হজ ব্যবস্থাপনা নিয়ে বিশৃঙ্খলার শঙ্কা করছেন এজেন্সি মালিকরা
আগামী বছর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ পালনে দুটি প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন এজেন্সি মালিকরা। গতকাল বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) বাতিল হওয়া কমিটির নেতারা ‘সাধারণ হজ এজেন্সির মালিকবৃন্দ’র ব্যানারে এ প্যাকেজ ঘোষণা করেন।
হাবের সদ্যঃসাবেক কমিটির সভাপতি ফারুক আহমেদ সরদার ঘোষিত এই প্যাকেজে খাবার খরচ যুক্ত করে ব্যয় ধরা হয়েছে সাধারণ প্যাকেজে পাঁচ লাখ ২৩ হাজার এবং বিশেষ প্যাকেজে ছয় লাখ ৯৯ হাজার টাকা। এ সময় সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন সাবেক মহাসচিব ফরিদ আহমেদ মজুমদার।
এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন ইসলামী ঐক্যজোট নেতা ও হাবের সাবেক সহসভাপতি মাওলানা ফজলুর রহমান, জামায়াতের মহানগর দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য মেজবাহ উদ্দিন সাইদ, কে এম মোবারক উল্লাহ শিমুল প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে সরকারি প্যাকেজে শুভংকরের ফাঁকি রয়েছে মন্তব্য করে হাব নেতারা বলেন, প্যাকেজ খরচ কম দেখাতে সরকার হাজিদের ভোগান্তি বাড়িয়ে দেবে। এমনকি হাবের নির্বাচিত কমিটি বাতিল করে প্রশাসক নিয়োগ দেওয়ায় আগামী বছরের হজ ব্যবস্থাপনায় বিশৃঙ্খলার আশঙ্কাও রয়েছে। আগামী বছর সরকারিভাবে হজে যাওয়ার দুটি প্যাকেজ গত ৩০ অক্টোবর ঘোষণা করেন ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন।
তখন তিনি জানিয়েছিলেন, সাশ্রয়ী সাধারণ প্যাকেজ-১ অনুযায়ী খরচ ধরা হয়েছে চার লাখ ৭৮ হাজার ২৪২ টাকা। অন্য প্যাকেজে (প্যাকেজ-২) খরচ ধরা হয়েছে পাঁচ লাখ ৭৫ হাজার ৬৮০ টাকা। এর বাইরে খাবার জন্য ৪০ হাজার ও কোরবানি বাবদ ২৫ হাজার (৭৫০ রিয়াল) টাকা আলাদাভাবে নিতে বলা হয়। উপদেষ্টা তখন বলেছিলেন, সাধারণ হজ প্যাকেজ গ্রহণ করে এজেন্সি একটি অতিরিক্ত বিশেষ প্যাকেজ ঘোষণা করতে পারবে।
এর ধারাবাহিকতায় নিজস্ব প্যাকেজ ঘোষণা করলেন সাবেক হাব নেতারা।
হাবের সাবেক মহাসচিব বলেন, ‘প্রকৃত অর্থে এ বছর হজের খরচ কমেনি। গত বছরের তুলনায় এবার হজের খরচ বেড়েছে। হজে খরচ মূলত কমানো সম্ভব দুটি জায়গায়—একটি বিমানভাড়া, আরেকটি সৌদি অংশের খরচ। দুটি জায়গার মধ্যে এবার বিমানভাড়া ২৭ হাজার টাকা কমেছে।
কিন্তু টাকার বিপরীতে রিয়ালের বিনিময় মূল্যের তারতম্যের কারণে এবার প্রত্যেক হজযাত্রীর খরচ বেড়েছে ৪০ হাজার টাকা। এভাবে ধরলে গত বছরের তুলনায় এবার হজের খরচ ১৩ হাজার টাকা বেড়েছে।’তিনি আরো বলেন, ‘এবার ধর্ম মন্ত্রণালয় সেবার মান কমিয়ে হজ প্যাকেজ মূল্য কম দেখানোর চেষ্টা করেছে। এটি হজযাত্রীদের বিভ্রান্ত করছে। এ ছাড়া এবারের প্যাকেজ খাওয়া খরচ ছাড়া ঘোষণা করা হয়েছে।’
হাজিদের ভোগান্তির আশঙ্কা প্রকাশ করে ফরিদ আহমেদ মজুমদার আরো বলেন, বাংলাদেশ থেকে যেসব হজযাত্রী হজে যান তাঁদের বয়স বেশি থাকে। এবার প্যাকেজ অনুযায়ী হারাম শরিফ থেকে তিন কিলোমিটার দূরে বাড়ি হওয়ায় তাঁদের ভোগান্তি হবে। মিসফালাহ ব্রিজের কাছে তাঁদের নামিয়ে দেওয়া হবে, তাঁদের এখান থেকে হারাম শরিফ গিয়ে নামাজ পড়ে বাসে উঠে আবার গন্তব্যে যেতে হবে। এটা অনেক কঠিন বিষয়।
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী বছরের ৫ জুন পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে। চলতি বছরের মতো আগামী বছরও (২০২৫ সাল) বাংলাদেশ থেকে এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজ করতে পারবেন। এর মধ্যে গাইডসহ ১০ হাজার ১৯৮ জন সরকারি ব্যবস্থাপনায় এবং বাকি এক লাখ ১৭ হাজার হজযাত্রী যাবেন বেসরকারি ব্যবস্থাপনায়।