ঢাকায় মিল-কারখানা ছাড়া কোথাও ওয়াটার হাইড্রেন নেই বললেই চলে
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন বলেছেন, একটি পরিকল্পিত নগরায়নের জন্য ওয়াটার হাইড্রেন থাকা জরুরি, অগ্নিনির্বাপণের জন্য অতিব জরুরি। ঢাকা শহরে মিল-কারখানা ছাড়া কোথাও ওয়াটার হাইড্রেন নেই বললেই চলে।
বুধবার (৫ এপ্রিল) দুপুর ১টায় অধিদপ্তরের প্রধান ফটকে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান তিনি। এসময় বঙ্গবাজারে লাগা আগুন নির্বাপণে এখনো ফায়ার সার্ভিসের ১২ টি ইউনিট কাজ করছে বলে জানান ডিজি৷
ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক বলেন, এনেক্সকো টাওয়ারের ৫ ও ৬ তলায় গোডাউন রয়েছে। সেখানে এখনো মাঝে মাঝে আগুন দেখা যাচ্ছে। সেখানে ফায়ার সদস্যরা কাজ করছে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে তিনি বলেন, আমাদের জন্য প্রত্যেকটা স্থাপনাই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা গ্রুপে গ্রুপে ভাগ করে, এক একটা গ্রুপ এক এক জায়গায় কাজ করেছি। একসঙ্গে একশ ফায়ার ফাইটার জড়ো হলেও সেটা কাজের জন্য কিন্তু অন্তরায়। আপনারা দেখেছেন পুলিশ হেডকোয়ার্টারে একটি তিনতলা ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পুলিশ হেডকোয়ার্টারে পাশেই এনেক্সকো টাওয়ারের বর্ধিত ভবন সেটি কিন্তু পুড়েনি। সেটা কিন্তু আমরা রক্ষা করেছি।
প্রতিবারই আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিস থেকে পানি সংকটের বিষয়টি সামনে আসে কেন, এমন প্রশ্নের জবাবে মাইন উদ্দিন বলেন, ঢাকা শহরের বর্তমান অবস্থা আপনারা জানেন। আমরা রাজউক, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সঙ্গে আগামী সপ্তাহে বসে বিএমডিসি (বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল) কোর্ট যেন মেনে চলার ব্যবস্থা করা যায়, সেটা করবো।
ফায়ার ডিজি বলেন, একটি পরিকল্পিত নগরায়নের জন্য ওয়াটার হাইড্রেন থাকা জরুরি, অগ্নিনির্বাপণের জন্য অতিব জরুরি। ঢাকা শহরে মিল-কারখানা ছাড়া কোথাও ওয়াটার হাইড্রেন নেই বললেই চলে।
তিনি আরও বলেন, রাজধানী সুপার মার্কেট ও গাউছিয়া মার্কেটসহ ঢাকায় বেশ কিছু ঝুঁকিপূর্ণ মার্কেট রয়েছে। আমরা বৃহস্পতিবার (৬ এপ্রিল) থেকে এসব মার্কেটে সার্ভে শুরু করবো। এসব মার্কেটে বিএমডিসি কোর্ট অনুযায়ী প্রবেশ কিংবা বাইর হওয়া এবং অগ্নিনির্বাপণের ব্যবস্থা থাকার কথা, আমার কাছে আপাতত দৃষ্টিতে তাই মনে হচ্ছে ঝুঁকিপূর্ণ। মার্কেটের মালিকপক্ষকে নিয়েই এ সার্ভে করা হবে এবং পরবর্তী করণীয় বিষয়ে জানিয়ে দেয়া হবে।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) ভোরের দিকে বঙ্গবাজারে আগুনের সূত্রপাত হয়। সকাল ৬টা ১০ মিনিটে অগ্নিকাণ্ডের খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। ৬টা ১২ মিনিটে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় প্রথম ইউনিট। মার্কেটটিতে সহস্রাধিক কাপড়ের দোকান থাকায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। আগুনের ভয়াবহতা বুঝতে পেরে ফায়ার সার্ভিস সদর দফতরের সব ক’টি ইউনিট কাজে নেমে পড়ে। খবর পাঠানো হয় ঢাকার সকল স্টেশনে। আগুন নিয়ন্ত্রণে সবশেষ কাজ করর ফায়ার সার্ভিসের ৪৮টি ইউনিট।
ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি ঘটনাস্থলে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে সেনাবাহিনী, নৌ বাহিনী ও বিমানবাহিনীর বিশেষায়িত টিম। আছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) দলও। অগ্নিনির্বাপনের জন্য ব্যবহার করা হয় হেলিকপ্টারও।