হাঁটুর ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে ১১টি খাবার
আমাদের শরীরের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হাঁটু। দাঁড়ানো, হাঁটা, বসা, দৌড়ানো, সবকিছুতেই হাঁটুর ভূমিকা অপরিহার্য। কিন্তু হাঁটুতে ব্যথা হলে আমাদের দৈনন্দিন জীবনযাপন ব্যাহত হয়। অনেকে ডাক্তারের শরণাপন্ন হয়ে ওষুধ সেবন করে থাকেন। কিন্তু আপনি কি জানেন? কিছু খাবার হাঁটুর ব্যথা কমাতে সাহায্য করতে পারে।
আজকে জানব এই প্রতিবেদনে আমরা হাঁটুর ব্যথা কমাতে সাহায্যকারী ১১টি অসাধারণ খাবার সম্পর্কে:
১. আপেল ভিনেগার: প্রতিদিন ২ টেবিল চামচ আপেল ভিনেগার খেলে আপনার হাঁটুর ব্যথা কমে যাবে। এছাড়া সালাদের সঙ্গে এ ভিনেগার মিশিয়ে খাওয়া যায়। যেকোনো সুপার শপে পাওয়া যাবে এটি।
২. হলুদ: বাংলাদেশি খাবারে হলুদের ব্যবহার অত্যাবশ্যক। হলুদ ছাড়া খাবারে যেন কোনো স্বাদই খুঁজে পায় না বাংলাদেশিরা। এর গুনাগুন অনেক। হজমবৃদ্ধি ছাড়াও এটি ব্যথা কমাতে ভালো ভূমিকা রাখে। পর্যাপ্ত পরিমাণ হলুদ খেলে হাঁটুর ব্যথা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যাবে।
৩. আদা: হ্লুদের মতো আদাও এমন একটি ভেষজ, যা আমরা বাংলাদেশিরা রান্নার সময় ব্যবহার করি। আদার বহু গুণাবলী রয়ছে। এদেশের মানুষ ঠাণ্ডা ও কাশিতে আদার ব্যবহার করে। হাঁটুর ব্যথা কমাতেও আদা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। আদার খোসা ছাড়িয়ে আপনি আপনার হাঁটুতে ম্যাসেজ করতে পারেন। আদার তেল দিয়েও একই কাজ করা যেতে পারে।
৪. গাজর: চী চিকিৎসাসাস্ত্রে গাজরের কদর অনেক বেশি। এতে বিটা ক্যারোটিন ও ভিটামিন-এ এর উপস্থিতি থাকায় গাজর খুব ভালো ব্যথানাশকের ভূমিকা পালন করে। দিনে অন্তত দুটি গাজর খাবেন। এতে করে আপনার দেহে ব্যথা কমানোর ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।
গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, ব্যথানাশক ওষুধের সঙ্গে আদা মেশালে ওষুধের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
৫. সরিষার তেল: আমাদের দেশে সরিষার তেলের ব্যবহার সর্বজনীন। খাবার থেকে শুরু করে দেহে মালিশ, সবকিছুতেই এর ব্যবহার আছে। আঘাতপ্রাপ্ত স্থানে হালকা গরম করে নেওয়া সরিষার তেল মালিশ করলে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়। হাঁটুর ব্যথাতেও একই রকম মালিশ ব্যথা কমিয়ে দেবে।
সরিষার তেলের ঝাঁঝালো স্বাদ মালিশ করা স্থানে রক্ত প্রবাহ বাড়িয়ে দেয়। যার কারণে ব্যথা কমে যায়।
৬. তিল: বেকারির রুটির ওপর ছোট ছোট দানাদার যে বস্তুগুলো থাকে সেগুলোই তিল। বাংলাদেশ তিলের বহুজাতিক ব্যবহার রয়েছে। অনেকে তিল থেকে তৈরি তেলও ব্যবহার করে থাকেন। পর্যাপ্ত পরিমাণ তিল খেলে হাঁটুতে ব্যথার প্রদাহ কমে যায়। এছাড়া এর তেল আপনি হাঁটুতে মালিশ করতে পারেন।
৭. লাল মরিচ: লাল মরিচে উচ্চমাত্রায় ভিটামিন সি থাকে। ভিটামিন সি কোষ গঠনে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। এই ভিটামিন হাঁটুর জয়েন্টে কোষ বৃদ্ধি করে এবং মাংসপেশির সঙ্গে হাড়ের মেলবন্ধন ঘটায়। যার ফলে হাঁটুর জয়েন্টের মাংসপেশী সঠিক অবস্থানে থাকে।
৮. আখরোট: আখরোটে থাকা ফ্যাটি এসিড ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ব্যথা কমাতে আদর্শ। গবেষণা বলছে, দৈনিক আখরোট খেলে দেহের ওপর ভেজাল খাদ্যের প্রভাব কমে যায়। যার ফলে দেহের অতিরিক্ত ওজন কমে যায়। আর ওজন কমে গেলে হাঁটুর ওপরও চাপ কম পড়ে।
৯. এভোকাডো: এই ফলে উপস্থিত তৈলাক্ত এসিড ব্যথার প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। তাই আপনার হাঁটুর যন্ত্রণা থাকলে দৈনিক ২টি এভোকাডো খান।
১০. আনারস: আনারসেও পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিন সি আছে। সেইসঙ্গে আছে ব্রোমেলাইন যা ব্যথার প্রদাহ খুব দ্রুততার সঙ্গে কমিয়ে আনে। তাই আপনার যদি হাঁটুতে ব্যথা থাকে তাহলে নিয়ম করে প্রতিদিন আনারস খেতে পারেন।
১১. চেরি: হাঁটুর ব্যাথা নিরসনে চেরি ভালো কাজ করে। আস্ত চেরিও খেতে পারেন, আবার জুস বানিয়েও খেতে পারেন। এতে থাকা এন্থোসায়ানিন্স অনেক ব্যথানাশক ওষুধেই ব্যবহৃত হয়। হাঁটুর ব্যথায় অনেক সময় হাঁটুর জয়েন্ট জমাট বেধে যায়, চেরিতে উপস্থিত এন্থোসায়ানিন্স সে জমাট বাধা অবস্থা থেকে হাঁটুকে রেহাই দেয় এবং ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।