মালয়েশিয়ার নির্বাচনোত্তর জোট: আনোয়ারকে ঠেকানোর তোড়জোড়
মালয়েশিয়ার গত শনিবারের সাধারণ নির্বাচনে কোনো দল একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে সক্ষম না হওয়ায় জোট সরকার গঠনের বিকল্প নেই। সাবেক উপপ্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের নেতৃত্বাধীন ‘পাকাতান হারুপান’ জোট সর্বাধিক ৮২টি আসনে জিতেছে। তবে সরকার গঠনে প্রয়োজনীয় সংখ্যা থেকে তারা বেশ দূরে রয়েছে।
মালয়েশিয়ার ২২২ আসনের আইন সভায় (একটি আসনে নির্বাচন হয়নি) সরকার গঠন করতে প্রয়োজন হয় ১১২টির মতো আসন।
বিজ্ঞাপন
রবিবার ৭৫ বছর বয়সী আনোয়ার ইব্রাহিম জানান, তিনি সরকার গঠনের চেষ্টা চালাচ্ছেন।
এ নির্বাচনে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৭৩টি আসনে জয়লাভ করা পারিকাতান নাসিওনাল (পিএন) জোটের নেতা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী মুহিউদ্দিন ইয়াসিন দাবি করেছেন, তিনিও সরকার গঠনে চেষ্টা চালাচ্ছেন।
দীর্ঘদিন দেশের ক্ষমতায় থাকা ইউনাইটেড মালয় ন্যাশনাল অর্গানাইজেশনের (ইউএমএনও) নেতা ইসমাইল সাবরির নেতৃত্বাধীন বর্তমান জোট সরকারের অন্যতম অংশীদার মুহিউদ্দিনের পিএন জোট। সাবরির সরকারে ছোট অংশীদার হলেও এবারের নির্বাচনে তারা ভালো ফল করেছে। শোনা যাচ্ছে, পিএন সরকার গঠনের আমন্ত্রণ জানালে মালয়েশিয়ান ইসলামিক পার্টি তাতে যোগ দেবে।
নির্বাচনে আশ্চর্যজনকভাবে হেরে গেছেন ‘সমৃদ্ধ মালয়েশিয়ার রূপকার’ খ্যাত দীর্ঘদিনের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ৯৭ বছর বয়সী মাহাথির মুহাম্মদ। জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে তাঁর।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ইউএমএনও এবং পিএন জোট আনোয়ার ইব্রাহিমকে ঠেকাতে জোট গঠনের ঘোষণা দিতে পারে।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত নেতা নাজিব রাজাকের দল ইউএমএনও এই নির্বাচনে বেশ হতাশাজনক ফল করেছে। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও ইউএমএনও নেতা ইসমাইল সাবরির নেতৃত্বাধীন জোট বারিসান নাসিওনাল (বিএন) পেয়েছে মাত্র ৩০টি আসন।
স্বাধীনতার পর থেকে দেশের রাজনীতিতে নেতৃত্ব দেওয়া ইউএমএনও এমন বিপর্যয়ের মুখে আগে কখনো পড়েনি। বিশ্লেষকরা বলেছেন, নাজিব রাজাকের দুর্নীতিই দলটিকে ডুবিয়েছে।
ফল ঘোষণার পর থেকে সবচেয়ে বেশি আলোচনা হচ্ছে নব্বইয়ের দশকের ইউএমএনও নেতা আনোয়ার ইব্রাহিমের প্রসঙ্গ। এক সময়কার ইউএমএনও নেতা মাহাথিরের সঙ্গে দ্বন্দ্বের পরিপ্রেক্ষিতে দুই দফা দীর্ঘ কারাভোগ করেন আনোয়ার।
নাটকীয়ভাবে ২০১৮ সালে নিজের পুরনো ইউএমএনও দলের বিরুদ্ধেই এই আনোয়ারকে সঙ্গে নিয়ে জোট সরকার গঠন করেন মাহাথির। কিন্তু মাহাথির প্রধানমন্ত্রীর পদ না ছাড়ায় আবারও ক্ষমতা লাভের স্বাদ থেকে বঞ্চিত হন আনোয়ার।