রাজশাহীতে প্রশিক্ষণরত ৫৯ এসআইকে শোকজ
শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমি রাজশাহীর সারদায় প্রশিক্ষণরত অর্ধ শতাধিক ক্যাডেট উপ-পরিদর্শক (এসআই)কে কারণ দর্শানোর (শোকজ) নোটিশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। শৃঙ্খলার সঙ্গে না বসার কারণে ২১শে অক্টোবর ও ২৪শে অক্টোবর একাডেমিতে প্রশিক্ষণরত এসব ক্যাডেট এসআইকে এই শোকজ করা হয়। এসআইদের সবাই ৪০তম ক্যাডেট-২০২৩ ব্যাচে প্রশিক্ষণরত। সূত্রমতে, প্রশিক্ষণ মাঠে নাশতা নিয়ে হইচই করার কারণে সম্প্রতি ওই ব্যাচের ৭০৪ প্রশিক্ষণার্থীর মধ্যে ২৫২ জনকে শোকজ করা হয়েছিল। জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় চাকরি থেকে তাদের অব্যাহতি দেয়া হয়। এবার প্রশিক্ষণ হলে শৃঙ্খলার সঙ্গে না বসার কারণে অন্তত ৫৯ এসআইকে শোকজ করা হয়েছে বলে পুলিশ একাডেমির নির্ভরযোগ্য সূত্র নিশ্চিত করেছে। একাডেমি সূত্র জানায়, গত ২১শে অক্টোবর ওই ব্যাচের ১০ এসআইকে দ্বিতীয় দফায় শোকজ করা হয়। এরপর বৃহস্পতিবার তৃতীয় দফায় আরও ৪৯ জনকে শোকজ করা হয়। তিনদিনের মধ্যে তাদের জবাব দিতে বলা হয়েছে। পুলিশ একাডেমির অধ্যক্ষের পক্ষে পুলিশ সুপার (এডমিন অ্যান্ড লজিস্টিকস) মো. তারেক বিন রশিদ কারণ দর্শানোর নোটিশে স্বাক্ষর করেছেন।
বৃহস্পতিবার প্রশিক্ষণরত এক এসআইকে দেয়া কারণ দর্শানোর নোটিশে বলা হয়েছে, গত ২১শে আগস্ট সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত চেমনি মেমোরিয়াল হলে আইনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ধারার ওপর প্রশিক্ষণরত ক্যাডেট এসআইদের ক্লাস ছিল। প্রশিক্ষণ চলাকালে পরিদর্শক পদমর্যাদার চার প্রশিক্ষক দেখতে পান, সিটে বসার সময় ওই এসআই শৃঙ্খলার সঙ্গে না বসে এলোমেলোভাবে বসে হইচই করে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করেছেন। একজন প্রশিক্ষক বার বার শৃঙ্খলার সঙ্গে বসতে বললেও তিনি নির্দেশ অমান্য ও কর্ণপাত না করে হইচই করতে থাকেন।
নোটিশে আরও বলা হয়, পাঠদান চলাকালে এই এসআইয়ের ক্লাসে কোনো মনোযোগ ছিল না এবং পাশাপাশি বসে কথা বলছিলেন। এজন্য একজন প্রশিক্ষক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে একাডেমির অধ্যক্ষের কাছে লিখিত প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। তাই বিধি অনুযায়ী কেন তাকে চলমান মৌলিক প্রশিক্ষণ থেকে অব্যাহতি দেয়া হবে না, তা কৈফিয়ত তলবনামা প্রাপ্তির পরবর্তী তিনদিনের মধ্যে ওই এসআইকে দাখিলের জন্য নির্দেশ দেয়া হয়। এর আগে গত ২১শে অক্টোবর ১০ এসআইকে দেয়া কারণ দর্শানোর নোটিশের একটি কপি পাওয়া গেছে। তাতে দেখা গেছে, যেসব অভিযোগে বৃহস্পতিবার এসআইদের নোটিশ দেয়া হয়েছে, একই অভিযোগ পূর্বের চিঠিতেও।
চিঠিতে বলা হয়, গত ১৬ই অক্টোবর ওই একই সময়ে জিমনেসিয়ামে ‘এক্সপেরিয়েন্স শেয়ারিং ইন অর্ডার টু ফেইস পলিটিক্যাল এইমড’ বিষয়ে ক্লাস ছিল। সেদিন বিশেষ অতিথি বক্তা হিসেবে ছিলেন পুলিশ একাডেমির সাবেক অধ্যক্ষ মো. নজিবুর রহমান। সেদিন এই এসআই শৃঙ্খলার সঙ্গে না বসে এলোমেলোভাবে বসেন এবং হইচই করেন। তাকেও তিনদিনের মধ্যে নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়। এ বিষয়ে জানতে বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমির অধ্যক্ষ (অতিরিক্ত আইজিপি) মো. মাসুদুর রহমান ভূঞার মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। ফলে এ বিষয়ে পুলিশ একাডেমি কর্তৃপক্ষের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।