ওলী আউলিয়াদের মাধ্যমে এদেশে ইসলাম এসেছে
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী ও বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদারের্ছীনের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ আ.ক.ম. মোজাম্মেল হক এমপি বলেছেন, এদেশে কোরআন সুন্নাহ বিরোধী কোন আইন পাশ হবে না প্রধানমন্ত্রী পূর্বেও বলেছেন এখনও বলেন। ইসলামের আইন চাই সৎ লোকের শাসন চাই বলে যারা ক্ষমতায় ছিলেন তারা ইসলামের কী আইন করেছে। তারা জনগণের সাথে মিথ্যাচার করেছে। মন্ত্রী বলেন, ওলী আউলিয়াদের মাধ্যমে এদেশে ইসলাম এসেছে। সারাবিশ্বে ইসলামের প্রচার প্রসার হবে এ লক্ষ্যেই বঙ্গবন্ধু ইসলামিক ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে আমরা এদেশ পেতাম না। গতকাল মঙ্গলবার দেশের মাদরাসা শিক্ষক-কর্মচারীদের পেশাজীবী অরাজনৈতক সংগঠন বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের উদ্যোগে মহাখালীস্থ মসজিদে গাউছুল আজম কমপ্লেক্স চত্বরে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় মাদরাসা শিক্ষকদের করণীয় শীর্ষক আলোচনা সভা, দোয়া ও ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এমপি প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, সত্যিকারের ইসলামের চর্চা করতে হবে। মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীন দেশের মাদরাসা শিক্ষা উন্নয়নে সরকারকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করে আসছে, ভবিষ্যতেও এর ধারা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান তিনি। তিনি বলেন, মাদরাসা শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য হক্কানী আলেম ওলামা তৈরি করা, যাদের মাধ্যমে দেশের উত্তরোত্তর মঙ্গল সাধিত হবে। ইসলামি শিক্ষাকে কলুষিত করার ব্যাপারে যদিও কেউ ষড়যন্ত্র করে , তা কখনই সফল হবে না।
জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের সভাপতি ও দৈনিক ইনকিলাবের সম্পাদ আলহাজ এ এম এম বাহাউদ্দীনের সভাপতিত্বে ও মহাসচিব প্রিন্সিপাল শাব্বীর আহমদ মোমতাজীর সঞ্চালনায় এ অনুষ্ঠানে সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নূরুল ইসলাম নাহিদ এমপি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইসলামী শিক্ষার উন্নয়নে কাজ করছেন। দীর্ঘ দিনে দাবির ইসলামী আরবী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের সুপরামর্শে সাধারণ শিক্ষা ও মাদরাসা শিক্ষার মধ্যে বৈষম্য দূর করা হয়েছে।
দেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে মাদরাসা শিক্ষাকে সকল দিক থেকে সমমানের মর্যাদা দিতে হবে। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী সর্বদাই সজাগদৃষ্টি দিয়ে থাকেন। ময়মনসিংহের সংসদ সদস্য কাজিমুদ্দিন আহম্মেদ ধনু মিয়া বলেন, প্রধান মন্ত্রী মাদরাসা শিক্ষর প্রতি অত্যন্ত আন্তরিক বিধায় দেশের মাদরাসা শিক্ষা আজ গুনে মানে অনন্য। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু জুয়া হাউজি ঘোড়দৌঁর বন্ধ করেছিলেন। প্রধানমন্ত্রীও ইসলামের পক্ষে কাজ করছেন। তিনি (প্রধানমন্ত্রী) কওমি মাদরাসার স্বীকৃতি দিয়েছেন। আঞ্জুমানে আল-ইসলাহ বাংলাদেশের সভাপতি আলহাজ আল্লামা মাওলানা হুছাম উদ্দিন চৌধুরী ফুলতলী বলেন, মরহুম আলহাজ এম এ মান্নানের উদ্যোগে জমিয়াতুল মোদার্রেছীন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। মাদরাসা শিক্ষার উন্নয়নে মোদার্রেছীন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। জমিয়াতুল মোদার্রেছীনকে পাশ কাটিয়ে মাদরাসা শিক্ষার উন্নয়নের স্বপ্ন সফল হবে না। মাদরাসা শিক্ষিতরা দায়ীত্ব প্রাপ্ত হলে রডের বদলে বাঁশ দিবে না। তিনি বলেন, স্বাধীনতা অর্জনে এদেশের আলেম ওলামাদেরও গুরুত্বপূর্ণ অবদান ছিল। তিনি বলেন, ওলী আউলীয়াদের দেশে নাস্তিক্যবাদ শিক্ষা চলতে দেয়া হবে না। অনুষ্ঠানে দেশ-জাতি ও মুসলিম উম্মাহর কল্যাণ কামনা করে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন দেশের ঐতিহ্যবাহী ছারছীনা দরবার শরীফের পীর সাহেব আমীরে হিজবুল্লাহ শাহ্ মোহাম্মদ মোহেববুল্লাহ। ছারছীনা পীর সাহেব শাহ মোহাম্মদ মোহেববুল্লাহ বলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধে এদেশের আলেমদের ভূমিকা ছিল। জমিয়াতুল মোদার্রেছীন প্রতিষ্ঠার ইতিহাসকে স্বরণ রাখতে হবে। সহশিক্ষার নামে নারী-পুরুষের একত্রে শিক্ষা চলতে পারে না। নারীদের জন্য পৃথক শিক্ষার ব্যবস্থা চালু করতে হবে। ছারছীনার পীর সাহেব দ্বীনের খেদমতে সরকারকে এগিয়ে আসার আহবান জানান।
আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিলে আরো উপস্থিত ছিলেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য আলহাজ আল্লামা ড. সৈয়দ মোছাদ্দেক বিল্লাহ আল-মাদানী, সোনাকান্দা দরবার শরীফের পীর সাহেব আলহাজ মাওলানা শাহ্ মো. মাহমুদুল হাসান, আল্লামা মাওলানা বাহাদুর শাহ মোজাদ্দেদী, বাহাদুরপুর দরবার শরীফের পীর সাহেব মাওলানা আব্দুল্লাহ মো. হাসান, দারুল ইরফান দরবার শরীফের পীর সাহেব আলহাজ ড. এ কে এম মাহবুবুর রহমান, দারুননাজাত সিদ্দিকীয়া কামিল মাদরাসার প্রিন্সিপাল আবু বকর সিদ্দিক, মুরশিদনগর দরবার শরীফের পীর সাহেব আলহাজ প্রিন্সিপাল মাওলানা আব্দুল হাকীম জেহাদী, ঠনঠনিয়া দরবার শরীফের পীরসাহেব আলহাজ প্রিন্সিপাল মাওলানা মো. রাগেব হাসান ওসমানী, কংশেরকুল দরবার শরীফের পীর সাহেব আলহাজ মাওলানা মো. আসাদুজ্জামান সিদ্দিকী, খেলাফত মজলিসের প্রতিনিধি অধ্যাপক আব্দুল জলিল, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির নেতা অধ্যাপক শেখ লোকমান হোসাইন এবং বিভিন্ন শিক্ষক সমিতির নেতা, বিভিন্ন জেলা- থানার জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের নেতৃবৃন্দ।