বাংলাদেশে প্রথম ট্যুরিজম ভিত্তিক নিউজ পোর্টাল|Sunday, December 22, 2024
সাইটে আপনার অবস্থানঃ Home » জাতীয় » দলীয়রাই চ্যালেঞ্জ দিচ্ছে আওয়ামী লীগকে

দলীয়রাই চ্যালেঞ্জ দিচ্ছে আওয়ামী লীগকে 

17-20230506224400

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে দেশের পাঁচ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে জেতা নিয়ে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। এ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় প্রত্যাশায় থাকলেও দলীয় বিরোধিতার মুখে তার প্রশ্নবিদ্ধ অবস্থানের তৈরি হয়েছে। নৌকার প্রার্থীদের চ্যালেঞ্জ দিচ্ছে দল থেকে মনোনয়য় না পাওয়া দলীয়রাই।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা বলছেন, যারা দলীয় প্রার্থীদের বিরোধীতা করছেন তাদের বিরুদ্ধে আগামী নির্বাচনের আগেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, ২৫ মে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন, ১২ জুন খুলনা ও বরিশাল সিটি কর্পোরেশন এবং ২১ জুন রাজশাহী ও সিলেট সিটি কর্পোরেশনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

দলীয় সূত্র জানিয়েছেন, সিটি নির্বাচনে নৌকা বিরোধীদের রুখতে সর্বশেষ সিদান্ত নেবেন দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা। তিনি জাপান, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য সফরে থাকায় এখন তার দিকেই তাকিয়ে আছেন আওয়ামী লীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা। দেশে ফেরার পর দলের সাংগঠনিক সম্পাদকদের সঙ্গে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন নিয়ে বিশেষ বৈঠক করবেন তিনি। পাঁচ সিটি এলাকার সাংগঠনিক অবস্থা তাদের কাছ থেকে জানবেন। ওই বৈঠকে দলীয় প্রধান প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেবেন।

আওয়ামী লীগের সূত্রগুলো বলছে, সিটি নির্বাচনে দলীয় নেতা-কর্মীদের অভ্যন্তরীণ কোন্দোলের কারণে গভীর চিন্তার ভাঁজ পড়েছে আওয়ামী লীগের কপালে। ৫টির মধ্যে বেশিরভাগ জায়গায় আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বিরোধিতা করছেন আওয়ামী লীগ নেতারাই। ৫টির মধ্যে ৩টিতে দলীয় প্রার্থীদের চ্যালেঞ্জ করে বসেছেন দলীয় নেতারাই। তবে বিষয়টি দলের জন্য চ্যালেঞ্জের বিষয় না বলেই আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা মনে করছেন।
এবারও রাজশাহীতে বর্তমান মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জমান লিটন, খুলনায় বর্তমান মেয়র তালুকদার আবদুল খালেককে মনোনয়ন দিয়েছে আওয়ামী লীগ। গাজীপুরে সাময়িক বরখাস্ত হওয়া বর্তমান মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে বাদ দিয়ে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্লাহ খানকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। বরিশালে চাচা-ভাতিজার মনোনয়ন লড়াইয়ে দলের সমর্থন পেয়েছেন আবুল খায়ের আবদুল্লাহ ওরফে খোকন সেরনিয়াবাত। বিদায়ী মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ এবার মনোনয়ন পাননি। সিলেটে সিটিতে আওয়ামী লীগ মনোনয়ন দিয়েছেন আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীকে। তিনি স্থানীয় রাজনীতিতে খুবই অপরিচিত মুখ। আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী প্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতা। এর আগে তিনি যুক্তরাজ্য যুবলীগের নেতা ছিলেন।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, গাজীপুর, সিলেট ও বরিশাল সিটি নির্বাচন নিয়ে এবার বেশ চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে পারে আওয়ামী লীগ। কারণ এ তিন সিটিতে দলের বিদ্রোহী প্রার্থী বা অভ্যন্তরীণ কোন্দল রয়েছে। গাজীপুর সিটিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বিপক্ষে মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম ও তার মা। শেষমেষ বাছাই পর্বে ঋণখেলাপির দায়ে জাহাঙ্গীর আলমের মনোনয়ন বাতিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। কিন্তু বৈধ হয়ে যায় তার মায়ের মনোনয়ন। নিজের মনোনয়ন টিকতে নাও পারে, সেটা আগে থেকে আঁচ করতে পেরে মায়ের নামে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছিলেন সাবেক এ মেয়র। জাহাঙ্গীর আলম নিজে নির্বাচন না করলে দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে তার মাকে মাঠে রাখেন কিনা এ নিয়ে আওয়ামী লীগে জোর আলোচনা রয়েছে।

এ নির্বাচনকে স্থানীয় অনেকেই ২০১৩ সালের গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের সঙ্গে তুলনা করছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ। সেবার গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে প্রার্থী হয়েছিলেন জাহাঙ্গীর আলম। কিন্তু দল তাকে মনোনয়ন না দিয়ে আওয়ামী লীগ সেবারও আজমত উল্লা খানকে প্রার্থী ঘোষণা করেছিল। দলের চাপে একপর্যায়ে জাহাঙ্গীর আলম ভোটের মাঠে নীরব ভূমিকা নিয়েছিলেন। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের একটা অংশ নিষ্ক্রিয় ছিল এবং আজমত উল্লা খান বিএনপি প্রার্থীর কাছে পরাজিত হয়েছিলেন।

আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতারা মনে করেন, রাজধানীর পাশের শহর হচ্ছে গাজীপুর। এ সিটিতে ক্ষমতাসীন দলের মেয়র থাকাটা জরুরি। তাই সেখানে ত্যাগী নেতাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়। মনোনয়ন না পেয়ে জাহাঙ্গীর বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে অবস্থান নেন। তাতে দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল গাজীপুরে এখন স্পষ্ট। দলীয় নেতাদের ধারণা, জাহাঙ্গীর আলম নির্বাচনে না থাকলে তার কর্মী-সমর্থকরা আওয়ামী লীগের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করতে চাইবে না। ফলে এ নির্বাচনের বৈতরণী পার হওয়া আওয়ামী লীগের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠতে পারে।

প্রায় একই চিত্র বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনেও। মেয়র পদে দায়িত্ব পালন করায় বরিশালে সাদিক আবদুল্লাহকে ঘিরে একটি বলয় রয়েছে স্থানীয় রাজনীতিতে। তার কর্মী-সমর্থকদের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে কাজ করানো দুরূহ ব্যাপার। তবে, সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে নৌকার পক্ষে কাজ করার ঘোষণা দিয়েছেন বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের বর্তমান মেয়র। যদিও কোনো মিটিং কিংবা ঘরোয়া বৈঠতে সরাসরি অংশ নিতে দেখা যাচ্ছে না সাদিক আবদুল্লাহ এবং বাবা আবুল হাসানাত আবদুল্লাহকে।

অন্যদিকে সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন নিয়েও এবার অন্যরকম চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হচ্ছে আওয়ামী লীগকে। সিলেটে নৌকা জিততে হলে অভ্যন্তরীণ বিরোধ মিটিয়ে দলকে আনোয়ারুজ্জামানের পেছনে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে।

এ সিটির সাবেক বিএনপির নেতা মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী নির্বাচন করার পক্ষে ইঙ্গিত দিয়েছেন। গত ১ মে শ্রমিক দিবসের একটি সভায় তিনি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিপরীতে চ্যালেঞ্জ ছোঁড়েন। সিলেটে বিরোধী দলগুলোর ভোট এবং আওয়ামী লীগের একাংশের ভোটও যুক্ত হবে নৌকার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর বাক্সে। তাই এই সিটিতেও বড় রকমের চ্যালেঞ্জ রয়েছে ক্ষমতাসীনদের।

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম ইনকিলাবকে বলেন, যারা সিটি নির্বাচনে নৌকার প্রার্থীদের বিরোধিতা করছেন তাদের বিষয়ে অবশ্যই সময়মত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বিষয়টিকে দল চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এগুলো কোনো চ্যালেঞ্জের বিষয় নয়। কারণ আমাদের দলকে এক রাখতে ঐক্যের প্রতীক হিসেবে রয়েছেন দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, আমরা দলীয় নেতা-কর্মীদের নির্দেশনা দিচ্ছি যাতে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘন না হয়। আমরা সব সময় নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা করে যাব।

তিনি এত অভিযোগ করেন, সিটি নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত ষড়যন্ত্রের পথ বেছে নিয়েছে। তিনি বলেন, নির্বাচন গণতান্ত্রিক প্রদ্ধতি, কিন্তু বিএনপি-জামায়াত তাকে ভ-ুল করতে পাঁয়তারা শুরু করেছে। কিন্তু আমরা এ বিষয়ে সতর্ক আছি।

আওয়ামী লীগের সূত্রগুলো বলছে, সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে জয়লাভ নিয়ে বেশ কঠিন একটি চ্যালেঞ্জে পড়েছে ক্ষমতাসীনরা। একদিকে বর্তমান সরকারের অধীনে ভোট সুষ্ঠুভাবে শেষ করে বিরোধীদের জাতীয় নির্বাচনে গ্রহণযোগ্যতার প্রমাণ করতে হবে, অন্যদিকে দলীয় মনোনীত প্রার্থীকে যেকোনোভাবে জয়ী করে মহানগরগুলো নিজেদের নিয়নন্ত্রণেও রাখতে হবে। দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী ও নির্বাচনে দায়িত্বশীলরাও কঠিন চ্যলেঞ্জের মুখোমুখী হচ্ছেন।

পাঁচ সিটির মধ্যে খুলনা ও রাজশাহীর চেয়ে বরিশাল-সিলেট ও গাজীপুরকে বেশি গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতারা। কারণ তিন সিটিতে দলের অনেকেই প্রকাশ্যেই নৌকার বিরোধিতা করছেন। আবার বিরোধীরাও শক্ত অবস্থানে রয়েছে। অভ্যন্তরীণ কোন্দল নিরসনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উচ্চ পর্যায়ের নেতাদের নিয়ে সমন্বিত টিম মাঠে কাজ করছে। এরই মধ্যে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের জন্য ২৮ সদস্যের সমন্বয় টিম গঠন করা হয়েছে। বরিশালে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টাম-লীর সদস্য ও ১৪ দলের সম্বনয়ক আমির হোসেন আমু ও সভাপতিম-লীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক নিয়মিতই যাতায়াত করছেন। বরিশালে দলীয় প্রার্থী আবুল খায়ের আবদুল্লাহর প্রধান নির্বাচনী কর্যালয়ও উদ্বোধন করে দিয়ে এসেছেন আমু ও নানক। এছাড়াও গত বৃহস্পতিবার সিলেট একটি কর্মী সভার আয়োজন করে মহানগর আওয়ামী লীগ। সভায় কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নেতারাও যোগ দেন।

গত শুক্রবার সিলেট মহানগরীর একটি অভিজাত হলে সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সভাপতি সম্পাদকসহ অন্যান্য দায়িত্বশীল নেতাদের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন ওই নির্বাচনে দায়িত্বপ্রাপ্ত দলের কেন্দ্রীয় নেতারা।

এ সময় আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক ছাড়াও দলের সভাপতিম-লীর সদস্য সৈয়দা জেবুন্নেছা হক, আওয়ামী লীগের সিলেট বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন এবং সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী।

বৈঠক শেষে নৌকার প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী আবারও সব ভেদাভেদ ভুলে দলীয় নেতাকর্মীদের বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রী এবং স্বাধীনতার প্রতীক নৌকার পক্ষে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান।

গত ২ মে আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে কীভাবে জয়ী করা যায় সে বিষয়ে বৈঠকে হয়েছে। বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, শুরুতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আজমত উল্লাহ খান তার নির্বাচনী এলাকার বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরেন। তার বক্তব্যের পর সমন্বয় টিমের নেতারা বক্তব্য রাখেন। সেখানে জাহাঙ্গীর আলম ক্ষমা পাওয়ার পরও কী করে আওয়ামী লীগের বিরোধিতা করেন তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। তিনি বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে হাত মিলিয়ে এসব করছে কি না তাও খতিয়ে দেখার দাবি করা হয়। যে ব্যক্তি শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে নৌকার বিরোধিতা করে তার আওয়ামী লীগ করার কোনো অধিকার থাকে না বলে দাবি করেন নেতারা।

বৈঠক শেষে নির্বাচনের বিষয়ে দলের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও গাজীপুর সিটি নির্বাচনের প্রধান সম্বনয়ক মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে জাহাঙ্গীর আলমের বিষয়ে আওয়ামী লীগ মাথা ঘামাচ্ছে না। তিনি আরো বলেন, জাতীয় নির্বাচনের আগে সিটি নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মিটিংয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। আমরা ভোটের মাধ্যমে জয়লাভ করতে চাই।

তিনি বলেন, ২৫ মে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন। জাতীয় নির্বাচনের আগে এ নির্বাচন দেশবাসীর জন্য আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নির্বাচন সুষ্ঠু ও অবাধ হওয়ার জন্য সবার ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।

শেয়ার করুন !!Share on FacebookTweet about this on TwitterShare on Google+Share on LinkedInShare on RedditBuffer this pageDigg thisShare on TumblrPin on PinterestShare on StumbleUponFlattr the authorEmail this to someone