কেন খুন হলেন এমপি আনার?
সম্প্রতি দেশে-বিদেশে আলোচিত ঘটনা ঝিনাইদহ চার আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার কলকাতা চিকিৎসা করাতে গিয়ে নিশংসভাবে খুন হওয়ার খবর। গণমাধ্যমে আসা এমপি আনারের লোমহর্ষক খুনের যে বর্ণনা পাওয়া যায়, তা রীতিমত গা শিউরে ওঠে। খুনের প্রথম দিকে এমপি আনারের কলকাতায় যাওয়ার বিষয়টিকে চিকিৎসার উদ্দেশ্যে গেছেন বলে প্রচার হলেও আদতে তা ক্রমান্বয়ে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। এমপি আনার স্বর্ণ চোরাকারবারি আন্তর্জাতিক প্রধানদের অন্যতম। এমপি আনার মূলত কলকাতা যাওয়ার প্রধান উদ্দেশ্যই ছিল ৫’শ কোটি টাকার স্বর্ণ অবৈধভাবে কেনাবেচার আলোচনা করতে। সেখানে স্বর্ণের অবৈধ ব্যবসার আলোচনার করার পূর্ব থেকে দিন তারিখ করা ছিল। এতে সিন্ডিকেটের প্রধান আক্তারুজ্জামান শাহিন, সৈয়দ আমানুল্লাহ উল্লাহ আমান ওরফে শিমুল ভূঁইয়া, তানভীর ভূঁইয়া ও শিলাস্তি রহমান ওরফে সেলে নিস্কি পূর্ব থেকেই প্রস্তুত ছিলেন। এদের মধ্যে খুনের মাস্টারমাইন্ড পরিকল্পনাকারী আখতারুজ্জামান শাহিন ক’টি দেশ হয়ে মার্কিন মুলুকে পাড়ি জমায়। এই আখতারুজ্জামান শাহিনের ভাই মোঃ শহিদুজ্জামান ঝিনাইদহ কোটচাঁদপুর পৌরসভার মেয়র শাহীন ও শহিদুজ্জামানের সাথে গত কয়েক বছর ধরে আনারের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক কঠিন আকার ধারণ করে। পরে এই বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক থেকে তারা যৌথভাবে ব্যবসা পরিচালনা শুরু করে।
আনোয়ারুল আজিম আনারের ক্ষমতার প্রসার
আনোয়ারুল আজিম আপাদমস্তক একজন নিকারী পরিবারের সদস্য এবং তিনি নিজেও শৈশব কৈশোরের সময় তার পরিবারের সাথে মাছ বিক্রি করে জীবন জীবিকা নির্বাহ করতেন বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়। ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে মুসলিম মৎস্যজীবীদের নিকারি বলা হয়। তবে আনার বেড়ে উঠার প্রথম ধাপেই খেলাধুলার মাধ্যমে কালীগঞ্জে পরিচিতি পায়, পরবর্তীতে বিভিন্ন অপরাধ মূলক কর্মকান্ডে জড়িয়ে যাওয়ার দরুণ আনার নিজেই তার নির্বাচনী হলফনামায় ২১টি মামলার তথ্য দিয়েছিলেন, যার মধ্যে হত্যা ও চোরাচালানের মামলাও ছিল।
জাতীয় পার্টির মাধ্যমে রাজনীতি শুরু করলেও বিএনপির নেতা সেজে আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশ করে এই আনোয়ারুল আজিম সংসদ সদস্য হতে সক্ষম হয়। তারপরে পরপর তিনটি নির্বাচনের সরকারি দল আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে এমপি নির্বাচিত হন। এ সময় রাজনীতি সংগঠনসহ ওই অঞ্চলের প্রভাবশালী নেতা হিসেবে আবির্ভূত হন। দলের বাহিরে ভেতরে যারা ছিলেন তারা এমপি আনারের রোশনালে পড়ে হামলা মামলা শিকার হয়েছেন বলেও গণমাধ্যমে খবর আসে।
মুসলিম মৎস্যজীবী নিকারী আনার ১০ ভাইবোনের মধ্যে চতুর্থ। প্রথমে আনার পৌরসভা নির্বাচনে কমিশনার (বর্তমানে কাউন্সিলর) পদে দাঁড়িয়ে নির্বাচিত হন। তারপর থেকেই তার অবস্থান শক্ত হতে শুরু করে বলে ঝিনাইদহের মানুষেরা মনে করেন। বেশ কিছু হত্যা, স্বর্ণ, কাপড় চোরাচালানির ঘটনাসহ তার বিরুদ্ধে একেরপর এক মামলা হতে থাকে। ২০০২ সালে বিএনপি ক্ষমতায় এলে আত্মগোপনে চলে যায় এবং ওই অবস্থাতেই সে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়। সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ইন্টারপোলের মাধ্যমে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়। যা পরে ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় এলে তার পরোয়া তুলে নেয়া হয়। ২০১৪ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এমপি নির্বাচিত হযন আনার।
কলকাতায় নিশংস খুন হয় আনার
ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার কলকাতার নিউটাউনের সঞ্জীভা গার্ডেন্সের একটি ফ্ল্যাটে যাওয়ার পর তিনি আর জীবিত ফিরতে পারেননি। বের হয়েছেন খণ্ড খণ্ড লাশ হয়ে ট্রলি আর পলিথিন ব্যাগে। পুরো কিলিং মিশনে সবার সামনে ছিলেন শিমূল ভূঁইয়া ওরফে সৈয়দ আমানুল্লাহ। হত্যার পর তার হাত-পাসহ শরীরের প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ টুকরো টুকরো করে আলাদা করে হত্যাকারীরা। ৫৮ সেকেন্ডের একটি সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখা যায়, ভারতীয় সময় ১৪ মে বিকেল ৫টা ১১ মিনিটের দিকে দুজন ব্যক্তি একটি পেস্ট কালারের ট্রলি ব্যাগ ও তিন থেকে চারটি পলিথিন ব্যাগে আনারের মরদেহ গুম করার জন্য লিফটে উঠছেন। ঢাকার গোয়েন্দা পুলিশের কর্মকর্তারা বলছেন, সঞ্জীবা গার্ডেনসের ফ্ল্যাট থেকে যে দুজন বের হয়েছেন তারা হলেন- শিমুল ভূঁইয়া ওরফে সৈয়দ আমানুল্লাহ ও সিয়াম ওরফে কসাই জিহাদ। সিসি ক্যামেরায় যা দেখা গেছে তা স্বীকারও করেছেন ডিবির হাতে গ্রেপ্তার আমানুল্লাহ। অন্যদিকে ভারতীয় পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন কসাই জিহাদ। তদন্ত সংশ্লিষ্ট ডিবির একজন কর্মকর্তারা জানান, এমপি আনারকে হত্যার বিস্তারিত বর্ণনা শুনে তারা নিজেরাই আঁতকে উঠেন। তার পুলিশি ক্যারিয়ারে অনেক খুনের ঘটনার বর্ণনা শুনেছেন, কিন্তু এত নৃশংস বর্ণনা কখনোই শোনেননি। জিজ্ঞাসাবাদে শিমুল ভূঁইয়া ওরফে আমানুল্লাহ জানিয়েছেন, কীভাবে এমপি আনারকে বালিশচাপা দিয়ে হত্যার পর হাত-পাসহ শরীরের প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ আলাদা করা হয়। যেন কোনোভাবেই আনারের চেহারা দেখে কেউ পরিচয় শনাক্ত করতে না পারে, সেজন্যই খুনিরা এ পরিকল্পনা করে। এরপর ট্রলি ও ব্যাগে করে খণ্ড খণ্ড লাশ বের করে নেয়া হয়। আমানুল্লাহ আমান ওরফে শিমুল ভূঁইয়া নামে সরাসরি হত্যাকাণ্ডে অংশ নেয়া আসামি ডিবির জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন, আনোয়ারুল আজীম আনারকে সঞ্জীবা গার্ডেনের ফ্ল্যাটে হত্যা করা হয়। হত্যার পর শরীরের অঙ্গ- প্রত্যঙ্গ কেটে আলাদা করা হয়। এরপর একটি ট্রলি ও তিন-চারটি পলিথিন ব্যাগে করে ১৪ মে বিকেল ৫টা ১১ মিনিটের দিকে সে সব টুকরো বের করা হয়। এরপর এগুলো ফেলে দেয়া হয় কলকাতার হাতিশালা বর্জ্য খালে। আমানের স্বীকারোক্তির পর ভারতীয় পুলিশ ২৩ মে রাতে হাতিশালা বর্জ্য খালে তল্লাশি চালায়। তবে অন্ধকার হওয়ায় সেদিন মরদেহ খুঁজে পায়নি পুলিশ। পরেরদিন ২৪ মে আবারও খণ্ড লাশের সন্ধান শুরু করে ভারতীয় পুলিশ। ডিবির দাবি, যেহেতু হত্যাকাণ্ডে সরাসরি বেশ কয়েকজন আসামি গ্রেপ্তার রয়েছেন এবং তথ্য দিয়েছেন সেহেতু লাশের সন্ধান মিলবে। এমপি আনারকে হত্যার জন্য ভাড়া করা হয় খুলনা অঞ্চলের কুখ্যাত সন্ত্রাসী শিমুল ভূঁইয়াকে (আমান)। তিনি চরমপন্থি সংগঠন পূর্ব বাংলার কমিউনিস্ট পার্টির অন্যতম শীর্ষ নেতা। এ ঘটনায় ঢাকায় ধরা পড়ার পর পুলিশের কাছে শিমুল ভূঁইয়া নিজেকে সৈয়দ আমানুল্লাহ আমান নামে পরিচয় দেন এবং তিনি এমপি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত নয় বলে দাবি করেন। তবে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের মুখে এক পর্যায়ে আমান স্বীকার করেন আমানুল্লাহ তিনিই ওরফে শিমুল ভূঁইয়া। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তিনি আমানুল্লাহ নামেই পাসপোর্ট বানিয়েছেন,সেই পাসপোর্টে তিনি কলকাতায় গিয়েছিলেন।
* কসাই জিহাদের রোমহর্ষক বর্ণনা
* লাশের সন্ধানে সিআইডির তল্লাশি
* লাশ ফেলা হয় হাতিশালা বর্জ্য খালে
* এখনো লাশ পায়নি ভারতীয় পুলিশ
* শুরুতে বিভ্রান্তিকর তথ্য দেন আমান
* সোনার অবৈধ ব্যবসার আলোচনা করতেই কলকাতায় যান
২০১৯ সালের ১০ অক্টোবর ঢাকা থেকে পাসপোর্টটি করা হয়েছিল। পাসপোর্ট করতে একই নামে তিনি জাতীয় পরিচয়পত্রও (এনআইডি) তৈরি করেন। কীভাবে তিনি শিমূল ভূঁইয়া থেকে আমানুল্লাহ হলেন এবং ভুয়া পাসপোর্ট ও এনআইডি তৈরি করলেন, এখন সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন গোয়েন্দারা। ভারতের বিভিন্ন গণমাধ্যমে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার গ্রেফতারের পর জিহাদ জিজ্ঞাসাবাদের মুখে এমপি আনার এরপরলোপাট করতেই হত্যার রোমহর্ষক বর্ণনা দেন। কলকাতা সিআইডি সূত্রে জানা গেছে, সিআইডির জিজ্ঞাসাবাদে জিহাদ বলেছেন, প্রথমে আনারকে শ্বাসরোধে খুন করা হয়। তারপর দেহ টুকরো টুকরো করা হয়। হাড় এবং মাংস আলাদা করা হয়। চামড়া ছাড়িয়ে তাতে হলুদ মাখান অভিযুক্তরা, যাতে বাইরে কেউ জিজ্ঞেস করলে বলা যায়, রান্না করার জন্য মাংস নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। বৃহস্পতিবার গ্রেপ্তারের পর জিহাদকে একটি জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। আনারকে খুনের পর সেখানেই দেহাংশ ফেলা হয়েছে বলে জিজ্ঞাসাবাদে উঠে এসেছে। কিন্তু রাতের অন্ধকারে সেখান থেকে কোনো দেহাংশ মেলেনি। ২৪ বছর বয়সী জিহাদ হাওলাদার বাংলাদেশের খুলনার বাসিন্দা। অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশ করেছিলেন তিনি। আনারকে খুনের প্রায় দুই মাস আগে জিহাদকে মুম্বাই থেকে কলকাতায় নিয়ে আসেন হত্যাকারীরা। গোয়েন্দা সংশ্লিষ্টরা জানান, হত্যাকাণ্ডে জড়িত ফয়সাল ও মোস্তাফিজুরের দুটি পাসপোর্টই চলতি বছরের ৮ এপ্রিল ঢাকার বিভাগীয় পাসপোর্ট কার্যালয় থেকে ইস্যু করা হয়। পাসপোর্টে ফয়সালের স্থায়ী ঠিকানা হিসেবে খুলনার ফুলতলা থানার অলকা গ্রাম এবং মোস্তাফিজুরের স্থায়ী ঠিকানা খুলনার ফুলতলার যুগনীপাশা গ্রাম উল্লেখ করা হয়েছে। আমান ওরফে শিমুল ভূঁইয়া মোস্তাফিজুর ও ফয়সালকে পাসপোর্ট বানিয়ে দেন। তবে দুজনেরই বর্তমান ঠিকানা হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে ঢাকার ক-৩২/১২ নদ্দা। গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলছেন, এমপি আনারকে কলকাতায় হত্যার পরিকল্পনা সাজিয়েই মোস্তাফিজ ও ফয়সালের পাসপোর্ট করানো হয়। ভারতীয় ভিসা সংগ্রহ করে ১১ মে কলকাতায় প্রবেশ করেন তারা। হত্যাকাণ্ড শেষে ১৭ মে মোস্তাফিজ ও ১৮ মে ফয়সাল দেশে ফিরে আসেন। এমপি আনোয়ারুল আজীমকে হত্যার মূল পরিকল্পনায় তারই বাল্যবন্ধু এবং আমেরিকা প্রবাসী
আক্তারুজ্জামান শাহীন। শাহীনের সঙ্গে আজীমের অবৈধ সোনা ব্যবসা রয়েছে। দুবাই কেন্দ্রিক স্বর্ণের ব্যবসায় শাহীনের বিনিয়োগ রয়েছে। দুবাই থেকে আসা সোনা আজীম ভারতে বিভিন্নভাবে সরবরাহ করতেন।
আনারের কলকাতার ব্যবসায়ী বন্ধু গোপাল বিশ্বাস সেই সোনার ক্রেতা ছিলেন। গোপাল বিশ্বাস স্বর্ণ চোরাকারবারির সাথে জড়িত বলে সূত্রটি জানিয়েছে, কলকাতায় চিকিৎসার নাম করে আনার সেখানে গেলেও, আসলে তিনি সেখানে কোনো চিকিৎসা করাননি। এই কথা বলে তিনি কলকাতা যান। শাহীনের সঙ্গে তার সোনার ব্যবসা নিয়েই দ্বন্দ্ব হয়। এই দ্বন্দ্বকে কেন্দ্র করেই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়। এদিকে হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী আক্তারুজ্জামান শাহীন ঘটনার পর একাধিক দেশ হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়ে গেছেন। মরদেহের মতো তিনিও রয়েছেন ধরাছোঁয়ার বাইরে।
কে শিলাস্তি রহমান
এমপি আনোয়ারুল আজিম আনোয়ারের খুনের মাস্টারমাইন শাহিনের বান্ধবী হিসেবে নাম আসে শিলাস্তি রহমানের। তার আরেক নাম সেলে নিস্কি। টাঙ্গাইলের নাগরপুরে তার গ্রামের বাড়ি হলেও পুরান ঢাকায় তার বসবাস। পরিবারের সাথে থাকা শিলাস্তি রহমান ছোটবেলা থেকেই মডেল হতে চেয়েছিলেন। বৃত্তশালীদের ডেরায় গিয়ে নিজেও থাকতেন উত্তরার অভিজাত ফ্ল্যাটে। মার্কিন পাসপোর্টধারী শাহিনের খপ্পরে পড়ে শিলাস্তি রহমান অন্ধকার জগতে পা রাখেন। গণমাধ্যম থেকে জানা গেছে এই শিলাস্তি দিয়েই এমপি আনারকে কলকাতা নেয়ার ট্যাপ পাততে পারেন খুনের মাস্টারমাইন্ড শাহীন। হয়তো এই হানি ট্র্যাফে পা দিয়ে নিজের জীবন হারিয়েছেন এমপি আনার।
শাহীন দেশে এলে শিলাস্তি তার সাথে থাকতেন একই ফ্ল্যাটে, ঘুরে বেড়াতেন তার সাথে। ১৩ মে কলকাতায় আনার খুন হওয়ার পর ১৫ মে ঢাকায় চলে আসে প্রধান কিলার আমানউল্লাহ ওরফে শিমুল ভূঁইয়া। তার সাথে একই ফ্লাইটে আসে শিলাস্তি রহমান। বিমান বন্দর থেকে সোজা বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় শাহীনের অভিজাত ফ্ল্যাটে। সেখানে তারা রাতভর ফুর্তি করেন। এর আগে শিলাস্তি এর আগে ৩০ এপ্রিল শাহীনের সাথে গিয়েছিলেন কলকাতায়।