যুবলীগ নেতার পরিকল্পনায় জঙ্গি ছিনতাই
প্রধান প্রতিবেদক : ময়মনসিংহের ত্রিশালে পুলিশের প্রিজন ভ্যানে হামলা চালিয়ে নিষিদ্ধ ঘোষিত জেএমবির সাজাপ্রাপ্ত জঙ্গি ছিনিয়ে নেয়ার ঘটনায় কলকাঠি নেড়েছেন এক যুবলীগ নেতা। এ ঘটনায় র্যাবের হাতে গ্রেফতার হওয়া ৮ জনের স্বীকারোক্তিতে এ তথ্য জানা গেছে।
মঙ্গলবার রাত থেকে ভোর পর্যন্ত রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্নস্থানে অভিযান চালিয়ে ৮ জনকে গ্রেফতার করে র্যাব। গ্রেফতারকৃতরা হলো কামাল উদ্দিন সবুজ (৩৪), ইউনুস আলী সোহাগ (২০), সোহেল রানা (২৮), মোরশেদ আলম (২২), ইলয়াস উদ্দিন (৩৪), আনোয়ার হোসেন (৪০), আবু বক্কর সিদ্দিক (৪৫) এবং বাকের উদ্দিন (২০)। এর মধ্যে কামাল উদ্দিন সবুজ ও আবু বক্কর সিদ্দিক মঙ্গলবার অপহৃত হয়েছেন বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়েছে।
বুধবার দুপুর ১২টায় উত্তরায় র্যাব সদর দপ্তরে তাদের সাংবাদিকদের সামনে হাজির করা হয়।
র্যাব কর্মকর্তারা জানান, কামাল উদ্দিন সবুজ এ গ্রুপের দলনেতা। তিনি ভালুকার একটি কোচিং সেন্টারের মালিক।
অন্যদিকে কামাল উদ্দিন সবুজ সাংবাদিকদের জানান, তিনি আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তার ভাষ্যানুযায়ী ভালুকা যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক আতাউর রহমান কামাল ওরফে যুবরাজ জঙ্গি ছিনতাইয়ের মূল পরিকল্পনাকারী ও হোতা। আতাউর রহমান কামালই জঙ্গিদের পরিকল্পনার কথা জানান। এ জন্য সব ব্যবস্থা যুবরাজই করেন। এছাড়া কাজের জন্য তাদের প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে নগদ দিয়েছেন।
তবে র্যাবের লিগ্যাল এ- মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক হাবিবুর রহমান তাৎক্ষণিক সবুজের বক্তব্যকে ‘আত্মরক্ষার কৌশল’ বলে উল্লেখ করে তা প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি দাবি করেন আটককৃতরা সকলেই জঙ্গি। তার মতে, কোনো অপরাধী আটক হলেই নিজেকে রক্ষায় রাজনৈতিক আশ্রয়ের কথা বলে। বিশেষ করে ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার প্রচার তাদের একটি কৌশল। এছাড়া দুই শিক্ষককে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়ে অপহরণের অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, কাউকে অপহরণ করা হয়নি।
উল্লেখ্য, গত ২৩ ফেব্রুয়ারি ময়মনসিংহের ত্রিশালে পুলিশের প্রিজনভ্যানে হামলা চালিয়ে নিষিদ্ধ সংগঠন জমিয়াতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশের (জেএমবি) ৩ জঙ্গিকে ছিনিয়ে নেয় সন্ত্রাসীরা। এ সময় সন্ত্রাসীদের গুলিতে আতিক নামে পুলিশের এক কনস্টেবল মারা যান। ছিনিয়ে নেয়া জঙ্গিদের মধ্যে রাকিবুল হাসান ওরফে হাফিজ মাহমুদ মৃত্যুদ-প্রাপ্ত। এছাড়া সালাউদ্দিন সালেহীন ওরফে সানি এবং মিজান ওরফে জাহিদুল ইসলাম ওরফে বোমারু মিজান যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত। এ ঘটনার কয়েক ঘণ্টা পর সালেহীনকে আটক করা হয়। পরে ক্রসফায়ারে সে মারা যায়।