কার্যাদেশ বাতিল নয়, পোশাকের দাম বাড়ান
এইদেশ এইসময়, ঢাকা : শেয়ারড বিল্ডিংয়ে থাকা কারখানাগুলো থেকে কাজ সরিয়ে নেওয়া বন্ধ করে পোশাকের দাম বাড়াতে বিদেশি ক্রেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তৈরিপোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ’র সভাপতি মো. আতিকুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘এখনও প্রায় ৩০ শতাংশ কারখানা শেয়ারড বিল্ডিংয়ে, যেখানে কর্মরত শ্রমিকের সংখ্যা ১৫ লাখ। শ্রমিকদের স্বার্থেই কার্যাদেশ বাতিল না করে পোশাকের দাম বৃদ্ধি করুন।’
শনিবার দুপুরে বিজিএমইএ মিলনায়তনে ‘রানা প্লাজা ধসের এক বছর পূর্তি’ উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে আতিকুল ইসলাম একথা বলেন।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার শেয়ারড বিল্ডিংয়ে থাকা ৫৭টি কারখানা থেকে গত ছয় মাসে ১১ কোটি ডলারের কার্যাদেশ বাতিল হয়েছে অভিযোগ করেন বিজিএমইএ সভাপতি।
একই সঙ্গে পোশাক কারখানা ও অন্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আছে এমন ভবনকে শেয়ারড বিল্ডিং বলা হয়। সব পোশাক কারখানা একক ভবনে স্থানান্তরের জন্য বিদেশি ক্রেতাদের চাপ রয়েছে।
আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘গত ৪ বছরে পোশাক শ্রমিকদের বেতন বেড়েছে ২১৯ শতাংশ। গ্যাস-বিদ্যুৎসহ অন্যান্য খরচ বেড়েছে ৩৫ শতাংশ। এই হিসেবে উৎপাদন খরচ বেড়েছে ১৮ শতাংশ। এছাড়া ইউরোপ ও আমেরিকার বাজারে পোশাকের দাম কমেছে পাঁচ শতাংশ।’ এই অবস্থায় শেয়ার্ড বিল্ডিংয়ের জন্য কার্যাদেশ বাতিল না করে পোশাকের দাম বাড়ানো আবশ্যক বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এ সময় ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে ক্রেতাদের উদ্দেশে বলেন, মুখেই শুধু সহানুভূতি প্রকাশ নয়, কার্যকরভাবে শ্রমিকদের দিকে সহযোগিতার হাত বাড়ান।’ রানা প্লাজার ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকদের জন্য গঠিত তহবিল সহায়তায় ক্রেতাদের প্রতি আহ্বান জানান
বিজিএমইএ সভাপতি জানান, পোশাক শিল্পে গত আট বছরে ৩৮টি ট্রেড ইউনিয়ন গঠিত হয়েছিলো। আর চলতি বছর আরও ১৫০ ইউনিয়ন হয়েছে। ক্রেতারা এ শিল্পের ভাল দিকগুলো দেখছেন না বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
শ্রম সচিব মিকাইল শিপার বলেন, ‘রানা প্লাজা ধসের পরে শ্রম আইন সংশোধন, মজুরি বৃদ্ধি, পরিদর্শন বিভাগে উন্নতি ও জনবল বৃদ্ধি করা হয়েছে। এছাড়া ৬ মাসের মধ্যে প্রধান পরিদর্শক নিয়োগ করা হয়েছে যা সরকারের বড় অর্জন।’
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ২৪ এপ্রিল রানা প্লাজায় নিহতদের স্মরণে প্রতিটি কারখানায় কালো পতাকা উত্তোলন করা হবে। বিজিএমইএ ভবনের সামনে পোশাক শিল্প সংশ্লিষ্ট সকল সংগঠন ও মালিকদের নিয়ে শোকর্যালি করা হবে। তাছাড়া নিহতদের স্মরণে দোয়া ও মুনাজাত করা হবে।
এসময় বিজিএমইএ’র সহ-সভাপতি শহীদুল্লাহ আজীম, এসএম মান্নান কচি, সাবেক সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, বিকেএমইএ সহ-সভাপতি মোহাম্মদ হাতেমসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।