তিন জয় : এবার প্রথম দুই ম্যাচ হারের পর টুর্নামেন্টের সবগুলো খেলাই ছিল পাকিস্তানের জন্য ‘ফাইনাল’। একটা ম্যাচ হারলেই নিতে হতো বিদায়। কিন্তু টানা তিন জয়ে তারা পৌঁছেছিল সেমিফাইনালে। ’৯২ সালেও বিদায়ের কিনারা থেকে ইমরান খানের দল সেমিফাইনালে পৌঁছে শেষ তিন ম্যাচ জিতে।
সেই নিউজিল্যান্ড : একটি মাত্র ম্যাচ হেরে মার্টিন ক্রোর নিউজিল্যান্ড ’৯২-এ সেমিফাইনালে পৌঁছেছিল শীর্ষ দল হিসেবে। ২০২২ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও একটা ম্যাচ হেরে নিজেদের গ্রুপের সেরা হয়ে শেষ চারের টিকিট কাটে কিউইরা। ’৯২-এ ফেভারিট হয়েও ২৬২ রানের বড় পুঁজি নিয়ে সেমিফাইনালে পাকিস্তানের কাছে হেরে বসে নিউজিল্যান্ড। এবারও সেই নিউজিল্যান্ডকে ৭ উইকেটে হারিয়ে ফাইনালে পৌঁছেছেন বাবররা।
দুই বাঁহাতি পেসার : ’৯২ বিশ্বকাপে পাকিস্তানের হয়ে সবচেয়ে বেশি ১৮ উইকেট নিয়েছিলেন পাকিস্তানের বাঁহাতি পেসার ওয়াসিম আকরাম। এবারও আরেক বাঁহাতি পেসার শাহীন শাহ আফ্রিদি নিয়েছেন দেশের হয়ে সর্বোচ্চ ১০ উইকেট।
ফাইনালে ইংল্যান্ড-পাকিস্তান : ’৯২-এ গ্রুপ পর্বে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৭৪ রানে অল আউট হয়েও বৃষ্টিতে ১ পয়েন্ট পাওয়াটা রক্ষা করে পাকিস্তানকে। এবারও বৃষ্টিতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দক্ষিণ আফ্রিকার ম্যাচ ভেস্তে গেলে ১ পয়েন্ট পায় প্রোটিয়ারা। তারা জিততে না পারাতেই কপাল খোলে পাকিস্তানের। ’৯২-এর মতো এবারও শেষ দিনের নাটকে সেমির টিকিট পায় বাবর আজমের দল। এবং ৩০ বছর আগের মতো এবারও ফাইনালে মুখোমুখি সেই ইংল্যান্ড-পাকিস্তান। বাবররা কি পারবেন ইমরানের দলের মতো ইংল্যান্ডকে হারিয়ে শিরোপা উত্সবে মাততে?