সৈন্য কমিয়ে আনবে যুক্তরাষ্ট্র
আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ আফগানিস্তানে অবস্থানরত যুক্তরাষ্ট্রের সেনা সংখ্যা কমিয়ে এই বছরের শেষ নাগাদ ৯ হাজার ৮০০ জনে নামিয়ে আনা হবে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। আগামী ২ বছরের মধ্য সেনা সংখ্যা ক্রমান্বয়ে আরো কমিয়ে এনে তা মাত্র ১ হাজারে সীমিত করার পরিকল্পনার কথাও জানিয়েছেন তিনি।
আফগানিস্তান সফর শেষে হোয়াইট হাউসে দেয়া এক ভাষণে বারাক ওবামা বলেছেন, ২০১৬ সালের শেষ নাগাদ আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের মাত্র ১ হাজার সৈন্য অবস্থান করবে।
এই সৈন্যদের মূল কাজ হবে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসকে পাহারা দেয়া, আফগান সৈন্যদেরকে প্রশিক্ষণ দেয়া এবং সন্ত্রাসবিরোধী কর্মকা-কে সহযোগিতা করা।
এই সিদ্ধান্ত নেয়ার পেছনে মূল কারণ হিসেবে বারাক ওবামা বলেছেন, আফগানিস্তানকে নিরাপত্তা দেয়া আফগানদের কাজ যুক্তরাষ্ট্রের নয়।
তিনি বলেন, আগামী বছরের শুরু থেকে আফগানিস্তানের নিরাপত্তার জন্য আফগানরাই দায়িত্বে থাকবে। আর যুক্তরাষ্ট্র থাকবে কেবল পরামর্শকের ভূমিকায়।
আফগান নগর, শহর, পাহাড় ও উপত্যকাগুলোতে আমরা আর টহল কাজ পরিচালনা করবো না। কেননা এটি একান্তভাবেই আফগানদের কাজ।
আফগানিস্তানে যুক্তরনাষ্ট্রের সৈন্য সংখ্যা কমিয়ে আনার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা হবে ধাপে ধাপে, কয়েকটি পর্যায়ে। এর মধ্যে প্রথম ধাপটি হবে আগামী বছর অর্থাৎ ২০১৫ সালের শুরুর দিক।
এই বছরের শেষ নাগাদ সৈন্য সংখ্যা কমিয়ে মাত্র ১০ হাজারের কাছাকাছি সৈন্যকে আফগানিস্তানের বিভিন্ন এলাকার দায়িত্বে রাখা হবে। আর দ্বিতীয় ধাপে অর্থাৎ ২০১৫ সালের শেষ নাগাদ এই সংখ্যা আরো কমিয়ে প্রায় অর্ধেকে নামানো হবে।
সেই অর্ধেক সৈন্য সংখ্যা অর্থাৎ প্রায় ৫ হাজারের কাছাকাছি সৈন্য তখন থাকবে কেবল কাবুল এবং বাগরাম এয়ার বেস এর নিরাপত্তার দায়িত্বে। আর তৃতীয় ধাপটি হবে ২০১৬ সালের শেষ নাগাদ। এই সময়ে সৈন্য সংখ্যা নামিয়ে আনা হবে ১ হাজারে।
তবে বারাক ওবামা এটিও জানিয়েছেন, এই সব কিছুই নির্ভর করছে যুক্তরাষ্ট্র ও আফগানিস্তানের মধ্যে নিরাপত্তা সংক্রান্ত একটি দ্বিপাক্ষিক চুক্তি হওয়া না হওয়ার ওপর।
এখানে বারাক ওবামা বলেছেন, ২০১৪ সালের পর আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের সেনা উপস্থিতি থাকবে কিনা বিষয়টি নির্ভর করছে দ্বিপাক্ষিক একটি চুক্তির ওপরে। এই চুক্তির বিষয়ে ২ দেশের সরকার ইতোমধ্যেই আলাপ করেছে।
আমাদের সেনাদেরকে তাদের উদ্দেশ্য সম্পন্ন করতে দেয়ার মর্মে কর্তৃত্ব দেয়া হবে এই চুক্তিতে। এই চুক্তি করতে অসম্মতি জানিয়েছিল আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই
তবে বর্তমানে নির্বাচনের পর নতুন যে প্রেসিডেন্ট ক্ষমতায় আসতে যাচ্ছেন তিনি এই চুক্তিতে রাজী হবেন বলেই মনে করছে যুক্তরাষ্ট্র।
আফগানিস্তানে বর্তমান যুক্তরাষ্ট্রের সেনা সংখ্যা ৩২ হাজার। আর আফগানিস্তানের এই যুদ্ধে এ পর্যন্ত ২ হাজার যুক্তরাষ্ট্রের সেনা নিহত হয়েছেন বলেও জানা গেছে।