দলের ক্ষতি করলে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না : প্রধানমন্ত্রী
প্রধান প্রতিবেদক : আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের দলটির সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘কেউ দলের ক্ষতি করলে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।’
শনিবার রাতে গণভবনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে শেখ হাসিনা দলের নেতাদের এমনই কড়া ভাষায় সতর্ক করেন।
বৈঠকে সম্প্রতি উপজেলা নির্বাচন নিয়ে এক সাংগঠনিক সম্পাদকের বরাত দিয়ে একটি ইংরেজি দৈনিকের ‘এক প্রেসিডিয়াম সদস্য ও এক যুগ্ম-সম্পাদক উপজেলা নির্বাচনে কারচুপি করিয়েছেন’ এমন সংবাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়।
তখন সাংগঠনিক সম্পাদকদের হুঁশিয়ার করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘যারা দলের বিরুদ্ধে কথা বলে, সাংবাদিকদের উল্টা-পাল্টা তথ্য দেয় তারা দলের ভালো চায় না। তাদের সঙ্গে দলের সম্পর্ক থাকবে না। কেউ দলের ক্ষতি করলে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘কে এই সংবাদ করিয়েছে, তা আমি জানি।’ এ সময় সাংগঠনিক সম্পাদকদের বেশ বিষণ্ণ দেখা যায় বলে বৈঠকে উপস্থিত একাধিক নেতা এ তথ্য জানান।
শেখ হাসিনা উপজেলা নির্বাচনে কোথায় কোথায় বিদ্রোহী প্রার্থী ছিল, কোথায় কোথায় দল সমর্থিত প্রার্থীরা হেরেছে এসবের কারণ এবং তৃণমূলের সাংগঠনিক অবস্থা নিয়ে আগামী বৈঠকেই প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ দেন সাংগঠনিক সম্পাদকদের।
কেন্দ্রীয় নেতা আবদুর রহমান দেশের বিভিন্নস্থানে উপজেলা নির্বাচনে দল সমর্থিত প্রার্থীর পরাজয়ের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, ‘শুধু বিদ্রোহী প্রার্থীই নয়, বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে নিয়োগকৃত ৩শ নির্বাচনী কর্মকর্তা এবং ওই সময়ে বিতর্কিতভাবে নিয়োগকৃত ১৪৫ জন বিসিএস কর্মকর্তার যোগসাজশ ও তাদের দলীয় এজেন্ডা বাস্তবায়নেই আমাদের অনেক জনপ্রিয় নেতাকে উপজেলা নির্বাচনে পরাজিত হতে হয়েছে।’
এ সময় দল সমর্থিত প্রার্থীদের পরাজয়ের কারণ দ্রুততম সময়ে খুঁজে বের করে রিপোর্ট আকারে দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় পেশ করার জন্য বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদকদের নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী।
বৈঠক সূত্র জানায়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, স্বাধীনতার ঘোষণা এবং জাতীয় সংগীতের অবমাননাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণে প্রয়োজনে নতুন আইন প্রণয়ণের পক্ষে মত দেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম।
তিনি বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান “জিয়াকে প্রথম রাষ্ট্রপতি” বলেছেন। এভাবে কেউ সংবিধান, দেশের অস্তিত্ব ও গণতন্ত্র নিয়ে কটাক্ষ করবে, আর আমরা নীরবে সহ্য করবো এটা হতে পারে না। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু, সংবিধান ও জাতীয় সংগীত নিয়ে কটাক্ষকারী জাতির শত্রুদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে প্রয়োজনে নতুন আইন করতে হবে।’
এছাড়া বৈশাখের প্রথম দিনে (১৪ এপ্রিল) বাহাদুর শাহ পার্ক থেকে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে দলীয় কার্যালয় পর্যন্ত র্যালি করার সিদ্ধান্ত হয়। ১৭ এপ্রিল মুজিবনগর দিবস পালন উপলক্ষ্যে মোহাম্মদ নাসিমকে প্রধান করে একটি কমিটি গঠন করা হয়। সেই সঙ্গে ১৭ মে শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে আনন্দ মিছিল এবং পহেলা মে শ্রমিক দিবসে গাজীপুর অথবা নারায়ণগঞ্জে সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে বৈঠকে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী, স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, সাবেক আইনমন্ত্রী আবদুল মতিন খসরু, আবদুর রহমানসহ বেশ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা বক্তব্য রাখেন। প্রথমে স্বাগত বক্তব্য দেন দলের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম।