আজ শপথ নিচ্ছেন মোদি
আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আজ শপথ নিচ্ছেন বিজেপি নেতা নরেন্দ্র মোদি। সন্ধ্যা ৬টায় রাষ্ট্রপতি ভবনের খোলা চত্বরে শপথ নেবেন মোদি ও তার মন্ত্রিসভার সদস্যরা।
ভারতের ভাবী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দিচ্ছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ। সার্ক দেশগুলোর নেতাদের উপস্থিতি নিশ্চিত হওয়ায় এর মাধ্যমে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানটি যেন মিনি সার্ক সম্মেলনে পরিণত হতে চলেছে।
সার্ক ব্যতীত একমাত্র মরিশাসের প্রধানমন্ত্রী রামগুলাল আসছেন। এ প্রথম ভারতের কোনো প্রধানমন্ত্রীর শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে সার্ক সদস্য দেশের রাষ্ট্রনেতারা উপস্থিত হচ্ছেন।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পূর্বনির্ধারিত জাপান সফর করছেন বলে জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী থাকবেন শপথ অনুষ্ঠানে।
প্রায় চার হাজার বিশেষ আমন্ত্রিত অতিথি থাকবেন ওই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে। সার্কভুক্ত আট দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানের বাইরেও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ব্যক্তিত্ব অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ পেয়েছেন। এ তালিকায় রয়েছেন, চলচ্চিত্র অভিনেতা অমিতাভ বচ্চন, রজনীকান্ত, সালমান খান ও প্রখ্যাত সঙ্গীতশিল্পী লতা মুঙ্গেশকর প্রমুখ।
ভাদোদরা আসনে মোদির মনোনয়নের প্রস্তাবক চা-বিক্রেতা কিরণ মাহিদাও রয়েছেন আমন্ত্রিত অতিথির তালিকায়।
মোদির পরিবারের সদস্যরা রাষ্ট্রপতি ভবনে এক বিশেষ বেষ্টনীর মধ্যে বসবেন। তারাও আমন্ত্রিত অতিথির তালিকাভুক্ত।
লোকসভা ও রাজ্যসভার সব সদস্যকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে এতে। তাদের সংখ্যা ৭৭৭। তাদের রাষ্ট্রপতি ভবনের পক্ষ থেকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এমপিরা তাদের স্বামী বা স্ত্রীকে সঙ্গে আনতে পারবেন না।
অনুষ্ঠানে সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রতিভা পাতিল ও এপিজে আবদুল কালামকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং ও তার মন্ত্রিসভার কয়েক সদস্যও উপস্থিত থাকবেন।
অনুষ্ঠানে নতুন প্রধানমন্ত্রী ২১ জন এবং শপথ নিতে আসা মন্ত্রীরা প্রত্যেকে চার জন পর্যন্ত অতিথি নিয়ে আসতে পারবেন। বিজেপির আদর্শিক সংগঠন কট্টর হিন্দুত্ববাদী রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) পক্ষ থেকে সুরেশ সোনি অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন।
লোকসভায় নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়া বিজেপি অনুষ্ঠানে এক হাজার ২৫০ জনকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে। আরো এক হাজার ২৫০ জনকে আমন্ত্রণ জানাবে রাষ্ট্রপতি ভবন। এছাড়া বিজেপি তাদের এনডিএ জোট শাসিত রাজ্যগুলোর মুখ্যমন্ত্রীদেরও আমন্ত্রণ জানাবে। রাষ্ট্রপতি ভবনের ওয়েবসাইটে অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচার করা হবে।
নরেন্দ্র মোদি হবেন ভারতের তৃতীয় প্রধানমন্ত্রী, যিনি অশোকা হলের পরিবর্তে খোলা প্রাঙ্গণে শপথ নেবেন। ১৯৯০ সালে চন্দ্র শেখর ও ১৯৯৮ সালে অটল বিহারি বাজপেয়ি এ রকম খোলা প্রাঙ্গণে শপথ নিয়েছিলেন। শপথ অনুষ্ঠানে যে খাবার পরিবেশন করা হবে তা পুরোপুরি গুজরাটি হবে না, তবে তা হবে সম্পূর্ণ নিরামিষ।
শপথ অনুষ্ঠানকে ঘিরে ব্যাপক প্রস্তুতি চলছে। নেয়া হয়েছে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। শপথ অনুষ্ঠানকে ঘিরে রাষ্ট্রপতি ভবনের আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করেছে কর্তৃপক্ষ।শপথ অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে দিল্লি শহর কার্যত নিরাপত্তায় মোড়া দুর্গে পরিণত হয়েছে। ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবসে যে ধরনের ত্রি-স্তর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়, তেমনি প্রহরা বসানো হয়েছে।
দিল্লিতে গত শনিবার থেকে মোদির শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের মহড়া শুরু হয়েছে। এদিন সকাল থেকেই রাষ্ট্রপতি ভবনের সামনের রাস্তা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। দিল্লির জনতাকে হেঁটে বা মোটরসাইকেলে রাষ্ট্রপতি ভবনের সামনে দিয়ে যাতায়াত না করতে অনুরোধ করেছে পুলিশ। রবিবারও চলে অনুশীলন পর্ব। আজ বিকাল ৪টা থেকেই বন্ধ করে দেয়া হবে রাজপথ।
মোদির মন্ত্রিসভার আকার ছোট হবে বলে বিভিন্ন সূত্র থেকে তথ্য পাওয়া গেছে। রবিবার মন্ত্রিসভার তালিকা রাষ্ট্রপ্রতি প্রণব মুখার্জীর কাছে পাঠানোর কথা।
ধারণা করা হচ্ছে, রাজনাথ সিং, অরুণ জেটলি, সুষমা স্বরাজ নিতিন গড়কারি, রবিশঙ্কর প্রসাদ, মন্ত্রিসভায় ঠাঁই পেতে যাচ্ছেন।
শরিক দল শিবসেনা, চন্দ্রবাবু নাইডুর তেলেগু দেশম পার্টি ও রাম বিলাস পাসওয়ানের লোক জনশক্তি পার্টি তাদের প্রাপ্ত আসনের ভিত্তিতে মন্ত্রিসভায় রাখা হতে পারে।
নরেন্দ্র মোদির শপথ অনুষ্ঠানে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট মাহিন্দ রাজাপাকশেকে আমন্ত্রণ জানানোয় তামিল নাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী জয়ললিতা শপথ অনুষ্ঠানে নাও আসতে পারেন বলে জানিয়েছে এনডিটিভি।
লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি ২৮২টি আসন আর জোটগতভাবে পেয়েছে ৩৩৬টি আসন।
Posted in: আর্ন্তজাতিক