বাংলাদেশে প্রথম ট্যুরিজম ভিত্তিক নিউজ পোর্টাল|Sunday, December 22, 2024
সাইটে আপনার অবস্থানঃ Home » জাতীয় » তিস্তার পানি নিয়ে ক্ষোভ বাড়ছে বাংলাদেশে

তিস্তার পানি নিয়ে ক্ষোভ বাড়ছে বাংলাদেশে 

images_31780

ডেস্ক রিপোর্ট : বাংলাদেশে তিস্তার পানি প্রবাহ সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে আসায় এ নিয়ে ক্ষোভ বাড়ছে উত্তরাঞ্চলের সাধারণ মানুষ এবং দেশের পানি বিশেষজ্ঞদের মধ্যে।

ডয়চে ভেলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, তিস্তার পানি প্রবাহ স্বাভাবিক পর্যায়ে ফিরিয়ে না আনলে উত্তরাঞ্চলের কৃষকরা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

তিস্তার পানি প্রবাহ স্বাভাবিক পর্যায়ে ফিরিয়ে আনতে উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা এবং ঢাকায় পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো এখন প্রতি সপ্তাহেই কোনো না কোনো কর্মসূচি পালন করছে। পালন করেছে লংমার্চ কর্মসূচিও।

পানি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্তমানে তিস্তার পানি প্রবাহ সর্বনিম্ন পর্যায়ে রয়েছে। গত বছর এই সময়ে বাংলাদেশে তিস্তার পানি প্রবাহ ছিল চার হাজার কিউসেকের কিছু বেশি। কিন্তু এবার তা ৪০০ কিউসেকে এসে ঠেকেছে।

বাংলাদেশের পানি বিশেষজ্ঞ ইঞ্জিনিয়ার ম ইমামুল হক ডয়চে ভেলেকে বলেন, ভারত একতরফাভাবে পানি প্রত্যাহার করায় এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে তিস্তার পানি প্রবাহ সর্বোচ্চ ১৪ হাজার কিউসেক হলেও ঐতিহাসিক প্রবাহ পাঁচ হাজার কিউসেক। তাই আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী বাংলাদেশ কমপক্ষে পাঁচ হাজার কিউসেক পানির দাবিদার। এজন্য কোনো চুক্তির প্রয়োজন নেই।’ তিনি সরকারকে এই পানির জন্য উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান।

তিনি আরো বলেন, তিস্তার পানির ওপর নির্ভর করেই তিস্তা ব্যারেজ ও সেচ প্রকল্প। আর এই প্রকল্পের অধীনে সাড়ে ছয় লাখ হেক্টর কৃষি জমিতে এখন আর সেচ দেওয়া যাচ্ছেনা। বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের জেলা লালমনিরহাট, রংপুর, কুড়িগ্রাম ও দিনাজপুরের কৃষি এবং মৎস্যজীবীদের জীবন ও পেশা এখন হুমকির মুখে। নদীতে পানি নেই। তাই ফসল নেই, মাছ নেই, জীবিকাও নেই। বেকার হয়ে পড়েছেন নৌ শ্রমিকরাও।

এদিকে, হাওর অঞ্চলবাসী-ঢাকার আহ্বায়ক শামসুদ্দোহা শোয়েব শুক্রবার বিকেলে রাজধানীতে এক প্রতিবাদ সমাবেশে বলেন, ‘ভারতের একতরফা পানি প্রত্যাহারের কারণে তিস্তা একটি মৃত নদী হতে চলেছে। কিন্তু বাংলাদেশ সরকার এ ব্যাপারে নীরব।’

অন্যদিকে, তিস্তা নদী রক্ষা সংগ্রাম কমিটির ফরিদুল ইসলাম ফরিদ ভারতের আন্তঃনদী সংযোগ প্রকল্প নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি ভারতের আন্তঃনদী সংযোগ প্রকল্প থেকে অভিন্ন নদী গঙ্গা ও ব্রহ্মপুত্র নদকে বাদ দেওয়ার দাবি জানান।

এদিকে, গত সপ্তাহে ‘তিস্তা বাঁচাও, উত্তর জনপথ বাঁচাও, বাংলাদেশ বাঁচাও’ এ স্লোগানে পানির দাবিতে তিস্তার চরে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন স্থানীয়রা।

গত শনিবার দেশের সবচেয়ে বড় সেচ প্রকল্প লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার দোয়ানী ডালিয়া তিস্তা ব্যারেজের সামনে ধূ ধূ বালুচরে এ কর্মসূচি পালিত হয়।

তিস্তা বাঁচাও সংগ্রাম কমিটি ও লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা প্রেসক্লাবের আয়োজনে কর্মসূচিতে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ অংশ নেয়। তারা তিস্তা ও বরাক নদী-সহ অভিন্ন সবগুলো নদীর ওপর ভারতের একতরফাভাবে ড্যাম ও ব্যারেজ নির্মাণের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলার কথা বলেন।

উল্লেখ্য, ২০১২ সালে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে তিস্তা পানি চুক্তির যে আশা জেগে উঠেছিল তাও আর অবশিষ্ট  নেই। আর তা আদৌ হবে কিনা তাও বলা যায়না।

শেয়ার করুন !!Share on FacebookTweet about this on TwitterShare on Google+Share on LinkedInShare on RedditBuffer this pageDigg thisShare on TumblrPin on PinterestShare on StumbleUponFlattr the authorEmail this to someone