চলে গেলেন একুশে পদকপ্রাপ্ত কবি মোহাম্মদ রফিক
রবিবার রাত দশটার দিকে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন প্রতিবাদী চেতনার কবি মোহাম্মদ রফিক । তার বয়স হয়েছিল ৮০ বছর।তিনি দুই ছেলে ও স্ত্রী রেখে গেছেন। কবি মোহাম্মদ রফিকের ছাত্রী এবং সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ফারজানা সিদ্দিকা রনি জানান, কবি মোহাম্মদ রফিকের ছোট ছেলে শুদ্ধস্বত্ব রফিক অস্ট্রেলিয়া থেকে দেশে এসেছিলেন। তাকে নিয়েই কবি বাগেরহাটে নিজের বাড়িতে যান। রবিবার রাতে তিনি বাড়িতে অসুস্থ হয়ে পড়লে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় কবিকে। সেখানে ডাক্তাররা বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজে রেফার করেন। পরে বরিশাল হাসপাতাল থেকে ঢাকায় আসার সময় পথেই তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তিনি আরও বলেন, কবিকে ঢাকা আনা হবে না। তার মরদেহ বাগেরহাটে গ্রামের বাড়ি নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সেখানে দাফনের ব্যবস্থা করা হবে।
মোহাম্মদ রফিক একাধারে কবি, লেখক ও শিক্ষক ছিলেন।মূলত ১৯৬০ এর দশকে কবির আত্মপ্রকাশ ঘটে। পাকিস্তান আমলে ষাটের দশকে ছাত্র আন্দোলন ও কবিতায় এবং স্বাধীন বাংলাদেশে আশির দশকে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে মোহাম্মদ রফিকের কবিতা মানুষকে আলোড়িত করেছে। তার জন্ম ১৯৪৩ সালের ২৩ অক্টোবর বাগেরহাটে।কবি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ছিলেন। তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে ২০০৯ এ অবসরে যান। ১৯৭০ সালে মোহাম্মদ রফিকের প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘বৈশাখী পূর্ণিমায়’ প্রকাশিত হয়। তার উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থগুলো হচ্ছে : কীর্তিনাশা, খোলা কবিতা ও কপিলা ,গাওদিয়ায়,স্বদেশী নিশ্বাস তুমিময়,মেঘে এবং কাদায়, রূপকথা কিংবদন্তি,কালাপানি,দোমাটির মুখ, ত্রয়ী অন্যতম। কবিতার পাশাপাশি তার রয়েছে বেশ কয়েকটি গদ্যগ্রন্থ। এর মধ্য ভালবাসার জীবনানন্দ,আত্মরক্ষার প্রতিবেদন অন্যতম। বাংলা সাহিত্যে অবদানের জন্য ১৯৮৭ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার পান মোহাম্মদ রফিক।১৯৮১ সালে আলাওল পুরস্কার।তিনি ২০১০ সালে একুশে পদক লাভ করে।