ইউক্রেন যুদ্ধে এখনো সাফল্যের আশা পুতিনের
যুক্তরাষ্ট্র সফরে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি আরো সামরিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি পেলেও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন জানিয়েছেন, তিনি যুদ্ধে জয় সম্পর্কে নিশ্চিত। যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যর্থতা সত্ত্বেও এমন দাবি প্রশ্নের মুখে পড়ছে।
প্রায় ১০ মাস ধরে হামলা চালিয়েও রাশিয়া ইউক্রেনের সামান্য অংশ কবজা করতে পেরেছে। যুদ্ধে আনুমানিক প্রায় এক লাখ রুশ সৈন্য হতাহত হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
পশ্চিমা বিশ্বের মদতে ইউক্রেন প্রবল সাহস দেখিয়ে রাশিয়ার মোকাবেলা করে চলেছে। নাগরিক অবকাঠামোর ওপর ক্রমাগত হামলা সত্ত্বেও দেশটির সরকার ও মানুষের মনোবল ভাঙা যাচ্ছে না। এমন পরিস্থিতি সত্ত্বেও অন্তত প্রকাশ্যে অবিচল অবস্থান দেখানোর চেষ্টা চালাচ্ছে রুশ নেতৃত্ব।
জেলেনস্কির ওয়াশিংটন সফরকে ঘিরে উচ্ছ্বাস ও বাড়তি প্রত্যাশা সত্ত্বেও রাশিয়া হাল ছাড়তে প্রস্তুত নয়। তবে ইউক্রেনে আরো মার্কিন অস্ত্র সরবরাহের ফলে যুদ্ধ আরো ভয়ংকর হয়ে উঠবে বলে মস্কো সতর্ক করে দিয়েছে। পুতিন বুধবার বলেছেন, যুদ্ধক্ষেত্রে কিছু ব্যর্থতা সত্ত্বেও রাশিয়া ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে জয়ের পথেই এগোচ্ছে। ধাপে ধাপে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা সম্ভব হবে বলে তিনি নিশ্চিত। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনার সময়ে তিনি এমন মন্তব্য করেন। টেলিভিশনেও সেই ভাষণ প্রচার করা হয়েছে।
পুতিনের মতে, রাশিয়ার সেনাবাহিনী আরো মজবুত করার জন্য এই যুদ্ধ মূল্যবান অভিজ্ঞতা হিসেবে বিবেচনা করা উচিত। তিনি রুশ সেনাবাহিনীর জন্য আরো অস্ত্র এবং আধুনিকীকরণের ডাক দেন। বিশেষ করে ড্রোনের ব্যবহার বাড়াতে বিশেষ আগ্রহ প্রকাশ করেন তিনি। সেই লক্ষ্যে অর্থ কোনো অন্তরায় হতে পারে না বলে উল্লেখ করে পুতিন জানান, রুশ সেনাবাহিনী শীঘ্রই সারমাত ইন্টারকন্টিনেন্টাল ব্যালিস্টিক মিসাইল হাতে পাবে, যেটি ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধ ব্যবস্থা অগ্রাহ্য করার ক্ষমতা রাখে।
এদিকে রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু নর্ডিক দেশগুলোতে ন্যাটোর সম্প্রসারণের মোকাবেলা করতে রুশ সেনাবাহিনীর সম্প্রসারণের প্রস্তাব করেছেন। সৈন্যসংখ্যা আরো সাড়ে তিন লাখ বাড়িয়ে ১৫ লাখের মাত্রা ছুঁতে চান তিনি। সেইসঙ্গে স্বেচ্ছাসেবী বাহিনীর সংখ্যা বাড়িয়ে প্রায় সাত লাখে আনার লক্ষ্য স্থির করেছেন শোইগু। বিশেষ করে রাশিয়ার উত্তর পশ্চিম প্রান্তে আরো সৈন্য মোতায়েন করতে চান তিনি। ফিনল্যান্ড ও সুইডেন ন্যাটোয় যোগদান করলে সেই অঞ্চলের সুরক্ষা আরো মজবুত করার ওপর জোর দিচ্ছেন রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী। পুতিনও শোইগুর প্রস্তাবগুলোর প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন।
পশ্চিমা বিশ্বের কড়া নিষেধাজ্ঞা ও অর্থনীতির বেহাল অবস্থা সত্ত্বেও রাশিয়া কীভাবে সামরিক শক্তি বাড়ানোর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কার্যকর করবে, তা স্পষ্ট নয়। আপাতত ইউক্রেনের পূর্বে বাখমুত শহরের কিছু অংশে রাশিয়ার সৈন্য প্রবেশ করায় মস্কো কিছুটা সাফল্যের স্বাদ পাচ্ছে। ইউক্রেনের সেনাবাহিনী অবশ্য জোরালো প্রতিরোধ চালিয়ে যাচ্ছে। দেশটির সামরিক নেত্বত্ব জানিয়েছে, খাকোভা শহরের কাছে এক বিমানক্ষেত্রে রাশিয়ার হামলা চালানোর এক বড় অবস্থান ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে।