সরকারকে সহযোগিতা করতে রাষ্ট্রপতির আহ্বান
এইদেশ এইসময়, ঢাকা : রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ দেশের সার্বিক উন্নয়নে সরকারকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ঢাকাস্থ কিশোরগঞ্জ জিলা সমিতির উদ্যোগে তাকে দেয়া এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ভাষণদানকালে তিনি এ কথা বলেন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, সরকারের দায়িত্ব হলো- অবকাঠামোসহ উন্নয়নবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি করা। অপরদিকে জনগণের দায়িত্ব হলো সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে সেটি বাস্তবায়ন করা।
আবদুল হামিদ বলেন, গণতান্ত্রিক শাসন ও রীতিনীতি মেনে চলার মাধ্যমে গণতন্ত্রের বিকাশ ও একে আরো সক্রিয় করা সকলের দায়িত্ব।
রাষ্ট্রপতি বলেন, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মধ্যে মতপার্থক্য থাকবেই। তবে দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।
তিনি বলেন, ভিন্ন মতের প্রতি সহিষ্ণুতা দেখানো, পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ এবং গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানকে শক্তিশালী করা গণতন্ত্রের মূল উদ্দেশ্য।
রাষ্ট্রপতি বলেন, সারাজীবন অন্য রাজনৈতিক দল এবং ভিন্ন আদর্শের লোকদের সঙ্গে ভাল সম্পর্ক বজায় রাখার চেষ্টা করেছি। আমি রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের প্রতি শ্রদ্ধা এবং বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখার চেষ্টা করেছি। এ কারণে কিশোরগঞ্জ জেলায় কখনোই রাজনৈতিক সহিংসতা সৃষ্টি হয়নি। তারা (রাজনীতিবিদরা) দেশের যেকোনো সংকটকালীন সময়ে একে অপরের পাশে থাকার চেষ্টা করেছেন।
তিনি বলেন, রাজনীতিবিদদের মধ্যকার সহিষ্ণুতা অব্যাহত রাখতে হবে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, উন্নয়ন একটি চলমান প্রক্রিয়া। দেশের সর্বাত্মক উন্নয়ন নিশ্চিত করা সরকারের একার পক্ষে সম্ভব নয়। এজন্য সংশ্লিষ্ট সকলের সক্রিয় সহযোগিতা ও মতামত প্রয়োজন।
আবদুল হামিদ বলেন, সরকারি উদ্যোগের সঙ্গে ব্যক্তি পর্যায় ও সামাজিক সংগঠনগুলো সম্মিলিত প্রচেষ্টা চালালে উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের একজন নাগরিক হিসেবে দেশের মাটি ও মানুষের কাছে প্রত্যেকে দায়বদ্ধ। তিনি বলেন, আমাদের এ দায়বদ্ধতা পূরণে প্রত্যেককে নিজ নিজ অবস্থান থেকে দায়িত্ব পালন করতে হবে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, কিশোরগঞ্জ জেলা সমিতি এক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে। সমিতির সদস্যরা যে কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময়ে অসহায় মানুষের জন্য তাদের সহায়তার হাত বাড়িয়েছে।
রাষ্ট্রপতি তার অতীত জীবনের ইতিহাস তুলে ধরে বলেন, তার জন্ম হয়েছে হাওর এলকায়। তিনি জীবনের দীর্ঘ সময় অতিবাহিত করেছেন এই এলাকায়। তিনি এলাকার জনগণের উদ্দেশ্যে বলেন, তার রাজনৈতিক জীবন শুরু হয়েছিল এখান থেকেই এবং এক্ষেত্রে এলাকার জনগণের সহায়তা পেয়েছেন। ফলে তিনি সব সময় হাওর এলাকার জনগণের সুখে-দুঃখে তাদের পাশে থাকার চেষ্টা করেছেন।
রাষ্ট্রপতি কিশোরগঞ্জ জেলাকে হাওর ও নদী পরিবেষ্টিত উল্লেখ করে বলেন, ভৌগোলিক দিক থেকে এ জেলাটি অত্যন্ত দুর্গম এলাকা। তবে আমরা প্রাকৃতিকভাবে শান্তিতে আছি। জেলার প্রত্যেকেই একে অপরকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে সহায়তা করে থাকে।
তিনি এলাকার সাধারণ লোকদের বিশেষ করে সমাজে সুবিধাবঞ্চিতদের সহায়তায় এগিয়ে আসতে সকলের প্রতি আহ্বান জানান। তাকে সংবর্ধনা দেয়ার জন্য আয়োজকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, আমি আপনাদের সঙ্গে আছি এবং দেশের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। ব্যক্তিগতভাবে আমার কিছু চাওয়া-পাওয়ার নেই। আপনাদের ভালবাসা আমার জন্য সবচেয়ে বড় উপহার।
সমিতির সভাপতি মুহম্মদ ইউসুফের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে আরো বক্তব্য রাখেন প্রধান বিচারপতি এম মুজাম্মেল হোসেন, এলজিআরডি ও সমবায় মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা গওহর রিজভী এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু। সূত্র :বাসস