বাংলাদেশে প্রথম ট্যুরিজম ভিত্তিক নিউজ পোর্টাল|Sunday, December 22, 2024
সাইটে আপনার অবস্থানঃ Home » খেলা » বাংলাদেশের ‘প্রস্তুতিটা’ হবে তো?

বাংলাদেশের ‘প্রস্তুতিটা’ হবে তো? 

12-20230510221218

কথ্য বাংলায় একটা বাক্য বেশ প্রচলিত- ‘যেই লাউ, সেই কদু’। আয়ারল্যান্ড ও বাংলাদেশের মধ্যকার ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচটার পর আয়ারল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ডও কি ঠিক এমন ভাবেই দীর্ঘশ্বাস ফেলছে? ফেললে অবাক হওয়ার কিছু নেই! চলমান বছরের শেষে ভারত বিশ্বকাপে সরাসরি অংশগ্রহণের জন্য কত বিশাল একটা সিদ্ধান্তই নিয়েছিল তারা। বৃষ্টির বাগরায় ম্যাচ পরিত্যাক্ত হতে পারে এই চিন্তা থেকে বাংলাদেশের বিপক্ষে হোম সিরিজটি নিজেদের দেশ থেকে পাশের ইংল্যান্ডে সরিয়ে নিয়ে যায়। মাস দুয়েক আগে বাংলাদেশে এসে সবকটি ম্যাচে ধবলধোলাই হওয়ার পরও আইরিশদের দৃঢ় বিশ্বাস ছিল তারা টাইগারদের সিরিজের ৩ ওয়ানডেতেই হারিয়ে বিশ্বকাপের সরাসরি টিকেট কাটবে। তবে ‘কিশোরীর মন’র চেয়ে পরিবর্তনশীল ইংল্যান্ডে আবহাওয়াই যেকোন সময়ই বৃষ্টির আনাকাক্সিক্ষত আগমন হবে তাই স্বাভাবিক। পরশু মুশফিকুর রহিমের অর্ধশতকে বাংলাদেশের ৯ উইকেটে করা ২৪৬ রানের জবাব দিতে নেমে ১৬.৩ ওভারে ৩ উইকেটে ৬৫ রান তোলে আয়ারল্যান্ড। এরপর রাজত্ব কেবল বৃষ্টিরই। আইরিশদের হৃদয় কাঁদানো বৃষ্টিতে খেলা পরিতাক্ত হওয়ায় কপাল খুলেছে দক্ষিণ আফ্রিকার। ২০২৩ বিশ্বকাপে সরাসরি খেলার টিকেট মিলেছে প্রোটিয়াদের।
টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে বাংলাদেশ প্রথম দিকে ছিল খুবই নড়বড়ে। দলীয় ১৫ রানে দুই ওপেনারকে হারানো দলটি সাকিব আল হাসান, নাজমুল হোসেন ও তাওহিদ হৃদয়ের ব্যাটিংয়ে প্রাথমিক ধাক্কা সামলায়। তবে ইংল্যান্ডের আবহাওয়ার মত অনিশ্চিত ছিল বাংলাদেশের ব্যাটিং। ১২২ রানেই ৫ ব্যাটসম্যান সাজঘরে ফিরে গেলে ২০০ রানের নিচে অল আউট হওয়ার সম্ভাবনা জেগে উঠে। সেখান থেকে বার্থডে বয় মুশফিকুর রহিম ও মেহেদি হাসান মিরাজ এমনভাবে ব্যাটিং করছিলেন মনে হচ্ছিল ৩০০ রান হবে। সেটা না হলেও আড়াইশোর কাছাকাছি পুঁজি পায় সফরকারীরা। ওয়ানডেতে নিজের ৪৪তম ফিফটির ইনিংসে মুশফিক করেন সর্বোচ্চ ৬১ রান। তাতে এই সংস্করণে সাকিব আল হাসানের রান স্পর্ষ করেছেন মিস্টার ডিপেন্ডেবল। সাকিব যদিও ৭১০৬ রান পেতে খেলেছেন ২১৮ ইনিংস, তবে মুশফিকের লেগেছে ২৩০ ইনিংস।
চেমসফোর্ডের ক্লাউডেফেম কাউন্টির মাঠের ছোট্ট গ্যালিরি দখল করে রাখা সারে ৬ হাজার বাংলাদেশি দর্শকদের দারুণ উদযাপনের মুহুর্ত এনে দেন বাংলাদেশি পেসাররা। বিপজ্জনক পল স্টার্লিংকে দ্রুত থামান শরিফুল ইসলাম। দুর্দান্ত ডেলিভারিতে আইরিশ অধিনায়ক অ্যান্ড্রু বালবার্নিকে বোল্ড করে দেন হাসান মাহমুদ। পরে এক প্রান্ত আগলে রাখা ওপেনার স্টিভেন ডোহেনিকে ফেরান তাইজুল ইসলাম। বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ হওয়ার সময় নিয়ন্ত্রণ ছিল বাংলাদেশেরই। ১৬.৩ ওভারে আয়ারল্যান্ডের রান ছিল ৩ উইকেটে ৬৫। আইন অনুযায়ী পরে ব্যাটিং করা দল ২০ ওভার ব্যাটিং করার আগে বৃষ্টির কারণে খেলা শুরু না হলে ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়।
ম্যাচ শেষে হাসান ভিডিও বার্তায় জানায় নিজেদের পরিকল্পনার কথা, ‘আমি ও শরিফুল খুব ভালো শুরু করেছি ওদেরকে ভুগিয়েছি। বোলিংয়ে আমাদের পরিকল্পনা ছিল চতুর্থ থেকে পঞ্চম স্টাম্পে বল করা। জায়গা না দেওয়া। সুইং ব্যবহার করে, নতুন বল কাজে লাগানো।’ ২৩ বছর বয়সী এই পেসার জানালেন বাংলাদেশের বাংলাদেশ বোলিং ইউনিটের ভালো করার পেছনে বোলিং কোচ অ্যালেন ডোনাল্ডের অবদান, ‘আমাদের পেস বোলিং গ্রুপ খুবই ভালো করছে। এর পেছনে বলতে গেলে ডোনাল্ডের অনেক পরিশ্রম আছে। উনি আমাদেরকে তার অভিজ্ঞতাগুলো ভাগাভাগি করেন যে কীভাবে কী করলে ভালো হয়। পরামর্শগুলো আমাদেরকে অনেক সহায়তা করে।’
বৃষ্টিতে খেলা পরিত্যক্ত হয়ে যাওয়ার পর উপস্থিত সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন বাংলাদেশি ওপেনার নাজমুল হোসেন, ‘শুরুটা ভালোই হয়েছিল। ম্যাচটা শেষ হলে হয়তো ফল আমাদের দিকেই আসত। আমাদের পেসার ও স্পিনাররা যেভাবে বোলিং করেছে, সেটি ভালোই ছিল। আবহাওয়ার ওপর আসলে কারওরই হাত নেই, তাই এটা নিয়ে ভাবছিই না।’
এই সিরিজ থেকে আয়ারল্যান্ডের পাওয়ার ছিল অনেক কিছুই। যদিও প্রথম ম্যাচটা পরিত্যক্ত হওয়ায় আইরিশদের এখন বাছাইপর্বের বাঁধা পেরিয়ে বিশ্বকাপ খেলতে হবে। তবে এক অর্থে বাংলাদেশের পাওয়ার নেই কিছুই। দেশে চলছে ডিপিএল। তাছাড়া টানা সিরিজের দখল থেকে ক্রিকেটারদেরও বিশ্রামের প্রয়োজন হয়। সেই সুযোটা পাচ্ছে কোথায় তারা। অন্যদিকে আইরিশ বোর্ডের অব্যবস্থাপনায় ত্যক্ত হয়ে বাংলাদেশ কোচ চান্ডিকা হাথুরুসিংহে তো বলেই ফেলেছেন- ‘যদি আগে জানতাম, তাহলে এই ধরণের সূচিতে রাজি হতাম না।’

শেয়ার করুন !!Share on FacebookTweet about this on TwitterShare on Google+Share on LinkedInShare on RedditBuffer this pageDigg thisShare on TumblrPin on PinterestShare on StumbleUponFlattr the authorEmail this to someone