ঢাকার নদী রক্ষায় টাকা দেবে বিশ্বব্যাংক
ঢাকা শহরের চারপাশে নদীগুলোর নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে এবং সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে ‘বিউটিফিকেশন অব ঢাকা’ নামে একটি প্রকল্পে অর্থায়ন করবে বিশ্বব্যাংক। তবে প্রকল্পে অর্থায়নের আগে সমীক্ষা করা হবে। তারপর কাজ শুরু করবে সংস্থাটি।
গতকাল রবিবার সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে ঢাকা সফররত বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিন রাইসারের সঙ্গে বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
বিজ্ঞাপন
সংবাদ সম্মেলনে অর্থ মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব শরিফা খান উপস্থিত ছিলেন। এর আগে সকালে মার্টিন রাইসার শেরেবাংলানগরে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে সচিব শরিফা খানের সঙ্গে আলাদা বৈঠক করেন। তিন দিনের সফরে শনিবার রাতে ঢাকা আসেন বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিন রাইসার।
বিশ্বব্যাংককে বাংলাদেশের অন্যতম উন্নয়ন সহযোগী আখ্যায়িত করে সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘১৯৭২ সাল থেকে এ পর্যন্ত বিশ্বব্যাংক ৩৭ বিলিয়ন ডলার ঋণ ও অনুদান দিয়েছে বাংলাদেশকে। এর মধ্যে ছাড় হয়েছে প্রায় ২৭ বিলিয়ন ডলার। এ পর্যন্ত সুদ-আসল মিলে আমরা পরিশোধ করেছি ৬.৩৬ বিলিয়ন ডলার। ’
বিশ্বব্যাংকের কাছে বাজেট সহায়তা বাবদ সরকার অর্থ চেয়েছে কি না সাংবাদিকরা জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী এ নিয়ে কথা বলতে রাজি হননি। তবে পরে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বৈঠকে অর্থমন্ত্রী বলেছেন, ‘আমরা বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকে ২০১৯ থেকে চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত এক বিলিয়ন ডলার বাজেট সাপোর্ট পেয়েছি। চলতি অর্থবছরে আরো ৫০ কোটি ডলার বাজেট সাপোর্ট পাওয়া যাবে বলে আশা করছি। গ্রিন রেজিল্যান্ট ইনক্লুসিভ ডেভেলপমেন্ট (জিআরআইডি), ডিপিসির ২৫ কোটি করে আগামী দুই অর্থবছরে (২০২৩-২৪, ২০২৪-২৫) ৫০ কোটি ডলার পাওয়া যাবে বলে প্রত্যাশা করছি। ’
২০২৩-২৫ মেয়াদে পাইপলাইনে রয়েছে ৬.১৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ঋণ প্রস্তাব। এ সময় তিনি কভিড এবং ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের ফলে উদ্ভূত বিরূপ পরিস্থিতি থেকে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে বাংলাদেশের জন্য কনসেশনাল আইডিএ (নমনীয় ঋণ) তহবিল থেকে বর্ধিত সহায়তার অনুরোধ করেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বিশ্বব্যাংককে বলেছিলাম এমন একটি প্রকল্পে বিনিয়োগের জন্য যাতে বাংলাদেশ তাদের মনে রাখে। হাতিরঝিল প্রকল্পের মতো একটি প্রকল্পে যেন অর্থায়ন করে। তারা (বিশ্বব্যাংক) ‘বিউটিফিকেশন অব ঢাকা’ প্রকল্পে অর্থায়নে সম্মত হয়েছে। প্রকল্পটির সমীক্ষা চালানো হবে। তারপর কাজ শুরু হবে। এই প্রকল্পের আওতায় ঢাকার চারপাশে বৃত্তাকার নৌপথগুলোর নাব্যতা নিশ্চিত এবং সৌন্দর্য বৃদ্ধি করা হবে। অর্থমন্ত্রী বলেন, এই প্রকল্পে কারিগরি সহায়তা নিয়ে বিশ্বব্যাংক কাজ করছে। এর ফলে হাতিরঝিলের মতো ঢাকার আশপাশের নদীগুলোর সৌন্দর্য বাড়বে এবং চলাচলের পথ সৃষ্টি হবে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সভায় বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রশংসা করেন। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে করোনা মোকাবেলায় বাংলাদেশের বিভিন্ন সময়োচিত পদক্ষেপেরও প্রশংসা করেন।