নারায়ণগঞ্জের ৭ হত্যাকাণ্ডের সাক্ষ্য চলছে
নিজস্ব প্রতিবেদক : নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম ও আইনজীবী চন্দন সরকারসহ নিহত সাত পরিবারের স্বজনদের সাক্ষ্যগ্রহণ করছে বিশেষ তদন্ত কমিটি।
খুনের ঘটনায় র্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জড়িত থাকার অভিযোগ তদন্তে গঠিত ৭ সদস্যের কমিটি এই সাক্ষ্যগ্রহণ করছেন।
শনিবার বেলা ১১টা থেকে নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মাহামুদুর রহমানের কার্যালয়ে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। প্রথমেই সাক্ষি দেন সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র নিহত নজরুল ইসলামের পরিবারের সদস্যরা।
তার পরিবারের পক্ষ থেকে সাক্ষ্য দানের জন্য আসেন, নজরুলের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম, ভাই সালাম ও শ্বশুর শহীদুল ইসলামসহ আরও কয়েকজন।
নিহত মনিরুজ্জামান স্বপনের পরিবারের পক্ষ থেকে তার বাবা মুক্তিযোদ্ধা হায়দার আলী খান, স্ত্রী মোর্শেদা বেগম, ভাই রিপন, দুই মেয়ে স্বর্ণা ও মাহি।
অ্যাডভোকেট চন্দন সরকারের পরিবারের পক্ষ থেকে এসেছেন দুই মেয়ে ও জামাই। তারা হলেন- চিকিৎসক সুস্মিতা সরকার, তার স্বামী রঞ্জিত দেবনাথ, সেজুতি সরকার, তার স্বামী ও চন্দন সরকার হত্যা মামলার বাদী চিকিৎসক বিজয় কুমার পাল। তাজুল ইসলামের পরিবারের পক্ষ থেকে এসেছেন তার মা তাসলিমা, বাবা আবুল খায়ের, ভাই সাইফুল ইসলাম রাজু।
সিরাজুল ইসলাম লিটনের পরিবারের পক্ষে তার বড় ভাই রফিকুল ইসলাম, ছোট ভাই সাইফুল ইসলাম মিন্টু।
জাহাঙ্গীরের পরিবারের পক্ষে তার আট মাসের অন্তস্বত্ত্বা স্ত্রী সামসুন্নাহার নুপুর, মা মেহেরুন, ভাই শাহজাহান সাজু, শাহবুদ্দিন। ইব্রাহিমের বাবা আবদুল ওহাব মিয়া, স্ত্রী অনুফা বেগম, ছেলে রনি, বোন রহিমা, ভাগ্নে শাকিল। তারা সবাই জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে অবস্থান করছেন।
এর আগে ৮মে নারায়ণগঞ্জে ঘটনাস্থল ও লাশ উদ্ধারের স্থান পরিদর্শন করেন কমিটি। তদন্ত কমিটির প্রধান শাহাজান আলী মোল্লার নেতৃত্বে কমিটি নারায়ণগঞ্জে পরিদর্শন করেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপ সচিব আবদুল কাইয়ুম সরকার, আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দিন, আইন ও বিচার বিভাগ ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব মোস্তাফিজুর রহমান, মিজানুর রহমান খান, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের উপসচিব শফিকুর রহমান, সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দার।
প্রসঙ্গত, আদালতের নির্দেশে বুধবার রাতে নারায়ণগঞ্জে সাত খুনের ঘটনায় র্যাব ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ অন্যদের জড়িত থাকার অভিযোগ তদন্তে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. শাহজাহান আলী মোল্লাকে প্রধান করে সাত সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়।
উল্লেখ্য, ৬ লাখ টাকার বিনিময়ে র্যাবকে দিয়ে সাতজনকে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের নিহত প্যানেল মেয়র ও কাউন্সিলর নজরুল ইসলামের পরিবার।
গত ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র ও ৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম ও আইনজীবী চন্দন সরকারসহ ৭ জনকে দিনে দুপুরে অপহরণ করে সন্ত্রাসীরা। ওইদিন সন্ধ্যায় গাজীপুর থেকে আপহৃত নজরুলের গাড়ি উদ্ধার করা হয়। এরপর গত বুধবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত শীতলক্ষ্যা নদী থেকে অপহৃতদের মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।