বাংলাদেশে প্রথম ট্যুরিজম ভিত্তিক নিউজ পোর্টাল|Sunday, December 22, 2024
সাইটে আপনার অবস্থানঃ Home » জাতীয় » মনিটরিং নয়, বাজার নিয়ন্ত্রণে নতুন পথে হাটতে যাচ্ছে সরকার

মনিটরিং নয়, বাজার নিয়ন্ত্রণে নতুন পথে হাটতে যাচ্ছে সরকার 

আগামী মার্চে শুরু হচ্ছে রমজান। রমজানকে ঘিরে এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করছে। কারসাজি করে রমজাননির্ভর পণ্যে বাড়তি মুনাফা করতে তৎপর। সিন্ডিকেট করে ৪ মাস আগ থেকেই বাড়ানো হচ্ছে দাম।

এমন পরিস্থিতিতে এখন থেকেই এক প্রকার বিচলিত সরকার। ফলে বাজার নিয়ন্ত্রণে কঠোরতা কমিয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সমঝোতার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি দেওয়া হয়েছে অঢেল সুবিধা।সম্প্রতি এ নিয়ে সরকারের নীতিনির্ধারক পর্যায়ে এক বৈঠক হয়েছে।

সূত্র জানায়, এবারের সরকার অরাজনৈতিক সরকার। স্বল্প পরিসরে উপদেষ্টা দিয়ে দেশ পরিচালনা করা হচ্ছে। এতে সিন্ডিকেট আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।

ধারণা করা হচ্ছে, রোজায় পণ্যের দাম আরো বাড়বে। তাই পণ্যের দাম কমাতে সরকার কঠোর অবস্থানে না গিয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সমঝোতার দিকে হাঁটছে। বাজার তদারকিতে হুমকি-ধমকি ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দিয়ে বাজার মনিটরিংয়ে এক প্রকার পিছু হটার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।বড় কয়েক আমদানিকারকের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে বাজার নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই তিনটি কাজ করতে গিয়ে নীতিনির্ধারকরা দেখবেন-বাজারে পণ্যের দাম যৌক্তিক নাকি অযৌক্তিক পর্যায়ে আছে।

পাশাপাশি বাজারে হস্তক্ষেপ করা দরকার আছে কিনা, তা বিশ্লেষণ করে বের করবেন। এতেও যদি পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হয়, তাহলে কঠোর অবস্থানে গিয়ে বাজার নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করা হবে।এছাড়া পণ্যের দাম সহনীয় করতে কঠোরতায় না গিয়ে সরকার ব্যবসায়ীদের নানা ধরনের সুবিধা দিচ্ছে। পণ্য আমদানিতে এলসি মার্জিন উঠিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করছে। ব্যাংক থেকে যে কোনো পরিমাণ ঋণ নিয়ে ব্যবসায়ীরা পণ্য আমদানি করতে পারবেন। এজন্য পর্যাপ্ত ডলার সরবরাহও নিশ্চিত করা হচ্ছে। তাছাড়া ইতোমধ্যে কিছু পণ্যে আমদানিতে শুল্ক কমানো ও শূন্য শুল্ক সুবিধাও দেওয়া হয়েছে। এতে আমদানি খরচ কমলেও বাজারে দাম কমছে না। সরকারের দেওয়া এসব সুবিধা চলে যাচ্ছে ব্যবসায়ীদের পকেটে।

এদিকে বাজারে শৃঙ্খলা ফেরাতে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরসহ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের টাস্কফোর্স অভিযান পরিচালনা করছে। ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে পণ্য বিক্রি কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। ভর্তুকি মূল্যে বিক্রি করা হচ্ছে কৃষি পণ্য। এর মধ্যেও রোজা শুরুর ৪ মাস আগেই সিন্ডিকেটের কারসাজিতে রোজা নির্ধারিত পণ্যের দাম বাড়তে শুরু করেছে। খুচরা বাজারের বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি ছোলা মানভেদে বিক্রি হচ্ছে ১৩০-১৪০ টাকা। যা সাত দিন আগে বিক্রি হয়েছে ১২৫-১৩০ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে এই পণ্যটির দাম বেড়েছে ৫-১০ টাকা।

নয়াবাজারের মুদি বিক্রেতা মো. তুহিন বলেন, রোজা ঘিরে আমদানিকারক ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা রোজা শুরুর আগেই সিন্ডিকেট শুরু করেছে। পণ্যের চাহিদা এখন না থাকলেও রোজায় অতি মুনাফা করতে এখন থেকেই ছোলার দাম বাড়িয়ে দিয়েছে।

পাশাপাশি ৭ দিনের ব্যবধানে সব ধরনের ভোজ্যতেলের দাম বেড়েছে। বিক্রেতারা জানান, প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে ১৬৫ টাকা। যা ৭ দিন আগেও ১৬০ টাকা ছিল। বোতলজাত প্রতি লিটার সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৬৭-১৭০ টাকা। যা এক সপ্তাহ আগেও ১৬৫-১৭০ টাকা ছিল। এছাড়া দুই লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ৩৪০ টাকা। যা ৭ দিন আগেও ৩৩৫ টাকা ছিল। পাশাপাশি খোলা পাম তেল বিক্রি হচ্ছে ১৫৬ টাকা। যা এক সপ্তাহ আগেও ১৫০ টাকা ছিল। আর পাম অয়েল সুপার বিক্রি হচ্ছে লিটারপ্রতি ১৬০ টাকা। যা আগে ১৫৪ টাকা ছিল।

এছাড়া খুচরা পর্যায়ে প্রতি লিটার বোতলজাত রাইসব্রান তেল বিক্রি হচ্ছে ২০০-২১০ টাকা। যা এক সপ্তাহ আগে লিটারপ্রতি বিক্রি হয়েছে ১৮৫-১৯৫ টাকা। সঙ্গে পাঁচ লিটারের বোতলজাত রাইসব্রান তেল বিক্রি হচ্ছে ৯৮০-১০৫০ টাকা। যা ৭ দিন আগেও ৮৮০-৯২০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

অন্যদিকে পেঁয়াজ আমদানিতে শুল্ক ছাড়ের ঘোষণায় কেজিপ্রতি দেশি পেঁয়াজের দাম ১০ টাকা কমলেও ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা এক মাস আগেও ১২০ টাকা ছিল। আর দুই মাস আগে বিক্রি হয়েছে ৯০-১০০ টাকা। মসুর ডালের দাম নতুন করে বৃদ্ধি না হলেও ১৩০-১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর প্রতি কেজি চিনি ১৩০-১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

শ্যাম বাজারের আমদানিকারক ও পাইকারি আড়তদার শংকর চন্দ্র ঘোষ বলেন, সরকার এ মুহূর্তে পেঁয়াজ আমদানিতে শুল্ক ছাড়ের সিদ্ধান্ত সঠিক নিয়েছে। এ সময় দেশি পেঁয়াজ শেষ ও নতুন পেঁয়াজ বাজারে আসার মৌসুম। এ সময় সরবরাহ কম থাকায় দাম বেড়ে যায়। এখন আমদানিতে খরচ কমায় সরবরাহ বাড়তে থাকবে। ইতোমধ্যে কেজিপ্রতি ১০ টাকা কমেছে। রোজায় দাম ক্রেতা সহনীয় থাকবে।

শেয়ার করুন !!Share on FacebookTweet about this on TwitterShare on Google+Share on LinkedInShare on RedditBuffer this pageDigg thisShare on TumblrPin on PinterestShare on StumbleUponFlattr the authorEmail this to someone