ভোট দিলে আঙ্গুল কাটার হুমকি
নিজস্ব প্রতিবেদক : সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলা নির্বাচনে ভোট দিলে ভোটারদের পিটিয়ে মারাসহ আঙ্গুল কেটে ফেলার হুমকি দিয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী সমর্থিত চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী ফিরোজ আহমেদ স্বপন। তার এমন হুমকিতে এলাকায় আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে।
গতকাল বুধবার স্থানীয় এক নির্বাচনী সভায় তিনি এ হুমকি দেন বলে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ করেছেন প্রতিপক্ষ প্রার্থী শাহিদুল ইসলাম মুকুল ।
বিপক্ষ প্রার্থীর পোলিং এজেন্টদের উদ্দেশ্যে এ আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, ২৩ তারিখের নির্বাচনে মুকুলের পক্ষে পোলিং এজেন্ট হয়ে কেউ দায়িত্ব পালন করতে গেলে আমার কর্মীরা যদি তাদের মেরে ফেলে আমি দায়ী থাকব না।
তিনি আরো বলেন, আমি স্পষ্ট করে বলছি, এখানে (কলরোয়া উপজেলা)যদি কেউ নিরাপদে বসবাস করতে চাও, তাহলে আমাদের একটি উপদেশ থাকবে। তা হলো ‘আমাদের কর্মীদের কাছে আত্মসমর্পণ করে বলো, ২৩ তারিখের নির্বাচনী মিছিলে আমরা শরিক হতে চাই।’ আমরা আওয়ামী সমর্থিত প্রার্থী আনারস, মাইক এবং কলসে ভোট দিতে চাই। এই প্রতিশ্রুতি দিতে হবে আমার পোলিং এজেন্টদের সামনে। এরপর প্রকাশ্যে সীল মারতে হবে। তাহলে আমরা ভেবে দেখব।’
ভোটারদের হুমকি দিয়ে এ প্রার্থী বলেন, ২৩ তারিখে ভোট দেয়ার নামে যদি কারো খায়েশ হয় ভোট কেন্দ্রে যাওয়ার। আর সে ভোট কেন্দ্রে যাওয়ার পর আমাদের কর্মীরা তাদের দেখে আবার মাথা গরম হয়ে যায়, মাথা ফাটিয়ে দেয় এবং মারতে মারতে মেরে ফেলে তাহলে আমরা কিছু করতে পারবো না। আমরা দায়ী থাকবো না।
আমরা শান্তি চাই দাবি করে তিনি বলেন, ‘তাই এ জনপদ ছেড়ে দিয়ে বাইরে থাকেন এবং ২৩ তারিখের পর আমাদের কর্মীদের কাছে আত্মসমর্পণ করেন এবং মিলেমিশে থাকতে চান। আমর শান্তি চাই, আমরা মিলেমিশে থাকতে চাই।’
বিএনপি-জামায়াতকে পুলিশি গ্রেফতারের হুমকি দিয়ে তিনি বলেন, ‘আজ থেকে শুরু হবে বিএনপি-জামায়াতের কর্মীদের পুলিশি গ্রেফতারের অভিযান। এর হাত থেকে বাঁচতে চাইলে এলাকা ছেড়ে চলে যান। ২৩ তারিখের পর আসতে হবে। তাহলে এ জনপদ রক্তাক্ত হবে না। এর বিকল্প কিছু করতে চাইলে তা হবে বুমেরাং।’
নিজ দলের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে কেন্দ্র দখলের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের কর্মীদের বলছি, আপনারা ২৩ তারিখ ভোর ৬টার মধ্যে ভোট কেন্দ্রের চারিদিকে বুহ্য রচনা করবেন। যাতে আপনাদের ভেদ করে কেউ ভোট কেন্দ্রে পৌঁছাতে না পারে।
নিজ দলের নেতা-কর্মীদের অঙ্গীকার নিতে তিনি বলেন, ‘ভোটের দিন আপনারা বিরোধী পক্ষের লোকজনদের বাড়ি বাড়ি খুঁজবেন এবং পুলিশে সোপর্দ করবেন। এই কাজটি করতে আপনারা ঐক্যবদ্ধ হলে হাত তুলে জানান। তাহলে বিজয় আমাদের সুনিশ্চিত।’
এ বক্তব্যের ভিডিওসহ সিডি, পত্রিকার কপি এবং রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে করা অভিযোগের কপিসহ নির্বাচন কমিশনে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন প্রতিপক্ষ প্রার্থী শাহিদুল ইসলাম মুকুল। এ সময় তিনি নির্বাচনী প্রচারণার প্রথম থেকে ধারাবাহিক প্রচারণায় বাধা, হামলা, বিভিন্ন হুমকি ও প্রচার গাড়ী ভাঙচুরের অভিযোগ করেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে নিজের বক্তব্য অস্বীকার করে ফিরোজ আহমেদ স্বপন বলেন, রাত পোহালে ভোট আমি এটা নিয়ে বেশি বাড়াবাড়ি করতে চাই না। এতে আমার ভোটের ফিল্ড নষ্ট হবে।
বিষয়টি জানতে সহকারী রিটার্নি কর্মকর্তা এবং কলরোয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনুপ কুমার তালুকদারকে বারবার মুঠোফোনে কল দিয়ে পাওয়া যায়নি। এই বক্তব্য ফেসবুক ও ইউটিউবে প্রচারিত হচ্ছে এবং বিষয়টি ব্যাপক আলোড়িত হচ্ছে।