আজ জিল্লুর রহমানের মৃতুবার্ষিকী
এইদেশ এইসময়, ঢাকা : আজ ভাষা সৈনিক, বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমানের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী। ২০১৩ সালের এই দিনে সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের যে কজন সহকর্মী স্বাধিকার আন্দোলন, ভাষা সংগ্রাম, মহান মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনে অগ্রভাগ থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন তাদের মধ্যে জিল্লুর রহমান ছিলেন অন্যতম। দীর্ঘ ৬২ বছরের বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনে হয়েছিলেন দেশের ১৯তম রাষ্ট্রপতি।
তিনি ১৯২৯ সালের ৯ মার্চ কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরব উপজেলায় এক মুসলিম পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে অনার্সসহ এমএ এবং এলএলবি ডিগ্রিধারী জিল্লুর রহমান বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, বাষট্টির সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলন, ছেষট্টির ৬ দফা আন্দোলন, ঊনসত্তরের গণ অভ্যুত্থান এবং একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধসহ প্রতিটি গণ আন্দোলনে অসামান্য ভূমিকা রেখেছেন।
তিনি স্বাধীন বাংলাদেশে ১৯৭২ সালে গণপরিষদ সদস্য হিসেবে সংবিধান প্রণয়নে অংশ নেন। একই বছর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং জিল্লুর রহমান সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৭৫ সালে বাকশালের প্রথম সম্পাদক ছিলেন তিনি। ওই বছর বঙ্গবন্ধুর হত্যাকা-ের পর তিনি চার বছর কারাবন্দী ছিলেন। আওয়ামী লীগ পুনর্গঠনের পর ১৯৮৪ সালে তিনি আবারও দলের সাধারণ সম্পাদক হন। ১৯৯২ ও ১৯৯৭ সালের কাউন্সিলেও পরপর দুই বার দলের সাধারণ সম্পাদক এবং ২০০২ সালের কাউন্সিলে প্রেসিডিয়াম সদস্য নির্বাচিত হন তিনি।
তিনি ১৯৭৩, ১৯৮৬, ১৯৯৬, ২০০১ ও ২০০৮ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ সালে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী ছিলেন তিনি। পাশাপাশি সংসদ উপ-নেতা হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।
জিল্লুর রহমানের সহধর্মিণী বিশিষ্ট নারী নেত্রী ও আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক বেগম আইভী রহমান ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউর আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলায় আহত হয়ে তিন দিন পর মৃত্যুবরণ করেন। পারিবারিক জীবনে জিল্লুর রহমান এক ছেলে এবং দুই মেয়ের পিতা।
মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে সকাল ৯টায় বনানী কবরস্থানে জিল্লুর রহমানের পরিবার, বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে কবর জিয়ারত ও শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে।
এছাড়া সকাল ১০টায় রাজধানীর শাহবাগস্থ পাবলিক লাইব্রেরিতে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট আয়োজিত এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। বাদ আছর গুলশানের পারিবারিক বাসভবনে মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। এতে প্রধানমন্ত্রীসহ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে। এছাড়া জিল্লুর রহমানের গ্রামের বাড়ি ভৈরবের ৭টি ইউনিয়নে মিলাদ ও শোকসভা অনুষ্ঠিত হবে।