টিএসসিতে গণত্রাণ কর্মসূচি: ৩য় দিনে উঠল যত টাকা
টিএসসিতে গণত্রাণ কর্মসূচি: ৩য় দিনে উঠল যত টাকা
বন্যার্তদের সাহায্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘গণত্রাণ সংগ্রহ কর্মসূচি’ চলছে। এতে নানা শ্রেণি-পেশার মানুষকে এগিয়ে আসতে দেখা গেছে। তৃতীয় দিনে শুধু বুথ থেকেই সর্বমোট ১ কোটি ৮৬ লাখ ৪৮ হাজার টাকা সংগ্রহ করা হয়েছে।
শনিবার (২৪ আগস্ট) রাত ৯টার দিকে টিএসসি ঘুরে দেখা যায়, টিএসসি এলাকা ত্রাণসামগ্রীতে পূর্ণ হয়ে গেছে। টিএসসি ক্যাফেটেরিয়ায় বিভিন্ন শুকনো খাবারসহ চাল-ডাল স্তূপ করে রাখা হয়েছে। পাশের অভ্যন্তরীণ ক্রীড়া কক্ষের একপাশে প্রস্তুতকৃত প্যাকেট রাখা হয়েছে। আরেকপাশে চলছে প্যাকেজিং।
এ ছাড়াও টিএসসির অতিথিকক্ষের পাশ থেকে শুরু করে ক্যাফিটেরিয়ার শেষ পর্যন্ত ফ্লোরে প্যাকেট করা ত্রাণসামগ্রীর বিশাল স্তূপ রাখা হয়েছে। ত্রাণের কারণে এসব স্থান পূর্ণ হয়ে গেছে।
অভ্যন্তরীণ ক্রীড়া কক্ষের বাইরের দেয়ালেও স্তূপ করা হয়েছে প্যাকেট। এ ছাড়া টিএসসি অডিটোরিয়ামের চারপাশের দেয়ালে ঘিরে প্যাকেট রাখা হয়েছে। খাবারের পাকেট দিয়ে এসব স্থান পূর্ণ হয়েছে। টিএসসির মিলনায়তনের প্রবেশমুখে বোতলজাত পানি রাখা হয়েছে।
টিএসসি এলাকায় অন্তত ৫০০ সেচ্ছাসেবী বিরামহীন প্যাকেজিংয়ের কাজ করছেন। কেউ কেউ সারাদিনের কাজে ক্লান্ত হয়ে মাদুর বিছিয়ে বিশ্রাম নিচ্ছেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে গত বৃহস্পতিবার থেকে শিক্ষার্থীরা গণত্রাণ সংগ্রহ কর্মসূচি পালন করছেন। তৃতীয়দিনেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিপুল সংখ্যক ত্রাণদাতার উপস্থিতি দেখা গেছে।
টিএসসির প্রবেশপথে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একটি বুথ রয়েছে। সেখানে রাজধানীর বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ নগদ অর্থ জমা দিচ্ছেন। এছাড়া নগদ ও বিকাশের মাধ্যমে অনলাইনেও টাকা উত্তোলন করা হচ্ছে। শুক্রবার রাত পর্যন্ত অনলাইনে ও অফলাইনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বুথে এক কোটি ৭২ লাখ ২৬ হাজার ৩৬৯ টাকা জমা হয়েছে।
এদিকে টাকা কালেকশন কমিটিতে থাকা রকিব মাসুদ ফেসবুক পোস্টে বলেন, চেকসহ ১ কোটি ৮৬ লাখ ৪৮ হাজার টিএসসি বুথ থেকে কালেকশন সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত।
গত দুইদিনে ত্রাণসামগ্রী নিয়ে অন্তত ২০টি ট্রাক টিএসসি ছেড়ে বন্যাদুর্গত এলাকার উদ্দেশে ছেড়ে গেছে। বৃহস্পতিবার ইতোমধ্যে ৫টি ট্রাক ত্রাণ নিয়ে বন্যাকবলিত এলাকায় গেছে।
ত্রাণ দিতে আসা তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থী সোয়াইব আলম বলেন, এখানে এসে বুঝতে পেরেছি মানুষ কতটা স্বতঃস্ফূর্তভাবে বন্যা কবলিতদের সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসছে। সবার তুলনায় আমার অবদান খুব ছোট হলেও আমি এবং আমার এলাকার কিছু বন্ধু মিলে অল্প কিছু অর্থ দিয়ে তাদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছি। পাশাপাশি সবাইকে আহবান জানাই সবাই যেন বন্যাকবলিত মানুষদের সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সহ-সমম্বয়ক মহিউদ্দিন জানান, টিএসসিতে আর ত্রাণ সংকুলান হচ্ছে না। ফলে আমরা জিমনেশিয়ামে ত্রাণ সংগ্রহ করছি। টিএসসিতে কেবল নগদ অর্থ সংগ্রহ করা হচ্ছে।