একরাম হত্যার পরিকল্পনা একদিনের মধ্যেই বাস্তবায়ন
নিজস্ব প্রতিবেদক : ফেনীর ফুলগাজী উপজেলা চেয়ারম্যান একরামুল হক একরাম হত্যার পরিকল্পনা করা হয় ফেনীর সালাম জিমনেশিয়ামে বসে। আর পরিকল্পনার একদিনের মধ্যেই তা বাস্তবায়ন করে খুনিরা।
গ্রেফতারকৃত মূল পরিকল্পনাকারীসহ আটজন এই চাঞ্চল্যকর তথ্য জানিয়েছে র্যাব কর্মকর্তাদের। র্যাব জানায়, পরিকল্পনার সময় সেখানে সিফাত, সানি, আবিদসহ অনেকেই উপস্থিত ছিলো। ১৯ মে রাতে এই পরিকল্পনা করা হয় আর ২০ মে সকালেই প্রায় ৩০ থেকে ৪০ জনের একটি সন্ত্রাসী দল এ হত্যাকাণ্ডে অংশ নেয়। তারা এ হত্যাকাণ্ডে মোট পাঁচটি পিস্তল ব্যবহার করে।
একরামুল হক একরামকে যে পিস্তলটি দিয়ে গুলি করা হয় সেটি সংগ্রহ করে দিয়েছিলেন জাহিদ চৌধুরী নামের এক ব্যক্তি। আর সেই পিস্তল দিয়ে চেয়ারম্যানকে লক্ষ্য করে সরাসরি গুলি করে আবিদ।
শনিবার দুপুরে র্যাব সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইং এর পরিচালক এ টি এম হাবিবুর রহমান এ সব তথ্য জানান।
এর আগে সকালে রাজধানীর বারিধারায় অভিযান চালিয়ে এ ঘটনায় যুক্ত সন্দেহে ৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের মধ্যে হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনাকারী আবিদও রয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে পাওয়া প্রাথমিক তথ্য নিয়েই এই সংবাদ সম্মেলন করে র্যাব।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত পিস্তলগুলো সংগ্রহ করে জাহিদ চৌধুরী নামে এক ব্যক্তি। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে শিপলু পিস্তল চালাতে জানে। সে পিস্তল চালানো শিখিয়ে দেয় আবিদকে। আর উপজেলা চেয়ারম্যানকে সেই পিস্তল দিয়ে সরাসরি প্রথম গুলি করে আবিদ।
র্যাব পরিচালক জানান, সন্ত্রাসীরা কয়েকটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে এই হত্যাকাণ্ডে অংশ নেন। প্রতিটি গ্রুপের সুনির্দিষ্ট কিছু কাজ ছিল। উপজেলার চেয়ারম্যান একরামকে হত্যার জন্য পরিকল্পনাকারীরা ওই দিন সকাল ৮টা থেকে শহরের বিভিন্ন স্থানে গিয়ে অবস্থান নেয়।
হাবিবুর জানান, ২০ মে সকালে উপজেলা চেয়ারম্যান গাড়ি করে নিজের বাসা থেকে বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শহরের বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান নেওয়া গ্রুপগুলোর মধ্যে যোগাযোগ শুরু হয়। একরামের গাড়িটি সিনেমা হলের সামনে আসা মাত্র একটু ভিন্ন কায়দায় নসিমন, করিমন ও টেম্পু দিয়ে পথ রোধ করা হয়। এ সময় গাড়িটি রাস্তার ডিভাইডারে উঠে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। পরে সেখানে ব্যাপকভাবে ককটেল ফাটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে তারা। এতে লোকজন ভয়ে দূরে সরে যায়।
র্যাব জানায়, এ সময় একরামের গাড়িতে চালকসহ মোট চারজন ছিলেন। তাদের মধ্যে কেউ একজন একরামের নিজের লাইসেন্স করা পিস্তল দিয়ে প্রতিরোধ করারও চেষ্টা করেন। কিন্তু ব্যর্থ হন। পরে তারা সেখান থেকে সরে যান। যেহেতু হত্যাকারীদের টার্গেট ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান, তাই তিনি আর বের হতে পারেননি।
‘গুলি করার পর গাড়িটিতে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় হত্যাকারীরা। একই সঙ্গে আবারো ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করা হয়, যাতে সাধারণ মানুষ কাছে আসতে না পারে।’ গ্রেফতারকৃতদের উদ্ধৃতি দিয়ে র্যাব এ কথা জানিয়ে আরো বলেছে এ ঘটনায় জড়িত অন্যদের গ্রেফতারের জন্য বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালানো হচ্ছে।