আজ চীনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠক
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসার আমন্ত্রণে ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে সে দেশে গেছেন। প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর সফরসঙ্গীদের বহনকারী এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি নিয়মিত ফ্লাইট মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় হযরত শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে যাত্রা করে। ফ্লাইটটি বাংলাদেশ সময় রাত পৌনে ১টার দিকে জোহানেসবার্গের ওআর টাম্বো বিমানবন্দরে অবতরণ করে। আজ বুধবার স্থানীয় সময় দুপুরে জোহানেসবার্গে একটি হোটেলে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হওয়ার কথা। ব্রিকসের ১৫তম শীর্ষ সম্মেলন হচ্ছে ২২ থেকে ২৪ আগস্ট। জোটের সদস্য দেশগুলো হলো ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকা।
জোহানেসবার্গে চীনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সরকারপ্রধানের বৈঠকের সম্ভাবনার বিষয়ে গত সোমবার জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, চীনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাতের সম্ভাবনা আছে। এখনও সময় চূড়ান্ত হয়নি। হেড অব গভর্নমেন্টের সাক্ষাতের সিদ্ধান্ত শেষ মিনিটে হয়। শেখ হাসিনা-শি জিনপিংয়ের আলোচনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, চীন আমাদের উন্নয়ন সহযোগী। আমরা অনেক প্রকল্প সই করেছি। এ থেকে আট বছরে ৪০০ কোটি ডলার এ পর্যন্ত পেয়েছি। প্রকল্পগুলো যেন ত্বরান্বিত হয়, এ নিয়ে আলোচনা হতে পারে।
ড. মোমেন বলেন, আমরা ঋণের সুদের হার কম চাই। এটার ওপর আলোচনা হবে। আমরা বলব, সস্তায় বিবেচনা করলে ভালো হয়। জলবায়ু ইস্যু থাকবে, আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য বিনিয়োগ চাই। বাণিজ্য বাড়াতে চাই। আলোচনায় আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার বিষয়টি থাকছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার বিষয় আমাদেরও অগ্রাধিকার। পুরো অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা দরকার। প্রধানমন্ত্রীকে আবার ক্ষমতায় রাখা গেলে এ অঞ্চলের জন্য মঙ্গল হবে বলে মনে করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। সাংবাদিকদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, শান্তি ও স্থিতিশীলতা সবচেয়ে জরুরি। শেখ হাসিনা শান্তি ও স্থিতিশীলতার প্রতীক। প্রধানমন্ত্রীকে যদি ক্ষমতায় রাখা যায়, পুরো অঞ্চলের জন্য, আমাদের জন্য; ভারত, নেপাল ও ভুটান প্রতিটির জন্য মঙ্গল হবে।
দক্ষিণ আফ্রিকায় অবস্থানকালে প্রধানমন্ত্রী ব্যস্ত সময় পার করবেন। আজ বুধবার সকাল ১০টার দিকে তিনি বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এবং বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) যৌথভাবে আয়োজিত ‘বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড বিজনেস সামিট’-এ যোগ দেবেন। এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেবেন প্রধানমন্ত্রী। এর পর সরকারপ্রধান আফ্রিকায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন। এ বৈঠকে আফ্রিকায় নিযুক্ত ৯ দেশে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতরা অংশ নেবেন। বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন। সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী ব্রিকসের বর্তমান চেয়ার ও দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট আয়োজিত রাষ্ট্রীয় ভোজসভায় যোগ দেবেন।
আগামীকাল বৃহস্পতিবার সকালে প্রধানমন্ত্রী ব্রিকস আফ্রিকা আউটরিচ অ্যান্ড দ্য ব্রিকস প্লাস ডায়ালগে অংশগ্রহণ করবেন। এ ডায়ালগে ব্রিকসের নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের সদস্য হিসেবে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী বক্তব্য দেবেন। এ ছাড়া এদিন মোজাম্বিকের প্রেসিডেন্ট ফিলিপ নাইউসি, নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ডিলমা ভানা রউসেফ, দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা ও ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাকিও লুলা ডি সিলভার সঙ্গে বৈঠক করবেন। এদিন সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর দক্ষিণ আফ্রিকায় বসবাসরত বাংলাদেশিদের সঙ্গে সাক্ষাতের কথা রয়েছে। শুক্রবার বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নেবেন শেখ হাসিনা। আগামী শনিবার দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে রওনা হয়ে রোববার সকালে ঢাকায় পৌঁছানোর কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর।