ইমরান খানের মনোনয়নপত্র বাতিল
পাকিস্তানের জাতীয় নির্বাচনে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। এতে পাঞ্জাব প্রদেশের লাহোর ও মিয়ানওয়ালি শহরের আসন দুটি থেকে নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না তিনি। গতকাল শনিবার প্রদেশের আঞ্চলিক নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা এ তথ্য জানিয়েছেন।
আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন সামনে রেখে পাকিস্তান তেহরিক–ই–ইনসাফ (পিটিআই) প্রধান ইমরান লাহোরের এনএ–১২২ ও মিয়ানওয়ালির এনএ–৮৯ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। তবে ইমরানের মনোনয়নপত্র বাতিল হলেও লাহোর এনএ–১৩০ আসনে পাকিস্তান মুসলিম লিগ–নওয়াজ (পিএমএল–এন) প্রধান নওয়াজ শরিফের মনোনয়নপত্র গ্রহণ করেছে নির্বাচন কমিশন। খবর জিও নিউজ ও আল জাজিরার
ইমরানের মনোনয়নপত্র বাতিল নিয়ে এনএ–১২২ আসনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মুহাম্মদ ইকবালের ভাষ্য, আসনটিতে ইমরানের মনোনয়নপত্র নিয়ে তিনটি আপত্তি তুলেছিলেন পিএমএল–এন নেতা মিয়াঁ নাসের। সেগুলো হলো- যিনি ইমরানের পক্ষে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন, তিনি এই আসনের ভোটার নন; অসততার অভিযোগে সাজা খাটছেন ইমরান এবং সাজা হওয়ায় পাঁচ বছরের জন্য নির্বাচনে অযোগ্য ইমরান, আর আদিয়ালা কারাগারে বন্দী ইমরানের মনোনয়নপত্রে সত্যায়ন করেননি কারাগারের প্রধান। অভিযোগগুলোর ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
গত বছর পাকিস্তান সরকার থেকে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকেই ব্যাপক প্রতিকূলতার মুখে রয়েছেন ইমরান ও তার দল পিটিআই। তিনিসহ দলের অনেক নেতা এখন কারাগারে। আর শুধু ইমরানই নন, পিটিআইয়ের অনেক নেতারও মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। এ তালিকায় রয়েছেন পিটিআইয়ের ভাইস চেয়ারম্যান শাহ মাহমুদ কুরেশি ও সাবেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হাম্মাদ আজহার।
এক্সে (সাবেক টুইটার) এক পোস্টে দলটি অভিযোগ করে বলেছে, ‘ইমরান খানসহ পিটিআইয়ের ৯০ শতাংশ গুরুত্বপূর্ণ নেতার মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে।’
তবে মনোনয়নপত্র বাতিল হলেও ইমরানসহ অন্য নেতাদের নির্বাচনে অংশ নেওয়ার আশা এখনই ফুরাচ্ছে না। নির্বাচন কমিশনের এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আগামী ৩ জানুয়ারি পর্যন্ত তারা আদালতে আবেদন করতে পারবেন। ওই আবেদনের ভিত্তিতে ১০ জানুয়ারির মধ্যে সিদ্ধান্ত নেবেন আদালত। সিদ্ধান্তে কোনো পরিবর্তন এলে পরদিন ১১ জানুয়ারি মনোনীত ব্যক্তিদের নতুন তালিকা প্রকাশ করবে নির্বাচন কমিশন।
২০২২ সালের এপ্রিলে পার্লামেন্টে অনাস্থা ভোটে হেরে প্রধানমন্ত্রির পদ হারানোর পর ইমরান খানের বিরুদ্ধে শতাধিক মামলা দায়ের করা হয়। ইমরানের দাবি, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যমূলকভাবে এসব মামলা করা হয়েছে, যাতে নির্বাচনে তিনি প্রার্থী হতে না পারেন। তোশাখানা (রাষ্ট্রীয় উপহার) দুর্নীতি মামলায় ইমরানের তিন বছরের কারাদণ্ড হয়। এ মামলায় বর্তমানে সাজা স্থগিত রয়েছে। তবে কূটনৈতিক তারবার্তা ফাঁসের মামলায় ইমরান কারাগারে আছেন।