বাংলাদেশে প্রথম ট্যুরিজম ভিত্তিক নিউজ পোর্টাল|Sunday, December 22, 2024
সাইটে আপনার অবস্থানঃ Home » জাতীয় » প্রধানমন্ত্রীর প্রটোকল নীতিমালায় পরিবর্তন

প্রধানমন্ত্রীর প্রটোকল নীতিমালায় পরিবর্তন 

images

এই দেশ এই সময়,ঢাকাঃ প্রধানমন্ত্রীর বিদেশ সফর কর্মসূচিতে প্রস্থানকালে এবং ফেরার সময় উভয় ক্ষেত্রেই বিমান বন্দরে প্রটোকল দেওয়ার নিয়ম রয়েছে। imagesকাগজে-কলমে যদিও এই নীতিমালার কোনো পরিবর্তন হয়নি। কিন্তু, গত দু’দফায় বিদেশ সফরের সময় শুধুমাত্র যাবার প্রাক্কালেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রটোকল দেওয়া হয়েছে। বিদেশ থেকে ফেরার পর রিসিভ বা প্রটোকল দেওয়ার জন্য বিমান বন্দরে পদস্থ কেউ ছিলেন না। অর্থাৎ এতে প্রটোকলের কোনো আয়োজন করা হয়নি। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত বাহিনী ছাড়া অন্য কাউকে বিমান বন্দরে দেখা যায়নি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ইচ্ছা অনুসারেই প্রটোকল রেওয়াজে এই পরিবর্তন আনা হয়েছে বলে নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী হিসেবে এবার শপথ নেওয়ার পর শেখ হাসিনা দু’দফায় বিদেশ সফরে গেলেন। সর্বশেষ গত ২৪ মে জাপান. এর আগে ৩ মার্চ, ২০১৪ মায়ানমার। এই দু’বারই বিদেশ যাবার প্রাক্কালে প্রটোকল দেওয়া হলেও ফেরার সময় প্রটোকল দেওয়া হয়নি। জানা গেছে, প্রটোকল নীতিমালা অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী বিদেশ যাওয়া এবং আসা- উভয় ক্ষেত্রেই ভিভিআইপি লাউঞ্জে প্রটোকল দেওয়ার কথা। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত এই নীতিমালায় অফিসিয়ালি কোনো পরিবর্তন আনা হয়নি। প্রধানমন্ত্রীর মৌখিক নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ফেরার সময় প্রটোকল আয়োজন থেকে বিরত থেকেছে।
প্রধানমন্ত্রী বিদেশ সফরের সময় প্রটোকল আয়োজনের পুরো দায়িত্ব সরকারের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ‘সরকার গঠন ও রাষ্ট্রাচার অধিশাখা’ এ দায়িত্ব পালন করে থাকে। প্রত্যেকবারই প্রধানমন্ত্রী বিদেশ যাওয়ার সময় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এ শাখা থেকে একটি তালিকাসহ চিঠি ইস্যু হয়। মন্ত্রিসভার সদস্য ও সরকারি কর্মকর্তা যারা প্রধানমন্ত্রীকে বিমান বন্দরে বিদায় সম্ভাষণ জানাবেন এদের নাম সিনিয়রিটি অনুযায়ী তালিকায় উল্লেখ থাকে। বিদেশ থেকে ফেরার সময়ের জন্যও একই রকমের একটি তালিকাসহ চিঠি ইস্যু হয়। তালিকায় সিনিয়রিটি যেভাবে নির্ধারণ করা হয়ে থাকে মন্ত্রী ও সরকারি কর্মকর্তারা ঠিক সেভাবেই বিমান বন্দরে দাঁড়িয়ে সম্ভাষণ জানাতে হয়। এর বাইরে কারো এতে উপস্থিত থাকার সুযোগ তো নেই-ই, এমনকি সিনিয়রিটির সিরিয়াল ব্রেক করারও সুযোগ নেই।

সূত্র জানায়, প্রটোকল দেওয়ার তালিকায় যাদের অন্তর্ভুক্ত করা হয় এদের প্রত্যেকের নামে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সুনির্দিষ্ট কার্ডও ইস্যু করে। প্রত্যেকটি কার্ডে সিনিয়রিটি নির্ধারণ করে সিরিয়াল নম্বর দেওয়া হয়ে থাকে। প্রটোকলের সময় ওই সিরিয়াল অনুযায়ী দাঁড়াতে হয় প্রত্যেককে। এ কারণেই তালিকার বাইরে কাউকে প্রটোকলে উপস্থিত রাখার সুযোগ নেই।

অথচ গত ২৪ মে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাপান সফরের প্রাক্কালে প্রটোকল তালিকার বাইরেও তিনজন বিমান বন্দরে উপস্থিত ছিলেন। এরা হলেন- প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচটি ইমাম, রেলমন্ত্রী মো. মজিবুল হক এবং জনপ্রশাসন বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ইসমাত আরা সাদেক। প্রটোকলের আয়োজক মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এদের নিয়ে বেশ বেকায়দায় পড়ে। আয়োজক কর্মকর্তারা এদের ফেরত দিতে পারছিলেন না, যেহেতু তারা প্রভাবশালী। অবশেষে কর্মকর্তারা নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করে বিব্রতভাবে এদের জায়গা করে দিলেও সেটি ছিল নীতিমালা বহির্ভুত কাজ।

উল্লেখ্য, গত ২৪ মে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাত ১১টা ৫৯ মিনিটে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিজি-০৭৮ ফ্লাইট যোগে জাপানের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেন। তিনি জাপান থেকে ফিরেন ২৯ মে সকালে। প্রধানমন্ত্রীর প্রস্থানকালে ঢাকাস্থ হযরত শাহজালাল বিমান বন্দরের ভিভিআইপি চত্বরে উপস্থিত থাকার জন্য মোট ২৩ জনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। এছাড়া প্রটোকল অনুষ্ঠানের দায়িত্ব সম্পাদনের জন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের চারজন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
জানা গেছে, আমন্ত্রিত ২৩ জনের তালিকায় ১ নম্বরে ছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। এরপর ছিল, শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, বিমান ও পর্যটন মন্ত্রী রাশেদ খান মেননের নাম। প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী চারজনের নামও ছিল এই তালিকায়। এরা হলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব আবদুস সোবহান সিকদার, পররাষ্ট্রসচিব মো. শহিদুল হক ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের রাষ্ট্রাচার প্রধান খন্দকার মোহাম্মদ তালহা। এই চারজন বাদে অন্য যারা প্রটোকলে আমন্ত্রিত ছিলেন প্রত্যেকের নামে সিরিয়াল নম্বরযুক্ত কার্ড ইস্যু হয় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে। যেমন অর্থমন্ত্রীর সিরিয়াল নম্বর ছিল ০১, শিল্পমন্ত্রীর ০২, বিমানমন্ত্রীর ০৩। আমন্ত্রিত ২৩ জনের মধ্যে ছিলেন- সংসদ উপনেতা সাজেদা চৌধুরী, চীফ হুইপ আ স ম ফিরোজ, সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম (জাতীয় সংসদের সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের সংসদীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে), কূটনৈতিক কোরের ডিন প্যালেস্টাইনের রাষ্ট্রদূত শাহের মোহাম্মদ, মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা, সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ইকবাল করিম ভূইয়া, ভারপ্রাপ্ত নৌ-বাহিনী প্রধান এএমএমএম আওরঙ্গজেব চৌধুরী, বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার মার্শাল মোহাম্মদ ইনামুল বারী, স্বরাষ্ট্র সচিব সিকিউকে মুসতাক আহমদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব আবুল কালাম আজাদ, পুলিশের আইজি হাসান মাহমুদ খন্দকার, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দ্বিপাক্ষিক, কনস্যুলার ও প্রশিক্ষণ বিভাগের সচিব মুস্তাফা কামাল, জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা অধিদফতরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. সামছুল হক, প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদফতরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. আকবর হোসেন, বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের চার্জ দ্য এ্যাফেয়ার্স, হিরোইকি মিনামি এবং বাংলাদেশ বিমানের এমডি-সিইও এএম মোসাদ্দেক। এছাড়া প্রটোকল অনুষ্ঠান আয়োজনের দায়িত্বে ছিলেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. মঈন উদ্দিন, যুগ্মসচিব মো. আবদুল ওয়াদুদ, উপ-সচিব মো. নাজমুল হুদা সিদ্দিকী ও প্রটোকল অফিসার মো. ইমদাদুল ইসলাম। এইচটি ইমামসহ ওই তিনজন তালিকার বাইরে উপস্থিত হন।

শেয়ার করুন !!Share on FacebookTweet about this on TwitterShare on Google+Share on LinkedInShare on RedditBuffer this pageDigg thisShare on TumblrPin on PinterestShare on StumbleUponFlattr the authorEmail this to someone