ফুকুশিমার পানি সাগরে, জাপানের সামুদ্রিক খাবার নিষিদ্ধ চীনে
ফুকুশিমা পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে তেজস্ক্রিয় পানি বৃহস্পতিবার প্রশান্ত মহাসাগরে ছাড়তে শুরু করেছে জাপান। তবে এই উদ্যোগে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে চীন। এ ঘটনায় সব ধরনের জাপানি সামুদ্রিক খাবার নিষিদ্ধ করেছে চীন। খবর- রয়টার্স
একইসঙ্গে এই উদ্যোগের সমালোচনা করেছে সাগরের উপকূলবর্তী দেশগুলোও। হংকং ও ম্যাকাউ ফুকুশিমা ও টোকিওসহ জাপানের কিছু এলাকার সামুদ্রিক মাছ ও সিফুডের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে যাচ্ছে। এদিকে নাগরিক সংগঠনগুলোও জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ায় বিক্ষোভ শুরু করেছে।ফুকুশিমার তেজস্ক্রিয় পানি প্রশান্ত মহাসাগরে ছেড়ে দেওয়ায় বিক্ষোভ তেজস্ক্রিয় দূষণের ঝুঁকির বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে জাপানের খাদ্য ও কৃষিপণ্য চীনে আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে চীন। চীনের কাস্টমস বিভাগের এক কর্মকর্তা বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছেন। এ বিষয়ে চীন বলছে, জাপানের এই উদ্যোগ একটি মেরুকরণের পদক্ষেপ যা চীনকে জাপান থেকে সব সামুদ্রিক খাবার আমদানিতে অবিলম্বে নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করতে বাধ্য করছে।
যদিও আন্তর্জাতিক অ্যাটমিক এনার্জি এজেন্সিও (আইএইএ) গত মাসে এই পানি মহাসাগরে ছাড়ার অনুমোদন দেয়। তবে চীনের পারমাণবিক নিরাপত্তা প্রশাসনের মুখপাত্র বৃহস্পতিবার বলেন, ‘জাপান নিজেদের স্বার্থ নিয়ে পড়ে আছে। জোর করে সমুদ্রে তেজস্ক্রিয় পানি ছেড়ে দিয়ে মানবজাতির কল্যাণ উপেক্ষা করছে।’
এর উত্তরে জাপান বলছে, সাগরে ছেড়ে দেওয়া এই পানি নিরাপদ। এতে পরিবেশের ওপর তেমন প্রভাব পড়বে না। চীনের দাবি অবৈজ্ঞানিক।
২০১১ সালে ৯ মাত্রার ভূমিকম্পের পর সুনামিতে ক্ষতিগ্রস্ত ফুকুশিমার দাইচি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৩টি চুল্লি প্লাবিত হয়। রাশিয়ার চেরনোবিলের ঘটনার পর ফুকুশিমার পরমাণু বিপর্যয়কে সবচেয়ে ভয়াবহ হিসেবে দেখা হয়। এখানকার তেজস্ক্রিয় পানি নিষ্কাশনের মাধ্যমে দাইচি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রকে পুরোপুরি অকার্যকর করার দীর্ঘ প্রক্রিয়া শুরু হলো। পরে এখান থেকে গলিত জ্বালানিও অপসারণ করা হবে।
টোকিও ইলেকট্রিক পাওয়ার (টেপকো) জানিয়েছে, স্থানীয় সময় দুপুর ১টা ৩ মিনিট থেকে সমুদ্রে তেজস্ক্রিয় পানি ছাড়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়। প্রথমে অল্প পরিমাণে পানি ছাড়া হচ্ছে। প্রথম ১৭ দিনে ৭ হাজার ৮০০ ঘনমিটার আয়তনের পানি সাগরে ছাড়া হবে। ১৩ লাখ মেট্রিক টন তেজস্ক্রিয় পানি সাগরে ফেলতে সময় লাগতে পারে ৩০ বছর।