ট্যাক্সিক্যাব উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
রোকন উদ্দিন, ঢাকা : রাজধানীতে নতুন ট্যাক্সিক্যাব উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সেনাবাহিনী পরিচালিত এই সেবা নগরবাসীর পরিবহন সঙ্কটের অনেকটাই সমাধান দেবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন তিনি। মঙ্গলবার কুর্মিটোলায় আর্মি গলফ ক্লাবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ট্রাস্ট ট্রান্সপোর্ট সার্ভিসের ট্যাক্সিক্যাব উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।
আজ থেকে সেনাবাহিনী ট্রাস্টের ২৭টি এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠান তমা কনস্ট্রাকশনের ১৯টি ট্যাক্সিক্যাব সড়কে নামল। পর্যায়ক্রমে ঢাকা ও চট্টগ্রামে নামবে ৬০০টি গাড়ি।
এই ট্যাক্সিক্যাবের প্রথম দুই কিলোমিটারের ভাড়া ১০০ টাকা নির্ধারণ করা হলেও প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্যে তা ৮৫ টাকা করতে বলেছেন।
তিনি বলেন, “ভাড়া নিয়ে কিছুটা কথা উঠেছে। তাই প্রথম দুই কিলোমিটার ৮৫ টাকা করলে ভালো হয়। পরে এই ভাড়া বৃদ্ধি করা যাবে।”
এই গাড়িগুলোর প্রথম দুই কিলোমিটারের পর প্রতি কিলোমিটারের ভাড়া হবে ৩৪ টাকা এবং প্রতি দুই মিনিটের ওয়েটিং চার্জ হবে ৮ টাকা ৫০ পয়সা।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী, যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং সেনাপ্রধান জেনারেল ইকবাল করিম ভূইয়া নিজেদের স্বাক্ষরিত প্রতীকী চাবি তিনজন ট্যাক্সিচালকের হাতে তুলে দেন।
যোগাযাগমন্ত্রী জানান, এই ট্যাক্সিক্যাবগুলো জাপানের টয়োটা থেকে আনা। এই এক্সিও ও প্রোবক্স গাড়িগুলোর ইঞ্জিন ১৫০০ সিসি ক্ষমতাসম্পন্ন এবং অকটেনে চালিত। প্রতিটি গাড়ি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। গাড়িতে সিকিউরিটি ট্রাকিং, মনিটরিং এবং মিটারের ব্যবস্থা থাকবে।
প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন, সেনাবাহিনীর শৃঙ্খলা, সাংগঠনিক দক্ষতা, একাগ্রতা ও নিরলস পরিশ্রমে ট্যাক্সিক্যাব সার্ভিস প্রকল্পটিও সফল হবে।
“আমি আশা করব, জনসাধারণের নিরাপদ ও আরামদায়ক ভ্রমণ নিশ্চিত করার মাধ্যমে কাঙ্ক্ষিত সেবাদান ও তাদের আস্থা অর্জনে আপনারা সচেষ্ট হবেন।”
মহানগরীতে ট্যাক্সিক্যাবের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে আমরা ট্রাক্সিক্যাব চালু করি। নানা কারণে তা ভালো সেবা দিতে পারেনি।”
আরামদায়ক ও নিরাপদ ট্যাক্সি সার্ভিস চালুর এই উদ্যোগ গ্রহণ করায় যোগাযোগ মন্ত্রণালয় ও আর্মি ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান তিনি। এই উদ্যোগে সম্পৃক্ত হওয়ায় সেনাবাহিনীকে ধন্যবাদ জানিয়ে যোগাযোগমন্ত্রী বলেন, “আসলে সেনাবাহিনী না আসলে তমা কনস্ট্রাকশনও আসতো না- এটা সত্যি।”
যাত্রীদের নিরাপত্তার বিষয়ে তিনি বলেন, “কোনো যাত্রী গাড়িতে মোবাইল ফোন ফেলে গেলেও চালক এদিক-সেদিক করতে পারবে না। ভিডিও’র ব্যবস্থা থাকবে।”
বাণিজ্যিক কাজে প্রতিরক্ষা বাহিনীর অংশগ্রহণের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আর্মি ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট দুস্থ সেনাসদস্যদের কর্মসংস্থান ও জনগণের সার্বিক কল্যাণের ব্রত নিয়েই বিভিন্ন বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। অন্যান্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মতো মুনাফা অর্জনই এর মুখ্য উদ্দেশ্য নয়। বরং সামাজিক দায়বদ্ধতাকে কেন্দ্র করেই তাদের কার্যক্রম পরিচালিত হয়।