নিজামীর বিরুদ্ধে রায় যেকোন দিন
এইদেশ এইসময়, ঢাকা : মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় অভিযুক্ত জামায়াতে ইসলামীর আমির ও সাবেক শিল্পমন্ত্রী মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর বিরুদ্ধে রায় যেকোন দিন।
সোমবার রাষ্ট্রপক্ষের অসমাপ্ত যুক্তি উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে বিচারিক কার্যক্রম শেষ হওয়ায় মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখা হয়েছে।
আজ বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বে দুই সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১ মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ (সিএভি) রাখার নির্দেশ দেন।
এর আগে গতকাল রোববার ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম শুরু হলে আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম আইনি পয়েন্টে যুক্তি উপস্থাপন শুরু করেন। বেলা সোয়া তিনটায় তার যুক্তি উপস্থাপন শেষ হলে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি মোহাম্মদ আলী পাল্টা যুক্তি উপস্থাপন শুরু করেন। তবে গতকাল যুক্তি উপস্থাপন শেষ না হলে বাকি অংশ আজকে শেষ করা হয়।
এর আগে গত ১০ থেকে ১৩ মার্চ নিজামীর বিরুদ্ধে যুক্তিতর্ক (আর্গুমেন্ট) উপস্থাপন করেন রাষ্ট্রপক্ষ। তাদের যুক্তিতর্ক শেষে ১৪ মার্চ আসামিপক্ষ যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন। এরপর ৪দিন আসামিপক্ষে মিজানুল ইসলাম এবং রোববার আইনি পয়েন্টে যুক্তি উপস্থাপন করেন তাজুল ইসলাম।
এ নিয়ে জামায়াত নেতা মতিউর রহমান নিজামীর মামলায় দুইবার যুক্তি উপস্থাপন করা হলো।
এর আগেও বিচারপতি এটিএম ফজলে কবীরের নেতৃত্বাধীন ট্রাইব্যুনাল গত বছরের ১৩ নভেম্বর আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের শেষ দিনে মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ (সিএভি) রাখেন।
তবে পরবর্তীতে রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখা আদেশ পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে আবেদন করা হলে ট্রাইব্যুনাল নিজামীর পক্ষে নতুন করে যুক্তি উপস্থাপনের সুযোগ দেন।
এরপর ২০ নভেম্বর ফের উভয়পক্ষের আইনজীবীদের সমাপনী বক্তব্য শেষে রায়টি অপেক্ষমাণ রাখার আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
কিন্তু এরই মধ্যে গত ৩১ ডিসেম্বর ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি এটিএম ফজলে কবীরের চাকরির বয়সসীমা পূর্ণ হওয়ায় অবসরে চলে যাওয়ায় মামলার রায় আর ঘোষণা করা হয়নি। এরপর গত ২৩ ফেব্রুয়ারি ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয় বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমকে। তিনি দায়িত্ব গ্রহণের পর গত ২৬ ফেব্রুয়ারি এই মামলায় ১০ মার্চ সোমবার নতুন করে যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের তারিখ নির্ধারণ করেন।
যুক্তি উপস্থাপনে নিজামীর বিরুদ্ধে একাত্তর সালে উস্কানি দেওয়ার অভিযোগ আনে প্রসিকিউশন। এ সময় তারা আদালতের কাছে সর্বোচ্চ শাস্তি কামনা করেন।
অন্যদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী তাজুল ইসলাম দাবি করে বলেন, প্রসিসকিউশন নিজামীর বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ এনেছে তা ভিত্তিহীন ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত। প্রতিহিংসাবশত তার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ আনা হয়েছে। আশা করি, এসব অভিযোগ থেকে তিনি (নিজামী) খালাস পাবেন।
উল্লেখ্য, গত বছরের ২৮ মে নিজামীর বিরুদ্ধে বুদ্ধিজীবী হত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের ১৬টি অভিযোগে অভিযোগ গঠন করা হয়। এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের ২৬ জন সাক্ষী ট্রাইব্যুনালে সাক্ষী দিয়েছেন। নিজামীর পক্ষে সাক্ষ্য প্রদানের জন্য ৪ সাফাই সাক্ষী নির্ধারণ করেন ট্রাইব্যুনাল। যদিও প্রথমে ১০ হাজার ১ শ’ ১১ জন এবং পরবর্তীতে ২৫ জন সাফাই সাক্ষীর একটি তালিকা ট্রাইব্যুনালে জমা দিয়েছিলেন আসামিপক্ষ।