বাফুফেকে ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রীর তিরস্কার!
অর্থ সংকট দেখিয়ে প্যারিস অলিম্পিক গেমস ফুটবলের বাছাই পর্ব খেলতে সাবিনা খাতুনদের মিয়ানমারে পাঠায়নি বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। অথচ এখন তারা সেই দায় চাপাচ্ছে সরকারের উপর। বাফুফে থেকে একাধিকবার জানানো হয়েছে যে, সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে আর্থিক সাহায্য না পাওয়ায় বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবল দলকে মিয়ানমারে পাঠানো হয়নি। দেশের ফুটবলের অভিভাবক সংস্থার এমন কথায় চটেছেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল এমপি। তাই তিনি তিরস্কার করলেন বাফুফেকে। ইচ্ছে করেই অলিম্পিক ফুটবলের বাছাই পর্ব খেলতে নারী দলকে মিয়ানমারে পাঠায়নি বাফুফে এবং এর দায় তারা অন্যের উপর চাপানোর চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেছেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী।
রোববার জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের (এনএসসি) নির্বাহী কমিটির সভা শেষে রাসেল বলেন, ‘সাফ শিরোপা জিতে সাবিনারা দেশের জন্য বড় একটি সম্মান নিয়ে এসেছে। অথচ তারাই অলিম্পিক বাছাই পর্বে খেলতে পারছে না। এর চেয়ে কষ্টের আর কিছুই হতে পারে না।’
বাফুফের নির্বাচিত কর্মকর্তারা ছাড়া গণমাধ্যমের সামনে এ সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য প্রদান করছেন সাধারণ সম্পাদক মো. আবু নাইম সোহাগ। বিষয়টি ধৃষ্টতার শামিল বলে মনে করেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী,‘আমি জেনেছি সাবিনাদের মিয়ানমারে না যাওয়া নিয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন সাধারণ সম্পাদক। বাফুফেতে চাকরি করেন এমন একজন সরকারকে দোষারোপ করে বক্তব্য দিয়েছেন। তাছাড়া অর্থের জন্য সরকারকে এক দিনের সময় দিয়ে বাফুফের দায়িত্বশীলরা কিভাবে বক্তব্য দেন। আমরা কাজ শুরু করেছিলাম। অর্থ মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছিলাম। সরকারকে সময়ই দেয়া হলো না। অথচ এ নিয়ে ধৃষ্টতাপূর্ণ কথা বললেন সাধারণ সম্পাদক সাহেব।’ তিনি বলেন, ‘বাফুফে থেকে আমাদেরকে দোষারোপ করা হয়েছে। তারা বলেছে, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় বরাদ্দ দেয়নি, এজন্য টিম পাঠাতে পারেনি। আমরা ২৭ মার্চ বাফুফের চিঠি পেয়েছি। ৩১ মার্চের মধ্যে ৯২ লাখ টাকা দিতে তারা অনুরোধ করেছিল। একদিন পরই বাফুফে থেকে জানানো হয় যে, টাকা পাচ্ছে না বলে টিম পাঠাতে পারছে না তারা। কিভাবে এটা হয়? কোনো কিছুর জন্য আবেদন করার পরদিনই কি দোষারোপ করা যায়? এ কাজটি তারা করেছে উদ্দেশ্যমূলকভাবে। নিজের দোষকে অন্যের কাঁধে চাপিয়ে দেওয়ার একটা হীন প্রচেষ্টা করেছেন বাফুফের কর্তারা।’
যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে ছিলেন। সেখানে থেকেই গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সাবিনাদের মিয়ানমারে না যাওয়ার বিষয়ে জেনেছেন তিনি। মেয়েদের মিয়ানমার সফরের খরচ প্রসঙ্গে জাহিদ আহসান রাসেল বলেন,‘খরচের হিসাবটা আমি দেখেছি, ৩০-৪০ লাখ টাকা হলেও মিয়ানমারে খেলায় অংশ নিতে পারতো মেয়েরা। সেটি যে কেউ দিতে পারতো। এমনকি আমরাও দিতে পারতাম। আমরা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত ছিলাম। পৃষ্ঠপোষক প্রতিষ্ঠানও প্রস্তুত ছিল। আসলে তাদের ইচ্ছাই ছিল নারী ফুটবল দলকে বিদেশে না পাঠানোর। এ জন্যই এমন নাটক সাজিয়ে দোষটা আন্যের কাঁধে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে।’ তিনি যোগ করেন,‘আমি জেনেছি, ভারত কোয়ালিফাই করেছে। আমাদেরও উজ্জ্বল সম্ভাবনা ছিল। সেই সম্ভাবনাকে নষ্ট করলেন বাফুফের কর্তারা। কেন তারা ইচ্ছেকৃতভাবে এই কাজটি করলেন? দেশের ভাবমূর্তিকে কেন সংকটে ফেললেন ফুটবল কর্তারা তা আমার মাথায় আসে না। এর পেছনে নিশ্চয়ই অন্য কোন কারণ রয়েছে।’