‘রিমেমবারিং আওয়ার হিরোজ’ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নতুন কর্মসূচি
৯ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। আগামীকাল বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) ‘রিমেমবারিং আওয়ার হিরোজ’ কর্মসূচি পালন করবে তারা।
বুধবার (৩১ জুলাই) সন্ধ্যায় সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ কর্মসূচির কথা জানান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সহসমন্বয়ক রিফাত রশিদ।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আমাদের প্রিয় বাংলাদেশ আজ সন্ত্রাসের কালো ছায়ায় আচ্ছন্ন। শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সরকার এই দেশের সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর রাষ্ট্রযন্ত্র, পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, সেনাবহিনী ও তাদের দলের সন্ত্রাসীদের ব্যবহার করে বর্বর গণহত্যা চালিয়েছে। সরকার ও তার মদদপুষ্ট ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও যৌথবাহিনীর মধ্যযুগীয় বর্বরতায় শহিদ হয়েছে শিশুসহ শত শত সাধারণ নাগরিক। চলছে রাতের আঁধারে বাড়ি বাড়ি গিয়ে হানাদার বাহিনীর কায়দায় গণগ্রেফতার ও গ্রেফতার বাণিজ্য। সাধারণ শিক্ষার্থী ও নাগরিকদের রাস্তায় ধরে মোবাইল চেক, হয়রানির ও নির্বিচার গ্রেপ্তারের মতো মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা প্রতিদিনের চিত্র।
‘এছাড়াও আগামীর বাংলাদেশ গড়ার কারিগর জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত শিক্ষকমণ্ডলীর উপর ক্যাম্পাসের ভেতরে হামলা করেছে পুলিশের সন্ত্রাসীরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের শ্রদ্ধেয় শিক্ষিকা শেহরীন আমিন মোনামী ও নুসরাত জাহান চৌধুরীর গায়েও হাত তুলেছে পুলিশের কিছু কর্মকর্তা। খুলনায়, সিলেট, বরিশালসহ দেশের বিভিন্ন ক্যাম্পাসে, মহানগর ও শহরে আন্দোলনরত সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর হামলা হয়েছে, গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আমরা এসকল ন্যাক্কারজনক ঘটনার জন্য তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। একটি স্বাধীন দেশে এমন নজিরবিহীন মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা জাতির জন্য অত্যন্ত লজ্জাজনক।’
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, এমন ভয়ানক অন্ধকার পরিস্থিতিতে সারাদেশে ছাত্র-জনতার উপর গণহত্যা, গণপ্রেপ্তার, হামলা-মামলা, গুম-খুন ও শিক্ষকদের উপর ন্যাক্কারজনক হামলার প্রতিবাদে ও জাতিসংঘ কর্তৃক তদন্তপূর্বক বিচারের দাবিতে এবং ছাত্র সমাজের ৯ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আগামীকাল বৃহস্পতিবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ‘রিমেমবারিং আওয়ার হিরোজ’ (Remembering Our Heroes) কর্মসূচি ঘোষণা করছে।
কর্মসূচিতে পালণে করণীয়: ১. নির্যাতনের ভয়ংকর দিন-রাতগুলোর স্মৃতিচারণ; ২. শহীদ ও আহতদের নিয়ে পরিবার এবং সহপাঠীদের স্মৃতিচারণ; ৩. চিত্রাংকন/গ্রাফিতি, দেওয়াল লিখন, ফেস্টুন তৈরি, ডিজিটাল পোট্রের্ট তৈরি প্রভৃতি; ৪. ক্যাম্পাস ও এলাকাভিত্তিক শিক্ষক-ছাত্র-জনতা জমায়েত হয়ে গণহত্যা, গণপ্রেপ্তার, হামলা-মামলা, গুম-খুন ও শিক্ষকদের উপর ন্যাক্কারজনক হামলার প্রতিবাদ জানানো এবং সাংস্কৃতিক আয়োজন (মৌন মিছিল/মশাল মিছিল/পথনাটক/মঞ্চনাটক/প্রতিবাদী গানের আসর/মাইম) ইত্যাদি কর্মসূচি আয়োজন করা।
শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবক, বুদ্ধিজীবী, পেশাজীবী, শ্রমজীবী, ব্যবসায়ীসহ সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের প্রতি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নতুন কর্মসূচি পালনে সর্বাত্মক অংশ্রহণের জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ জানানো হয়েছে।