মিয়ানমারের বিরোধীদের সঙ্গে বসবে আসিয়ান, জান্তা নাখোশ
দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশগুলোর জোট আসিয়ানের নেতারা মিয়ানমারের বিরোধী পক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসা নিয়ে গত শুক্রবার একমত হয়েছেন। এর মধ্য দিয়ে জান্তা নিয়ন্ত্রিত দেশটিতে চলমান রক্তপাত বন্ধের পথ খুঁজছেন তাঁরা।
অভ্যুত্থানের পর থেকে এ পর্যন্ত মিয়ানমারে আন্দোলন, বিক্ষোভ ও সংঘাতে মৃতের সংখ্যা হাজার ছাড়িয়েছে। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে সামরিক বাহিনী অং সান সুচির সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকে দেশটিতে অস্থিরতা শুরু হয়।
বিজ্ঞাপন
আসিয়ান জোটের নেতারা ১৫ দফার এক বিবৃতি তৈরি করেছেন। এতে ‘সব পক্ষের সঙ্গে শিগগিরই বসার’ ব্যাপারে একমত হয়েছেন তাঁরা।
নেতাদের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ সাক্ষাতটি নমনীয় এবং অনানুষ্ঠানিক পন্থায় হবে। প্রাথমিকভাবে মিয়ানমারে আসিয়ান সভাপতির বিশেষ দূত এর দায়িত্ব পালন করবেন। ’
এ পদক্ষেপের অধীনে মিয়ানমারের জান্তাবিরোধী ‘ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট (এনইউজি)’ প্রতিনিধিদের সঙ্গে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এনইউজি ক্ষমতাচ্যুত অং সান সুচির নীতি নির্ধারকদের পরিচালিত স্বঘোষিত বিকল্প সরকার। আন্তর্জাতিক মহলে দেশের বৈধ সরকার হিসেবে একেই বিবেচনা করা হয়। কিন্তু জান্তার ভাষ্যে, এর সদস্যরা ‘সন্ত্রাসী’।
এর আগে গত বছরের এপ্রিলে সংঘাত নিরসনে ও শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আসিয়ান নেতারা মিয়ানমারের সঙ্গে ‘পাঁচ দফা ঐক্যমত্যের’ শান্তি পরিকল্পনায় সম্মত হন। কিন্তু এখন পর্যন্ত তা প্রয়োগ করেনি জান্তা সরকার।
এনইউজি’র সঙ্গে বসার বিষয়টি আসিয়ান জোটের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি পদক্ষেপ হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
তবে আসিয়ান নেতাদের বিরোধী পক্ষের সঙ্গে বসার ব্যাপারে একমত হওয়া নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে মিয়ানমারের জান্তা। তাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘মিয়ানমার দৃঢ়ভাবে এতে আপত্তি জানাচ্ছে এবং যে কোনো পন্থায় ওই অবৈধ এবং সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সঙ্গে আসিয়ান সদস্যদের বসার প্রচেষ্টায় নিন্দা জানাচ্ছে। ’
এবারের আসিয়ান সম্মেলনে আগেই মিয়ানমারের জান্তা সরকার প্রধান মিন অং হ্লাইংকে বয়কট করা হয়েছে। তবে দেশটির মিত্র চীনের প্রধানমন্ত্রী লি খোছিয়াং সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন।
জাতিসংঘ মহাসচিবের আহ্বান
এদিকে মিয়ানমারের জান্তাকে অবিলম্বে গণতন্ত্রে ফেরার তাগিদ দিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। তাঁর মতে, এটিই দেশটিকে ছেয়ে ফেলা ‘বিরামহীন দুঃস্বপ্নের’ ইতি টানার একমাত্র উপায়।
গুতেরেস গতকাল শনিবার বলেন, ‘মিয়ানমারের পরিস্থিতি মানুষের জন্য বিরামহীন দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে এবং তা পুরো অঞ্চলের শান্তি ও সুরক্ষার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। ’
জাতিসংঘ মহাসচিব আরো বলেন, ‘আমি মিয়ানমারের কর্তৃপক্ষকে অবিলম্বে তাদের জনগণের কথা শোনার, রাজনৈতিক বন্দীদের মুক্তি দেওয়ার এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় পথে ফিরে যাওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি। ’