সাগর-রুনি হত্যার ৩২০১ পৃষ্ঠার নথি পেয়েছে পিবিআই
সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যাকাণ্ডের তদন্তভার নিয়ে তিন হাজার ২০১ পৃষ্ঠার মামলার নথি (কেস ডকেট) গ্রহণ করেছে তদন্ত সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআইয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আজিজুল হক বলেন, ‘৪ নভেম্বর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা র্যাবের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার হোসেন ভূঞার কাছ থেকে মামলার ডকেট বুঝে পেয়েছি। তদন্ত কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী ছয় মাসের মধ্যে তদন্ত কার্যক্রম শেষ করা হবে।’
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত ৩০ সেপ্টেম্বর মামলাটির তদন্তে বিভিন্ন বাহিনীর অভিজ্ঞ তদন্ত কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন টাস্কফোর্স গঠনের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। ছয় মাসের মধ্যে তদন্ত শেষ করতে বলা হয়। একই সঙ্গে মামলার তদন্ত থেকে র্যাবকে সরিয়ে দেওয়ারও আদেশ দেওয়া হয়। রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি মুহাম্মদ মাহবুব উল ইসলামের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
এ বিষয়ে পরবর্তী আদেশের জন্য আগামী ৬ এপ্রিল দিন ধার্য করা হয়।
পরে ১৭ অক্টোবর হাইকোর্টের নির্দেশে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে টাস্কফোর্স গঠন করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। পিবিআইপ্রধানকে আহ্বায়ক করে চার সদস্যের উচ্চ পর্যায়ের টাস্কফোর্স কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিতে অ্যাডিশনাল ডিআইজি পদমর্যাদার নিচে নয় পুলিশের একজন প্রতিনিধি, সিআইডির একজন প্রতিনিধি ও র্যাবের একজন প্রতিনিধিকে রাখা হয়। এর আগে রাষ্ট্রপক্ষকে সহযোগিতা করার জন্য শিশির মনিরসহ ৯ আইনজীবী নিয়োগের অনুমতি চেয়ে আবেদন করেন মামলার বাদী নওশের আলম।
পরে গত ২ অক্টোবর ঢাকার অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুবুল হকের আদালত শুনানি শেষে এ আবেদন মঞ্জুর করেন। সর্বশেষ গত ১৫ অক্টোবর মামলাটির তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য ছিল। তবে ওই দিন তদন্ত প্রতিবেদন জমা না হওয়ায় আগামী ১৮ নভেম্বর পরবর্তী দিন ধার্য করেন। এতে মামলাটি তদন্তে ১১২ বার সময় নিয়েছে তদন্ত সংস্থা।
২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সরওয়ার ও এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন রুনিকে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় রুনির ভাই নওশের আলম রোমান শেরেবাংলানগর থানায় হত্যা মামলা করেন।
রুনির ভাই ও মামলার বাদী নওশের আলম রোমান বলেন, ‘পিবিআই থেকে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। ঢাকার বাইরে থাকায় যেতে পারিনি। দু-এক দিনের মধ্যে গিয়ে দেখা করব। এবার টাস্কফোর্স কমিটি গঠন করায় তদন্ত কার্যক্রম নিয়ে অনেক আশাবাদী।’
সাগর সরওয়ারের মা সালেহা মনির বলেন, ‘সংবাদপত্রে জেনেছি তদন্তে টাস্কফোর্স কমিটি গঠন হয়েছে। দেখতে দেখতে তো এক যুগ পার হলো, কিন্তু আশানুরূপ তো কিছুই হলো না। এর আগে যারা তদন্ত করেছে, তাদের প্রতি আস্থা ছিল। কিন্তু কার্যকর কোনো ফল পায়নি। নতুন টাস্কফোর্স কমিটি যদি পারে তাহলে তদন্ত করে হত্যার রহস্য উন্মোচন করুক।’