সিটিতে উড়ে গেল লিভারপুল
প্রভাত সবসময় দিনের পূর্বভাস দেয় না। সেটি সত্যি করেই যেন লিভারপুলের এগিয়ে যাওয়ার উল্লাস স্থায়ী হলো না বেশিক্ষণ। প্রথমার্ধে সমতায় ফেরা ম্যানচেস্টার সিটি দ্বিতীয়ার্ধে নিংড়ে দিল নিজেদের সেরাটা। আরও তিনবার লক্ষ্যভেদ করে তারা পেল দুর্দান্ত জয়। গতকাল সন্ধ্যায় ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচে লিভারপুলকে উড়িয়ে দিয়েছে শিরোপাধারী সিটিজেনরা। ঘরের মাঠ ইতিহাদ স্টেডিয়ামে পেপ গার্দিওলার শিষ্যরা জিতেছে ৪-১ গোলে। তাদের হয়ে জাল খুঁজে নেন হুলিয়ান আলভারেজ, কেভিন ডি ব্রুইনে, ইল্কাই গুন্দোয়ান ও জ্যাক গ্রিলিশ। এর আগে সফরকারীদের পক্ষে নিশানা ভেদ করেন মোহামেদ সালাহ।
এই জয়ে আসরের পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে থাকা আর্সেনালে সঙ্গে ব্যবধান ৫ পয়েন্টে নামিয়ে আনল সিটি। ২৮ ম্যাচে ৬৪ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে গার্দিওলার দল। সমান ম্যাচে ৬৯ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে থাকা আর্সেনাল গতকাল রাতেই লিডস ইউনাইটেডের মুখোমুখি হয়েছে। ২৭ ম্যাচে ৪২ পয়েন্ট নিয়ে ষষ্ঠ স্থানে আছে লিভারপুল। চার নম্বরে থাকা টটেনহ্যাম হটস্পারের চেয়ে ৭ পয়েন্টে পিছিয়ে ছয়ে আছে ইয়ুর্গেন ক্লপের দল।
চলতি আসরে প্রথম দেখায় গত অক্টোবরে অ্যানফিল্ডে ১-০ গোলে হেরেছিল সিটি। সেই ক্ষতে প্রলেপ দিল তারা। আর শীর্ষ চারে থেকে লিগ শেষ করার লক্ষ্যে আরেকটি বড় ধাক্কা খেল লিভারপুল। প্রিমিয়ার লিগে কোচ হিসেবে ঘরের মাঠে গার্দিওলা শততম জয়ের স্বাদ পেলেন ১২৮ ম্যাচেই। এই মাইলফলক ছোঁয়া আট কোচের মধ্যে তার চেয়ে কম ম্যাচে এই অর্জন ধরা দেয়নি আর কারও। আগের দ্রুততম ছিল আর্সেন ওয়েঙ্গারের ১৩৯ ম্যাচ। লিভারপুল কোচ ইয়ুর্গেন ক্লপ এখনও পর্যন্ত ঘরের মাঠে লিগে ৯৯ জয় পেয়েছেন ১৪২ ম্যাচে।
চোট থেকে পুরোপুরি সেরে না ওঠায় আর্লিং হলান্ডকে এ দিন পায়নি সিটি। এই মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ৩৭ ম্যাচে ৪২ গোল করা তরুণ এই তারকার অভাব বুঝতেই দিলেন না তার সতীর্থরা। একাদশ মিনিটে প্রথম সুযোগ পায় সিটি। বক্সের বাইরে থেকে গোলরক্ষক বরাবর শট মারেন রদ্রি। পঞ্চদশ মিনিটে রিয়াদ মাহরেজের ফ্রি কিক পোস্টের সামান্য বাইরে দিয়ে যায়। দুই মিনিট পর এগিয়ে যায় লিভারপুল। ট্রেন্ট অ্যালেকজান্ডার-আর্নল্ডের উঁচু করে বাড়ানো বল ধরে বক্সে ঢুকে পড়েন দিয়েগো জটা। মানুয়েল আকনজির চ্যালেঞ্জে শট নিতে পারেননি তিনি। ছুটে গিয়ে বাঁ পায়ে শটে লক্ষ্যভেদ করেন সালাহ।
সেই আনন্দ অবশ্য বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি সফরকারীদের। ২৭তম মিনিটে সমতায় ফেরে সিটি। ডান দিক থেকে গ্রিলিশের পাস ছয় গজ বক্সের মুখে পেয়ে প্রথম স্পর্শে আলিসনকে পরাস্ত করেন আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড আলভারেস। বিরতির আগে আর উল্লেখযোগ্য সুযোগ পায়নি কেউ। দ্বিতীয়ার্ধে প্রথম আট মিনিটের মধ্যে দুই গোল করে ম্যাচে চালকের আসনে বসে যায় সিটি। এই অর্ধের ৫৩ সেকেন্ডে স্বাগতিকদের এগিয়ে নেন ডে ব্রুইনে। ডান দিক থেকে মাহরেজের শটে বলে হাত ছোঁয়ালেও বিপদমুক্ত করতে পারেননি আলিসন। প্রথম স্পর্শে জালে পাঠান বেলজিয়ান মিডফিল্ডার। খানিক পর কাছ থেকে শটে ব্যবধান বাড়ান গিনদোয়ান।
৭৪তম মিনিটে সব অনিশ্চয়তার ইতি টেনে দেন গ্রিলিশ। ডে ব্রুইনেকে পাস দিয়ে বক্সে ঢুকে পড়েন তিনি। ফিরতি বল পেয়ে ডান পায়ের শটে ঠিকানায় পাঠান ইংলিশ ফরোয়ার্ড। শেষ দিকে গ্রিলিশের একটি ভলি আলিসন রুখে না দলে ব্যবধান আরও বাড়তে পারত।