বাংলাদেশে প্রথম ট্যুরিজম ভিত্তিক নিউজ পোর্টাল|Sunday, December 22, 2024
সাইটে আপনার অবস্থানঃ Home » লাইফ স্টাইল » হাঁটার সময় সৃজনশীলতা বৃদ্ধি পায়

হাঁটার সময় সৃজনশীলতা বৃদ্ধি পায় 

largea_walking1394579326

লাইফস্টাইল ডেস্ক : যখন কোন ব্যক্তি হাঁটতে থাকেন ঠিক তখন এবং হাঁটা পরবর্তী সময়টুকুতে সৃজনশীল চিন্তার ভালো উন্মেষ ঘটে। সম্প্রতি এক গবেষণায় এমনটিই দেখা গেছে। ষ্ট্যানফোর্ড গ্রাজুয়েট স্কুল অব এডুকেশনের অধ্যাপক ড্যানিয়েল সোয়ার্ডজ এবং ষ্টানফোর্ডের এডুকেশনাল সাইকোলজ্যির ডক্টর‌্যাল গ্রাজুয়েট মেরিলি ওপেজো দ্বৈতভাবে এই গবেষণা পরিচালনা করেন।

এক্সপেরিমেন্টাল সাইকোলজি: লার্নিং, মেমোরি এবং কগনিশন এ কয়েকদিন আগে প্রকাশিত এই বিষয়ের গবেষণা পত্রে আরও বলা হয়েছে, ঘরে এবং বাইরে উভয় জায়গাতেই হাঁটা সমানভাবে সৃজনশীলতার উন্নয়ন ঘটায়। পরিবেশ নয় হাঁটাই এখানে মূল বিষয়।

অনেকেই অজান্তে বলে থাকেন তারা তাদের সবচেয়ে ভালো কাজটির পরিকল্পনা করেছেন হাঁটতে হাঁটতে। এ্যাপেলের কো-ফাউন্ডার প্রয়াত স্টিভ জবস তার হাঁটতে হাঁটতে মিটিং করা নিয়ে বেশ আলোচিত ছিলেন। ফেসবুকের কর্ণধার মার্ক জুকারবার্গকেও হাঁটতে হাঁটতে মিটিং করতে দেখা যায়। এই গবেষণায় বিখ্যাত ব্যক্তিদের কর্মকান্ডের পেছনের সত্য জানা গেলো।

হাঁটা বনাম বসা
এই গবেষণার পরীক্ষাতে দেখা গেছে একজন ব্যক্তি যে ঘরের ভেতর কোন কোন খোলা দেয়ালের সামনে হাটা যন্ত্রের উপর অথবা কোন মুক্ত বাতাসে কোন খোলা প্রান্তরেই হাঁটুক না কেনো সে বসে থাকা কোন ব্যক্তির চেয়ে কমপক্ষে দিগুন সৃজনশীল কাহে সাড়া দিতে পারে।

পরীক্ষায় আরও প্রমাণণিত হয়েছে যে এই সৃজনশীলতার উন্মেষ হাঁটার পরপরই বসে পড়ার সময়টুকুতেও প্রবাহিত হয়।

সৃজনশীল চিন্তার পরিমাপ
এই গবেষনার সৃষ্টিশীল চিন্তার মাত্রা পরিমাপ করা জন্য ১৭৬ জন কলেজ শিক্ষার্থী ও অনান্য প্রাপ্ত বয়স্কদের দিয়ে কিছু কাজ সমাধান করিয়ে চারধরণের পরীক্ষা নিরীক্ষার তুলনা করেন বিজ্ঞানীরা। অংশগ্রহণকারীদের বিভিন্ন অবস্থায় রাখা হয়- একবার তারা ঘরের ভেতর কোন হাঁটা যন্ত্রে হাঁটেন আবার ঘরের ভেতর চেয়ারেও তাদের বসে থাকতে হয় এবং উভয় ক্ষেত্রেই মুখ থাকে খোলা দেয়ালের দিকে, অন্যদিকে আবার একবার সবাই বাইরে হাঁটেন বা বাইরে হুইল চেয়ারে বসে থাকেন এবং তাদেরকে ঠেলে নেয়া হয়।

দুই ধরণের বসা অবস্থা, বসার সাথে হাঁটার অবস্থা আবার দুই ধরনের হাঁটার অবস্তা ইত্যাদিন বিভিন্ন কমবিনেশনে গবেষনা চালানো হয়। তরপর অন্যস্থানে এদেরকে সকলকে নিয়ে ৫ থেকে ১৬ মিনিট সময়ের জন্য বিভিন্ন কাজ করতে দিয়ে সৃজনশীলতা পরীক্ষা করা হয়। সৃজনশীলতা পরিমাপের জন্য এভাবে তাদের তিন ধরণের ‘ডাইভারজেন্ট থিংকিং’ পদ্ধতির সৃজনশীলতা টেস্ট নেয়া হয়।

টেস্টের পরে দেখা যায়, অংশগ্রহণ কারীগণ বসে থাকা অবস্থার থেকে হাঁটা অবস্থায় বেশি সৃজনশীল ছিলো। এই তিন পরীক্ষা হতে দেখা যায় বসে থাকার চেয়ে হাঁটা অবস্থায় সৃজনশীলতা প্রায় গড়ে ৬০% বেশি ছিলো।
গবেষকরা চতুর্থ আরেকটি পরীক্ষা করেন। এই পরীক্ষায় প্রত্যেককে কোন একটি বিষয়ের কথা বলা হয় যেটি একটি সঠিক ও উপযুক্ত প্রবাদ বাক্য দিয়ে তাদের প্রকাশ করতে বলা হয়।

পরীক্ষার ফলাফলে দেখা যায় বসে থাকা লোকদের চেয়ে ৫০% বেশি হাঁটতে থাকা ব্যক্তিরা কমপক্ষে একটি হলেও উন্নত এবং উপযুক্ত প্রবাদ বাক্য বলতে পেরেছেন।

পরীক্ষায় যাই পাওয়া যাক না কেনো, কিছু বিষয় অবশ্য বসেই ভাল করা যায়। উপরের গবেষণায় দেখা গেছে হাঁটা সৃষ্টিশীল এবং ব্রেইনষ্ট্রর্মিং এ উন্নয়ন ঘটায় কিন্তু একক এবং নির্দিষ্ট সঠিক উত্তর খোঁজার চিন্তায় এই গবেষনার কোন পজিটিভি প্রভাব নেই। সে কারনেই ওপেজ বলেন, ‘এর মানে এই না যে হেঁটে হেঁটেই সব কাজ করতে হবে। কেবল নতুন কোন ধারনার উদ্ভব ঘটাতে বা কোন নতুন কিছু সৃষ্টিতে এর থেকে সুবিধা পাবে।’

তিনি আরও বলেন , ‘হাঁটা হার্ট এবং মস্তিষ্কের জন্য বেশ ভালো একটি জিনিসও বটে।’

এখন বিজ্ঞানীদের হয়তো সামনে আরও গবেষণা করে ঠিকই বের করবেন কিভাবে হাঁটা সৃজনশীলতার উন্মেষ করে এবং কল্পনা শক্তি বাড়ায়।

শেয়ার করুন !!Share on FacebookTweet about this on TwitterShare on Google+Share on LinkedInShare on RedditBuffer this pageDigg thisShare on TumblrPin on PinterestShare on StumbleUponFlattr the authorEmail this to someone