বাংলাদেশে প্রথম ট্যুরিজম ভিত্তিক নিউজ পোর্টাল|Sunday, December 22, 2024
সাইটে আপনার অবস্থানঃ Home » খেলা » প্রতিশোধ আর আক্ষেপ ঘোচানো মিশন

প্রতিশোধ আর আক্ষেপ ঘোচানো মিশন 

22-20230606224016

দীর্ঘ দুই বছরে টেস্ট ক্রিকেটের কঠিন জমিতে নিরন্তর লড়াই করার সুফল পেয়েছে ভারত এবং অস্ট্রেলিয়া। বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে পৌঁছেছে এই দুই দল। গত মার্চে ভারতকে হারিয়েই প্রথম দল হিসেবে ফাইনালের টিকিট পাকা করে অস্ট্রেলিয়া। অন্যদিকে অজিদের বিপক্ষে ঘরের মাঠে বর্ডার-গাওস্কর ট্রফি জিতে ফাইনালে জায়গা করে নেয় ভারতও। প্যাট কামিন্সের নেতৃত্বে প্রথমবার বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে অস্ট্রেলিয়া। পাঁচবার একদিনের বিশ্বকাপ জিতেছে তারা। একবার জিতেছে টি-২০ বিশ্বকাপ। দুইবার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিও জিতেছে ‘ব্যাগি গ্রিন’ বাহিনী। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ জিতে সবকটি আইসিসি ট্রফি জিততে মরিয়া তারা। অন্যদিকে ভারতের ঝুলিতেও বাকি সব আইসিসি ট্রফি থাকলেও নেই কেবল টেস্ট বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ। ম্যাচ জিতে সংগ্রহ সম্পূর্ণ করতে চাইবে ভারতীয় দলও। ২০২১ সালে ফাইনালে হেরে বিদায় নিতে হয়েছিলো ভারতকে। তাই এবারের ফাইনালে বাড়তি মোটিভেশন কাজ করবে রোহিত শর্মাদের মধ্যে। ইংল্যান্ডের ওয়ালে আজ থেকে সেই আক্ষেপ ঘোচানোর লড়াই শুরু বাংলাদেশ সময় বেলা সাড়ে ৩টায়।
বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে নামার আগে চোট-আঘাত সমস্যায় ভুগেছে ভারতীয় দল। পিঠের চোটে ছিটকে গিয়েছেন জসপ্রীত বুমরাহ, শ্রেয়স আইয়ার। হাঁটুর চোটে নেই ঋষভ পন্থও। ভারত পাচ্ছে না কে এল রাহুলকে। এতসব নেইয়ের মাঝেও টিম স্পিরিটে আস্থা রেখে জয়ের সন্ধানে বিরাট কোহলিরা। আইপিএল খেলার পর শিবিরে যোগ দিয়েছেন ভারতীয় তারকারা। সেখানেই কোচ রাহুল দ্রাবিড়ের তত্ত্বাবধানে চলেছে স্ট্র্যাটেজি নির্মাণের কাজ। ওপেনে রোহিতের সাথে শুভমান গিলকে দেখা যাবে ম্যাচ। তরুণ ওপেনার শুভমান এই মরসুমে দুরন্ত ফর্মে রয়েছেন। ফাইনালেও তার ব্যাটে রানের আশায় থাকবে ভারতবাসী। রানের মধ্যে রয়েছেন কোহলিও। পূজারা এবং প্রত্যাবর্তন ঘটানো রাহানের দিকেও থাকবে নজর। তিন পেসার হিসেবে মহম্মদ শামি, মহম্মস সিরাজ এবং উমেশ যাদব খেলতে পারেন। তবে ভারত রবীন্দ্র জাদেজার সাথে দ্বিতীয় স্পিনার হিসেবে রবিচন্দ্রন অশ্বিনকে খেলাবে, নাকি শার্দূল ঠাকুরকে খেলাবে চতুর্থ সিমার হিসেবে খেলবেন তা নির্ভর করবে পরিস্থিতির ওপর।
ভারতের বিরুদ্ধে নামার আগে দলে কিছু রদবদল করতে হয়েছে অস্ট্রেলিয়াকেও। পাঁজরের চোটে ছিটকে গিয়েছেন হ্যাজেলউড। তার বদলে দলে এসেছেন মাইকেল নেসের। ইংল্যান্ডের কাউন্টি ক্রিকেটে গ্ল্যামারগনের হয়ে বেশ ভালো পারফর্ম্যান্স নেসেরের। তাঁকে প্রথম একাদশে জায়গা দিতে পারেন কোচ অ্যান্ড্রু ম্যাকডোনাল্ড। বোলিং-এর পাশাপাশি নেসেরের ব্যাটিং-এর হাতও বেশ ভালো। টপ অর্ডারে খাজা ও ওয়ার্নার জুটির ওপরেই থাকবে ওপেনিং-এর দায়িত্ব। তারপর তিন ও চারে অজি দলের সেরা দুই অস্ত্র মার্নাস লাবুশেন এবং স্টিভ স্মিথ। ব্যাটে ট্যাভিস হেড, ক্যামেরন গ্রিন, অ্যালেক্স ক্যারির দিকেও নজর থাকবে। একমাত্র স্পিনার হিসেবে প্রথম একাদশে জায়গা পেতে পারেন নাথান লিয়ঁ। অস্ট্রেলীয় পেস ব্যাটারির নেতৃত্বে থাকবেন অধিনায়ক প্যাট কামিন্স। মাতৃবিয়োগের ফলে ভারতসফর অসস্মপূর্ণ রেখেই ফিরেছিলেন তিনি। বর্ডার-গাওস্কর ট্রফির বদলা নিতে মুখিয়ে থাকবেন অজি অধিনায়ক। কামিন্সের সাথে থাকবেন মিচেল স্টার্ক এবং স্কট বোল্যান্ড। চতুর্থ পেসার হিসেবে থাকবেন অলরাউন্ডার ক্যামেরন গ্রিন।
ক্রিকেটবিশ্বে সবচেয়ে বেশী টেস্ট ম্যাচ আয়োজন করার কৃতিত্ব রয়েছে ইংল্যান্ডের ওভাল স্টেডিয়ামের। সেই ঐতিহাসিক মাঠেই লাল বলের মহারণে মুখোমুখি হতে চলেছে ভারত এবং অস্ট্রেলিয়া। এই মাঠে দুই দলের এটাই প্রথম সাক্ষাৎ। ওভালে ভারত এবং অস্ট্রেলিয়া, দুই পক্ষেরই রেকর্ড বিশেষ ভালো নয়। ভারত ১৪ ম্যাচ খেলে জিতেছেন ২টি, হেরেছে ৫টি এবং ড্র করেছে ৭টি টেস্ট। ২০২১ সালে শেষবার যখন ‘টিম ইন্ডিয়া’ এই মাঠে নেমেছিলো তখন ১৫৭ রানে জয় পেয়েছিলেন বিরাট কোহলিরা। অপরপক্ষে অস্ট্রেলিয়ার রেকর্ড বলছে যে তারা এই মাঠে খেলেছে ৩৮টি টেস্ট। জিতেছে মাত্র ৭টি। হেরেছে ১৭টি এবং ড্র করেছেন ১৪ টেস্ট। সাফল্যের হার শতকরা ১৮.৪২।
কেনিংটন ওভালের উইকেট শেষ দুই দিনে খানিক শুষ্ক হয়ে পড়ায় সাহায্য পান স্পিনাররা। সেই কারণেই এই মাঠে টস গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। টসজয়ী অধিনায়ক প্রথমে ব্যাটিং করে প্রতিপক্ষের দিকে চতুর্থ ইনিংসে স্পিন সামলানোর চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিতে চাইবেন। এই মাঠে ব্যাটার এবং বোলার উভয়ের জন্যই সাহায্য থাকে। বিশেষ ভূমিকা নিতে পারে আবহাওয়া। রোদ ঝলমলে আকাশ থাকলে ব্যাটাররা সুবিধা পেতে পারেন। তবে আকাশে মেঘ থাকলে স্যুইং-এর সাহায্য নিয়ে আঘাত হানতে পারেন বোলাররা। এই মাঠে প্রথম ইনিংসে গড় স্কোর ৩৪৩। দ্বিতীয় ইনিংসের গড় স্কোর ৩০৪। তৃতীয় ইনিংসে তা কমে দাঁড়ায় ২৩৮। ওভালের পরিসংখ্যান বলছে ১০৪ টেস্টের মধ্যে ৩৭টিতে প্রথমে ব্যাট করা দল জয় পেয়েছে। আর ২৯টিতে জয় পেয়েছে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করা দল। বাকি ম্যাচগুলি শেষ হয়েছে অমীমাংসিত ভাবে।

শেয়ার করুন !!Share on FacebookTweet about this on TwitterShare on Google+Share on LinkedInShare on RedditBuffer this pageDigg thisShare on TumblrPin on PinterestShare on StumbleUponFlattr the authorEmail this to someone