আদানির সঙ্গে বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি : উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি গঠনের নির্দেশ হাইকোর্টের
আজ মঙ্গলবার চুক্তির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করা রিট ও সম্পূরক আবেদনের ওপর প্রাথমিক শুনানির পর বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এই আদেশ দেন।
গত ৬ নভেম্বর রিট আবেদনকারী এম আব্দুল কাইয়ুম লিটন বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)-এর চেয়ারম্যান, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালযয়ের সচিবকে আইনি নোটিশ পাঠান। নোটিশে তিন দিনের মধ্যে চুক্তি সংশোধন প্রক্রিয়া শুরু করতে অনুরোধ করা হয়। তা না হলে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করার কথা উল্লেখ ছিল নোটিশে।
এই আইনজীবী বলেন, ‘দেশীয় বা আন্তর্জাতিক চুক্তির মানদণ্ড হচ্ছে, চুক্তির শর্ত সমতা ও ন্যায্যতার ভিত্তিতে হয়েছে কিনা। আদানি গ্রুপের সঙ্গে এই চুক্তিটা আমরা মনে করেছি একপেশে ছিল। যাতে কোনোভাবেই বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষা করা হয়নি। কেবলমাত্র আদানি গ্রুপের স্বার্থ রক্ষা করা হয়েছে চুক্তিতে।
বেশি দামে বিদ্যুৎ কেনার প্রভাব ব্যাখ্যা করে এই আইনজীবী বলেন, ‘বিদ্যুতের দাম বেড়ে গেলে উৎপাদন খরচ বেড়ে যায়। মূল্যস্ফীতি ঘটে। স্বাভাবিকভাবেই ভোক্তা পর্যায়ে দ্রব্যমূল্যের দাম বেড়ে যায়। গোটা জাতিকে এর ফল ভোগ করতে হয়।’
আদালত আগামী বছর ২৫ ফেব্রুয়ারি এ বিষয়ে পরবর্তী আদেশের দিন রেখেছেন বলে জানান এম আব্দুল কাইয়ুম লিটন।
জানা গেছে, ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকার দেশের স্বার্থ যথাযথভাবে রক্ষা করে বিভিন্ন চুক্তি করেছে কি না, সম্পাদিত চুক্তিতে স্বচ্ছতার অভাব আছে কি না, তা নিরূপণে এক বিশেষ আইনের অধীনে সরকার একটি প্যানেল গঠন করেছে। এসব চুক্তির একটি ২০১৭ সালে আদানির সঙ্গে করা ২৫ বছর মেয়াদি বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি। ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ঝাড়খন্ডে আদানির ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াটের বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে মূলত বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে। বাংলাদেশে বিদ্যুতের মোট চাহিদার প্রায় এক দশমাংশের জোগান আসছে প্রকল্পটি থেকে।
বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) ২০২৩-২৪ অর্থবছরের নিরীক্ষা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আদানির কাছ থেকে প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ কিনতে বাংরাদেশের খরচ পড়ছে ১২ টাকা (০.১০০৮ ডলার)। এটি ভারতের অন্যান্য বেসরকারি খাতের বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের খরচের চেয়ে ২৭ শতাংশ বেশি। আর ভারতের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের খরচের চেয়ে ৬৩ শতাংশের বেশি।