উপজেলা নির্বাচনে অনিয়মের প্রতিবাদে ঢাবির ২৫০ শিক্ষকের বিবৃতি
এইদেশ এইসময়, ঢাকা : সদ্য শেষ হওয়া উপজেলা নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়ম দুর্নীতি ও ভারপ্রাপ্ত সিইসি’র অসৌজন্যমূলক বক্তব্যের প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২’শ ৫০ জন শিক্ষক বিবৃতি দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার বিকালে বিশ্ববদ্যিালয়ের সাদাদলের আহ্বায়ক ও কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সদরুল আমিন স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়।
বিবৃতিতে শিক্ষকরা বলেন, গত ৫ জানুয়ারি একটি ভোটারবিহীন ও প্রকাশ্যে ভোট কারচুপির কলঙ্কিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর দেশের গণতন্ত্রকামী জনগণ আশা করেছিল সব দলের অংশগ্রহণে উপজেলা নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ হবে।
কিন্তু নির্বাচনের নামে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা কেন্দ্র দখল করে ব্যাপক ভোট ডাকাতির প্রকাশ্য যে মহাউৎসব করলো তাতে আমরা রীতিমতো স্তম্ভিত।
শিক্ষকরা বলেন, আমরা নির্বাচনের নামে এ ধরণের নির্লজ্জ অনিয়ম, কারচুপির ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ এবং এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। একই সাথে আমরা মনে করি সদ্য অনুষ্ঠিত উপজেলা নির্বাচন বাংলাদেশের গণতন্ত্রের ইতিহাসে একটি কলঙ্কজনক অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত হবে।
তারা আরো বলেন, দেশের প্রতিটি নিবার্চন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন আয়োজন করা কমিশনের সাংবিধানিক দায়িত্ব। কিন্তু বর্তমান নির্বাচন কমিশন গত জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও উপজেলা নির্বাচনে তাদের এ সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে।
শুধু তাই নয়, বর্তমান ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাচন কমিশনার গত কয়েকদিন ধরে উপজেলা নির্বাচন প্রসঙ্গে যে ভাষায় কথা বলছেন তা কোনোভাবেই তাঁর সাংবিধানিক পদের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। বিশেষ করে গত রোববার সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি’র নির্বাচনে অংশগ্রহণ সম্পর্কে যে মন্তব্য করেছেন তা অত্যন্ত অসৌজন্যমূলক, কুরুচিপূর্ণ ও অগ্রহণযোগ্য।
আমরা তাঁর এ বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানাই। আমরা মনে করি প্রহসনের জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং সম্প্রতি অনুষ্ঠিত উপজেলা নির্বাচনে কেন্দ্র দখল করে ভোট জালিয়াতির যে নজিবরবিহীন দৃষ্টান্ত স্থাপিত হলো তা এদেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে ভুলুণ্ঠিত করেছে। যা যে কোনো বিবেচনায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনারও পরিপন্থী।
বর্তমান নির্বাচন কমিশন নির্বাচন অনুষ্ঠানে যে নির্লজ্জ ভূমিকা পালন করেছে তাতে দেশবাসীর কাছে তারা ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের অপকর্মের সহযোগী হিসেবে ইতোমধ্যে চিহ্নিত হয়েছে। গত দুটো নির্বাচনের ফলে নির্বাচন ব্যবস্থার প্রতি মানুষ আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে। যা গণতন্ত্রের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। এ কাজের দায় যেমন ক্ষমতাসীনদের নিতে হবে তেমনি নিতে হবে নির্বাচন কমিশনকেও।
বিবৃতিতে সাক্ষরকারী শিক্ষকরা হলেন, অধ্যাপক ড. সদরুল আমিন, অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজ, অধ্যাপক ড. আ ফ ম ইউসুফ হায়দার, অধ্যাপক সৈয়দ আবুল কালাম আজাদ, অধ্যাপক ড. মোঃ আমিনুর রহমান মজুমদার, অধ্যাপক ড. মোঃ সিরাজুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. তাজমেরী এস এ ইসলাম, অধ্যাপক ড. মোঃ আখতার হোসেন খান, অধ্যাপক ড. আবুল হাসনাত, অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ, অধ্যাপক ড. মোঃ আনোয়ারুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. লায়লা নূর ইসলাম, অধ্যাপক ড. জামাল উদ্দিন আহমেদ, ড. মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খান, অধ্যাপক ড. শামসুদ্দিন আহমদ, অধ্যাপক ড. দিল রওশন জিন্নাত আরা নাজনীন, অধ্যাপক হোসনে আরা বেগম, অধ্যাপক ড. শাহিদা রফিক, অধ্যাপক ড. আবদুর রশিদ, অধ্যাপক ড. ইয়ারুল কবির, অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান, অধ্যাপক ওবায়দুল ইসলাম, অধ্যাপক মো: লুৎফর রহমান, অধ্যাপক ড. আ কা ফিরোজ আহমদ, অধ্যাপক ড. আবদুল আজিজ, অধ্যাপক ড. সুকোমল বড়ুয়া, অধ্যাপক ড. ছিদ্দিকুর রহমান নিজামী, অধ্যাপক তাহমিনা আখতার টপি, অধ্যাপক ড. মোঃ আবদুস সাত্তার, অধ্যাপক ড. মুসলেহ উদ্দিন তারেক, অধ্যাপক ড. মোঃ খলিলুর রহমান, অধ্যাপক ড. দিলিপ বড়–য়া প্রমুখ।