সব অভিন্ন নদী বাঁচানোর দাবি বিএনপির : মির্জা ফখরুল
নিজস্ব প্রতিবেদক : লংমার্চ বহর থেকে: সব অভিন্ন নদী বাঁচানোর দাবি জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বুধবার দুপুরে তিস্তা ব্যারেজের ডালিয়া পয়েন্টে সমাবেশে বক্তব্যকালে এ দাবি জানান তিনি।
বন্ধত্ব সুদৃঢ় করতে ভারতের কাছে ১০ হাজার কিউসেক পানি দাবি করে ফখরুল বলেন, যদি পানি বৃদ্ধি না করা হয় তবে আরো কঠোর কর্মসূচির দিকে যাবে বিএনপি।
ফখরুল বলেন, ৩৬শ কিউসেক পানি পর্যাপ্ত নয়। বন্ধুত্ব ও ভালোবাসা তখনই সুদৃঢ় হবে যখন আমাদেরকে ১০হাজার কিউসেক পানি দেওয়া হবে। এবং তা আর বন্ধ করা হবে না।
বর্তমান সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, এ সরকার তিস্তা চুক্তি করতে পারবে না। কারণ তারা জনগণের সমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় আসেনি। তাই তিস্তা চুক্তির ব্যাপারে তাদের কোনো অধিকার নেই।
ফখরুল আরো বলেন, দেশ হিসেবে আমরা ছোট হতে পারি। কিন্তু অধিকার আদায়ে আমরা ১৬ কোটি মানুষ যখন একত্রিত হয়ে আন্দোলন শুরু করবো, তখন কেউ আমাদেরকে আটকে রাখতে পারবে না।
মির্জা ফখরুল বলেন, উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন স্থান থেকে হাজার হাজার মানুষ লংমার্চে স্বেচ্ছায় যোগ দিয়েছে। এর মাধ্যমে প্রমাণিত যে, তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা পাওয়া এ দেশের মানুষের অধিকার। কিন্তু বর্তমান সরকারের এ যোগ্যতা নেই যে তারা তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা আদায় করে নিতে পারবে।
ফখরুল বলেন, অতীতে আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় আসে তখন মনে করে ছিলাম তাদের সাথে ভারতের প্রেম-ভালোবাসা আছে। আমারা আমাদের তিস্তাসহ অভিন্ন ৫৪ টি নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা ফিরে পেতে পারি। কিন্তু সরকার তা করতে ব্যর্থ হয়েছে। নতজানু পররাষ্ট্র নীতির কারণে তারা কেবল ভারতকে দিতে জানে। নিজ দেশের জন্য কিছু আনতে পারে না।
তিনি আরো বলেন, এই নদীর পানির অভাবে এখানকার হাজার হাজার মানুষ আজ দুর্ভোগে দিন কাটাচ্ছে। তাই আজ এর প্রতিবাদে সব মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছে। তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা না দিলে আরো কঠোর আন্দোলনেরও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলুর সভাপতিত্বে সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতাকর্মীরা।
এর আগে বুধবার সকাল ৯টায় রংপুর বাসস্ট্যা-ে পথসভা শেষে তিস্তার উদ্দেশ্যে রওনা দেয় লংমার্চ।
মঙ্গলবার সকাল ৯টায় রাজধানীর উত্তরা থেকে যাত্রা শুরু করে লংমার্চ। পরে সোয়া ১০টায় কালিয়কৈরে, সাড়ে ১১টায় টাঙ্গাইলে, সাড়ে ১২টায় সিরাজগঞ্জে, আড়াইটায় বগুড়ার মাটির ঢালীর মোড়, বিকেল সাড়ে ৩টায় গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ মহাসড়কে এবং বিকেল সাড়ে ৪টায় পলাশবাড়িতে পথসভা করে।
মির্জা ফখরুল ইসলামের নেতৃত্বে দুই দিন ব্যাপী লংমার্চ কর্মসূচির বিভিন্ন পথ সভায় বক্তব্য দেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, লে. জেনারেল (অব) মাহবুবুর রহমান, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, মেজর (অব) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, বেগম সেলিমা রহমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ড. এম ওসমান ফারুক, ডা.এ জেড এম জাহিদ হোসেন, আবদুল মান্নান, যুগ্ম মহাসচিব মিজানুর রহমান মিনু, অর্থসম্পাদক আব্দুস সালাম, শিক্ষা সম্পাদক খায়রুল কবির খোকন, আন্তর্জাতিক সম্পাদক আসাদুজ্জামান রিপন, নাজিম উদ্দিন আলম, ছাত্র সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, সহ ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক সুলদতান সালাহ উদ্দিন টুকু, যুবদলের সভাপতি সৈয়দ মোয়াজ্জোম হোসেন আলাল, স্বেচ্ছাসেবক দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মনির হোসেন, সাধারণ সম্পাদক মীর সরাফত আলী সফু, জাসাস সভাপতি এম এ মালেক, মহিলা দলের সভাপতি নূরে আরা সাফা, সাধারণ সম্পাদক শিরিন সুলতানা, ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বজলুল করিম চৌধুরী আবেদ, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল হক নাসির প্রমুখ।
এছাড়া জোট নেতাদের মধ্যে জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির সভাপতি শফিউল আলম প্রধান ও সাধারণ সম্পাদক খন্দকার লুৎফুর রহমান, ইসলামি ঐক্য জোটের ভাইস চেয়ারম্যান আবুল হাসনাত আমিনী উপস্থিত ছিলেন।