সাকিবের বরিশালকে বিদায় দিয়ে শিরোপার লড়াইয়ে টিকে রইল রংপুর
বিপিএলের হটফেবারিট ফরচুন বরিশালকে বিদায় নিয়ে শিরোপা লড়াইয়ে টিকে রইলো রংপুর রাইডার্স। রোববার মিরপুরে বাঁচা মরার হাইভোল্টেজ ম্যাচে তিন বল হাতে রেখেই সাকিবের বরিশালকে ৪ উইকেটে হারায় নুরুল হাসান সোহাসেন দল।
টুর্নামেন্টের ফাইনালে উঠতে আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় কোয়ালিফাইয়ারে মাঠে নামবে রংপুরের দলটি।
হাইভোল্টেজ ম্যাচে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে মিরাজের ব্যাটিং তান্ডবে রংপুরকে বড় টার্গেট দেয় বরিশালের দলটি। টসে জিতে সাকিব আল হাসানদের ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ হয়তো ভুলই ছিল রাইডার্স দলপতি নুরুল হাসান সোহানের। এই ম্যাচ দিয়ে রংপুরের একাদশে যুক্ত হন দুই ক্যারিবিয়ান তারকা টি-টোয়েন্টির তারকা নিকোলাস পুরান ও ডোয়াইন ব্রাভো।
ব্যাটিংয়ে নেমে দুই ওপেনার মিরাজ ও আন্দ্রে ফ্লেচারের ব্যাটে ভালো শুরু পায় বরিশাল। দুজনের উদ্বোধনী জুটিতে আসে ৪৬ রান। উইকেটের একপ্রান্তে ঝড় তোলেন মিরাজ। তবে আরেক ওপেনার ফ্লেচার ছিলেন নিষ্প্রভ।
রংপুরের স্পিনার রাকিবুল হাসানের বলে ক্যাচ দিয়ে ফেরার আগে এই ক্যারিবীয় ব্যাটার ১৬ বলের মোকাবিলায় করেন ১২ রান। সবাইকে চমক দিয়ে তিনে নেমে মিরাজকে যোগ্য সঙ্গ দেন মাহমুদউল্লাহ। তাদের জুটিতে আসে ৬৯ রান।
দলকে ১১৫ রানে রেখে রংপুরের লঙ্কান পেসার শানাকার বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন মাহমুদউল্লাহ। এর আগে ২১ বলে ৪ চার ও ১ ছক্কায় ৩৪ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেন তিনি। গুরুত্বপুর্ণ ম্যাচে ব্যাটিংয়ে নামেননি ক্যাপ্টেন সাকিব।
এরপর রানের চাকা কিছুটা ধীরগতির হয়ে পড়ে। চাপ সামলাতে গিয়ে শানাকার দ্বিতীয় শিকার হয়ে ফেরেন ৪৮ বলে ৯ চার ও ১ ছক্কায় ৬৯ রান করা মিরাজ। শেষদিকে শানাকা ও ব্র্যাভোর নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে চাপের মুখে পড়ে বরিশাল।
তবে ধীরে ধীরে হাত খুলতে শুরু করেন আফগান অলরাউন্ডার করিম জানাত। শেষ পর্যন্ত ২৫ বলে ৩৩ রান নিয়ে অপরাজিত থাকেন তিনি। এছাড়া লঙ্কান অলরাউন্ডার ভানুকা রাজাপক্ষে ১০ বলে করেন ১৭* । ফলে নির্ধারিত ২০ ওভারে তিন উইকেটে ১৭০ রান তোলে সাকিবের দল।
রংপুরকে ১৭১ রানের টার্গেট দিয়ে বল হাতে শুরুতেই দলকে সাফল্য এনে দেন সাকিব আল হাসান। ওপেনার মো: নাঈম শূন্য রানে বিদায় করেন তিনি। শুরুর চাপ কাটিয়ে আর এক ওপেনার রনি তালুকদারের সাথে জুটি গড়ে মিরপুরের উইকেটে ঝড় তোলেন চাঁদপুরের ছেলে শামীম হোসেন পাটুয়ারী।
তারা জুটিতে ৭ ওভার ২ বলে স্কোর বোডে ৬১ রান তুলে রংপুরকে জয়ের স্বপ্ন দেখায়। এরপর রনি ২৯ রান করে রাব্বির বলে ফিরে গেলে অধিনায়ক নুরুল হাসানকে নিয়ে আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেন শামীম। ভালো শুরুর পর ক্যাপ্টেন সোহান ১৮ রানে বিদায় নেন। তবে এরপরই শামীম ৩৬ বলে তিন ছক্কা ও চার বাউন্ডারিতে হাফঞ্চুরি পূর্ণ করেন।
শেষ দিকে জিততে রংপুরের প্রয়োজন ছিল ২১ বলে ৩১ রান। ঠিক তখনই ছক্কা মারতে গিয়ে লংঅনে ক্যাচ দেন শামীম। ৫১ বলে চারটি করে চার ও ছক্কা হাঁকিয়ে খালিদের বলে ডোয়াইনে হাতে ক্যাচ দেয়ার আগে শামীমের ঝুলিতে যোগ হয় ৭১ রান।
শেষ দিকে ডোয়াইন ব্রাভো রংপুরের দর্শকতে হতাশ করলেও দলের জয় থামাতে পারেনি বরিশাল। ক্যারিবিয়ান টি-টোয়েন্টি দানব ২ রানে বিদায় নিলে জিততে শেষ দুই ওভারে রংপুরের প্রয়োজন ছিল ১৯ রান। তখনও ক্রিজে সানাকা ও মেহেদী।
এ জুটিতে অসাধারণ ব্যাট করে তিন বল বাকি থাকতেই ৬ উইকেটে ১৭২ রান তুলে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে তারা। মেহেদী হাসান ৯ বলে ১৮ ও সানাকা ১২ বলে অপরাজিত ১৫ রান করেন। তবে রংপুরের জয়ের নায়ক শামীম হোসেন। বরিশালের পক্ষে সাকিব-খালিদ ও রাব্বি দুটি করে উইকেট নেন।