‘বিশ্বকাপ জিততে বিশ্বকাপের ম্যারাডোনা হতে হবে মেসিকে’
বিশ্বকাপ জয়ের জন্য সঠিক পথেই আছে আর্জেন্টিনা। শিরোপা জিততে আগে ফাইনালে পৌঁছতে হবে, এ জন্য যেভাবে খেলা দরকার লিওনেল স্কালোনি সেভাবেই খেলাচ্ছেন দলকে। একটা সময় আমরা দুই বছর পর পর জাতীয় দলের কোচ বদল করতাম। আস্থা রাখতে পারতাম না কারো ওপর।
বিজ্ঞাপন
এ জন্যই আর্জেন্টিনা একটা দল হয়ে উঠতে পারেনি।
স্কালোনিকে লম্বা সময় রেখে বুদ্ধিমানের কাজটাই করেছি আমরা। জাতীয় দলের পরিচালক হিসেবে এর কিছুটা কৃতিত্ব আমারও। ভালো লাগত যদি কাতারে বিশ্বকাপ দেখতে যেতে পারতাম। কিন্তু ৮৪ বছর বয়সে আর লম্বা ভ্রমণের ঝুঁকি নিইনি।
লিওনেল মেসি অসাধারণ খেলছে। ওর বয়স যখন ১৯ বছর, তখন থেকেই চাইতাম একটা বিশ্বকাপ জিতুক ছেলেটা। মেসির ক্যারিয়ারের শেষ বিশ্বকাপে সেটা আরো বেশি করে চাই। বিশ্বকাপ জিততে ১৯৮৬ বিশ্বকাপের ম্যারাডোনা হতে হবে মেসিকে। সেবার সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছিল ম্যারাডোনা। মাঠেও ছিল অসাধারণ। এবার মেসিকে একটা বিশ্বকাপ জেতাতে ঐক্যবদ্ধ হয়ে খেলছে পুরো দল। মেসিও নিজের দায়িত্বটা ভালোভাবে বোঝে। মেক্সিকোর বিপক্ষে গোল করে ও করিয়ে সেটার প্রমাণ দিয়েছে। মেক্সিকোকে হারাতে না পারলে কিন্তু বিশ্বকাপটা শেষ হয়ে যেত আর্জেন্টিনার।
আর্জেন্টিনার এই দলটা এক সুতায় গাঁথা। ওরা সবাই যেন একদল বন্ধু, যা খুব গুরুত্বপূর্ণ। শুধু প্রথম ম্যাচটাই ওরা ভালো খেলতে পারেনি। বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে এটা হতেই পারে। স্নায়ুর অনেক চাপ থাকে সেই ম্যাচে। ভালো খবর হচ্ছে চাপটা কাটিয়ে আর্জেন্টিনা সঠিক সময়ে ফিরেছে সঠিক পথে। তবে শেষ ষোলোতে দি মারিয়া খেলতে না পারলে অনেক বড় ধাক্কা হবে আর্জেন্টিনার জন্য। আমি যেকোনো মাঠে ওর খেলা পয়সা খরচ করে দেখতে রাজি। ইউরোপের নামি সব ক্লাবে খেলার বিশাল অভিজ্ঞতা আছে ছেলেটার। প্রার্থনা করছি দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুক ও।
আমার বয়স যখন ১৫ বছর, তখন বিশ্বকাপে ফেভারিট হিসেবে ভাবা হতো ব্রাজিল, জার্মানি, ইতালি আর আর্জেন্টিনাকে। এখন সময় বদলেছে, ফেভারিট দলের সংখ্যাও বেড়েছে অনেক। এমনকি বড় নামের দল না হয়েও বিশ্বকাপ জিততে পারে যে কেউ। একটা সময় এশিয়া, আফ্রিকার দলগুলোর বিপক্ষে ৫-৬ গোলে হেসেখেলে জিতত লাতিন-ইউরোপিয়ানরা। সেই দিন আর নেই। জাপানের কথাই বলি। সাবেক দুই বিশ্বচ্যাম্পিয়ন জার্মানি ও স্পেনকে হারিয়েছে ওরা। এখন যে দল একই গ্রুপে দুই বিশ্বজয়ীকে হারাতে পারে, তাদের তো হিসাবের বাইরে রাখা যাবে না।
জার্মানির গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় অনেক বড় ঘটনা। টানা দুই বিশ্বকাপে শেষ ষোলোতে খেলতে পারেনি ওরা। তাই বলে জার্মানির গর্ব ধুলোয় মিশে যায়নি। নিশ্চয়ই আবার ঘুরে দাঁড়াবে জার্মানি। ভুলে গেলে চলবে না, চারটা বিশ্বকাপ জিতেছে ওরা।
ওলে সেজার লুই মেনোত্তি : আর্জেন্টিনার ১৯৭৮ বিশ্বকাপজয়ী কোচ