হল ছাড়ার নোটিশ হাইকোর্টে স্থগিত বিবাহিত ছাত্রীদের
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) বিবাহিত ও অন্তঃসত্ত্বা ছাত্রীরা হলে থাকতে পারবে না বলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের জারি করা বিজ্ঞপ্তি স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। হাইকোর্টের বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন মঙ্গলবার। এর আগে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে বিবাহিত ও অন্তঃসত্ত্বা ছাত্রীদের আসন বরাদ্দ না দেয়ার প্রশাসনের নির্দেশনা প্রত্যাহার চেয়ে লিগ্যাল নোটিশ পাঠায় সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মো. সোলায়মান (তুষার)। নোটিশে তিনি উল্লেখ করেন, সম্প্রতি গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের মাধ্যমে জানতে পারি, নোটিশ দেয়া হয়েছে বিবাহিত ও অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার কারণে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে ছাত্রীরা আবাসিক সিট পাবে না।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে ‘আবাসিকতা লাভ ও বসবাসের শর্তাবলি এবং আচরণ ও শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিধিমালা ২০২১’ এর ১৭ নম্বর ধারা অনুযায়ী বিবাহিত ও অন্তঃসত্ত্বা ছাত্রীরা আবাসিক সিট পাবে না। এই বিধানের ফলে কার্যত বিবাহিত ও অন্তঃসত্ত্বা ছাত্রীরা হলের আবাসিক সুবিধা গ্রহণ করে উচ্চশিক্ষা অর্জনের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবে। বিষয়টি নিয়ে বর্তমানে ছাত্রীদের মধ্যে মারাত্মক অসন্তোষ এবং ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। দেশের একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন বৈষম্যমূলক বিধান থাকার বিষয়টি প্রিন্ট এবং ইলেকট্রনিক গণমাধ্যমে গুরুত্বের সঙ্গে সংবাদ প্রকাশিত হচ্ছে। বাংলাদেশের সংবিধানের ২৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ‘সব নাগরিক আইনের দৃষ্টিতে সমান এবং ২৮ (১), (২) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী কেবল ধর্ম, গোষ্ঠী, বর্ণ, নারী-পুরুষভেদ বা জন্মস্থানের কারণে কোনো নাগরিকের প্রতি রাষ্ট্র বৈষম্য প্রদর্শন করবে না। রাষ্ট্র ও গণজীবনের সর্বস্তরে নারী-পুরুষের সমান অধিকার লাভ করবেন।’ বিবাহিত ও অন্তঃসত্ত্বা ছাত্রীদের জন্য এমন নিয়ম নারীদের উচ্চশিক্ষা অর্জনের পথে অন্তরায় এবং বাংলাদেশের সংবিধানের ২৭ ও ২৮ অনুচ্ছেদের সঙ্গে সম্পূর্ণ সাংঘর্ষিক।