৯ মাস সাইকেল চালিয়ে বাংলাদেশে ফরাসি যুবক, পছন্দ হয়েছে খিচুড়ি-ফুচকা
দীর্ঘ ৯ মাস সাইকেল চালিয়ে ফ্রান্স থেকে বাংলাদেশে এসেছেন দেশটির এক নাগরিক। তাঁর নাম ম্যাক্সিন কাফুমান (৩৩)। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে তিনি সিরাজগঞ্জে এসে পৌঁছান।
সিরাজগঞ্জে প্রথম আলো বন্ধুসভার পক্ষ থেকে ফরাসি এই পর্যটককে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়। রাতে তিনি পৌর শহরের একটি আবাসিক হোটেলে ছিলেন। সেখান থেকে আজ শনিবার সকালে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন।
গতকাল রাতে ম্যাক্সিন কাফুমান প্রথম আলোকে বলেন, ৩ ডিসেম্বর চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ সীমান্ত দিয়ে তিনি ভারত হয়ে বাংলাদেশে ঢোকেন। এক সপ্তাহ ধরে তিনি বাংলাদেশে অবস্থান করছেন। এই দেশ তাঁর অনেক ভালো লেগেছে। এখানকার খাবার হিসেবে সবজি খিচুড়ি, ফুচকা ও মাছ পছন্দ হয়েছে তাঁর।
ফরাসি এই নাগরিক বলেন, গত ১৪ মার্চ ফ্রান্সের নিজ শহর থেকে সাইকেল চালিয়ে যাত্রা শুরু করেন তিনি। ৯ মাস সাইকেল চালিয়ে ২০টি দেশ অতিক্রম করে ১৯ হাজার ৩৫৯ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়েছেন। পেশায় তিনি ফ্রান্সের রাষ্ট্রীয় ডাক বিভাগের একজন কর্মচারী। সাইকেল চালিয়ে দেশভ্রমণের দীর্ঘদিনের ইচ্ছা পূরণ করতেই তাঁর এই যাত্রা।
আজ সকাল সাড়ে আটটার দিকে ম্যাক্সিন কাফুমান ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন। পরবর্তী সময়ে চীনে কিছুদিন অবস্থান করে সেখান থেকে সিঙ্গাপুরে গিয়ে এই ভ্রমণযাত্রার ইতি টানতে চান তিনি।
সিরাজগঞ্জের স্থানীয় কোনাবাড়ি শহীদুল বুলবুল ডিগ্রি কলেজের সমাজকর্ম বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আসলাম হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘গতকাল সন্ধ্যায় সিরাজগঞ্জ পৌর শহরের এস এস সড়কে একটি খাবার হোটেলের সামনে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে মুঠোফোনে গুগলের সাহায্যে রাত্রিযাপনের জন্য একটি কম খরচের আবাসিক হোটেল খুঁজছিলেন ফরাসি এই নাগরিক। বাইসাইকেল নিয়ে তাঁকে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে বিদেশি ভেবে আমি তাঁকে কোনো সমস্যা হয়েছে কি না এবং আমি কোনো সহযোগিতা করতে পারি কি না, সে বিষয়ে জানতে চাই। তিনি আমার কথা বুঝতে পেরে উত্তর দেন। তাঁর সঙ্গে একটি সম্পর্ক তৈরি হয়। পরে আমি তাঁকে নিয়ে রাতের খাবার শেষে স্বল্প খরচের একটি হোটেলে রাত্রিযাপনের ব্যবস্থা করি। খবরটি আমার বন্ধুদের মধ্যে জানাজানি হলে অনেকেই তাঁর সঙ্গে কথা বলতে আসেন। আমরা শহরের রাস্তার পাশে একটি চায়ের দোকানে চা খেতে খেতে তাঁর সঙ্গে গল্প করি। ফ্রান্সের যুবকের এই ভ্রমণের বিষয় আমার খুবই ভালো লেগেছে।’