একজন আদর্শ নারীর যে ১০টি বিষয়
শারমিনা কবিরঃ একজন আদর্শ নারী বলতে কেমন মানুষকে বোঝায়? যিনি সারাদিন ঘর-সংসার সামলান তাঁকে? নাকি যিনি নিজের কাজ নিয়েই ব্যস্ত থাকেন? আজকালকার এই আধুনিক পৃথিবীতে আদর্শ নারী তিনিই, যিনি কিনা নিজের পরিবার, কাজ ও স্বপ্নের মাঝে চমৎকার সমন্বয় সাধন করতে পারেন। যিনি একইসাথে সামলে নিতে পারেন নিজের সমস্ত পারিপার্শ্বিকতা। নিজেকে মাঝে মাঝে খুব ক্লান্ত মনে হয়? কিংবা ব্যর্থ মনে হয়? কিংবা নিজেকে আরও একটু গুছিয়ে তুলতে চান? তাহলে আজকের এই ফিচারটি আপনার জন্যই।
১. কাউকে ভালোবাসা একটি বিপজ্জনক কাজ, কিন্তু এটা অনেক বেশি মূল্যবান :
নারীরা ভালোবাসতে পছন্দ করেন। কিন্তু এই ভালোবাসা শুধুমাত্র একটি মানুষের মাঝেই আবদ্ধ থাকলেই চলবে না। এই ভালোবাসা ছড়িয়ে দিতে হবে সারা পৃথিবীতে। আপনি ভালোবাসুন আশেপাশের সবাইকে। ভালোবাসুন পথের অসহায় শিশুটিকে, নিঃসন্তান নারীটিকে, ভালোবাসুন অন্ধ লোকটিকে, বিধবা বধুটিকে। ভালোবাসুন প্রতিটি মানুষকে। সবাইকে ভালোবাসা যদিও অনেক বেশি বিপজ্জনক তারপরও এর মূল্য কিন্তু অনেক বেশি।
২. নারীদের একজন আরেকজনকে সাহায্য করা উচিৎ :
একজন নারীই হতে পারেন আরেকজন নারীর সর্বশেষ্ঠ বন্ধু। সবাই বলে থাকেন একজন নারী অরেকজন নারীকে কোনোভাবেই সহ্য করতে পারেন না। এই কথাটিকে মিথ্যে করে দিতে পারে একমাত্র নারীরাই। নারীরা চাইলে একজন অসহায় নারীকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে পারেন। এভাবে প্রত্যেকটি নারী প্রত্যেকের পাশে দাঁড়ালে পুরো নারী জাতিই নিজেদের বিকশিত করতে পারবে। পুরুষের সাথে সাথেই এগিয়ে যাবে।
৩. সাফল্যের উপায় খুবই সহজ, উপভোগ করুন :
জীবনে সাফল্য অনেকেই অনেক বেশি চিন্তা করে থাকেন। কিন্তু জীবনে সাফল্যের পথ একেবারেই সহজ। শুধুমাত্র নিজের কাজটিকে উপভোগ করুন, গুছিয়ে করুন, আপনি যা কিছুই করেন না কেন মন দিয়ে ভালোবেসে করুন তাহলেই আপনার সাফল্য আপনার হাতের মুঠোয় চলে আসবে। আপনাকে আর সাফল্যের পিছনে ঘুরে ঘুরে মরতে হবে না। একজন আদর্শ মানুষ হতে পারবেন।
৪. যেখানে আপনি পারবেন পরিবর্তন করুন, কিন্তু যেখানে পারবেন না করবেন না :
আপনি একজন সচেতন নারী হতে পারেন। আপনি ভাবছেন সমাজের এই জায়গাটিতে আপনি কিছু পরিবর্তন আনতে পারবেন, আপনাকে সাদরে আমন্ত্রণ জানানো হল, আপনি পরিবর্তন করুন। তবে সবার আগে ভেবে নিন আপনি পরিবর্তন করতে আদৌ পারবেন কি না। যদি পারেন তবে তা করুন আর যদি তা না করেন তাহলে এই বিষয়ে না এগোনোই ভালো।
৫. নিজেকে বিশ্বাস করুন :
একজন আদর্শ নারী হতে চাইলে সবার আগে নিজেকে বিশ্বাস করুন। আপনি কি পারেন আর কি পারেন না সে বিষয়ে নিশ্চিত হন। আপনার কন্ঠকে ভালোবাসুন। আপনি যে কোনো বিষয়ে কথা বলতে পারেন সেটিকে প্রমাণ করুন। নিজের সম্পর্কে জানুন।
৬. ক্ষমার মূল্য বুঝতে শিখুন :
ক্ষমার উপরে কোনো বিষয়ই হতে পারে না। এই চরম সত্যটিকে বিশ্বাস করুন। প্রতিটি নারীই এমনিতেই ক্ষমা করতে জানেন। তারা এমন অনেক অপরাধেরও ক্ষমা করে দেন যার কোনো ক্ষমা হওয়া উচিৎ না। নারীরা এর মূল্য অবশ্যই অনেক আগে থেকেই জানেন। তবে একজন আদর্শ নারী হতে নতুনভাবে এই ক্ষমার মূল্য বুঝতে শিখুন।
৭. দেখাই সবকিছু নয়, প্রতিবাদ করতে হবে :
আপনি আপনারা আশেপাশে দেখছেন অনেক বেশি অন্যায় হচ্ছে। কিন্তু আপনি শুধু দেখেই ক্ষান্ত হচ্ছেন। তাহলে নারী জাতি এগিয়ে যাবে কি করে? আপনি যদি সচেতন নাগরিক হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই এই ধরনের অন্যায়গুলোর প্রতিবাদ করতে জানতে হবে। নিজের অবস্থান তৈরিতে এবং সকল অসহায়ের সহায় হতে এই সব অন্যায়গুলোর বিপক্ষে কথা বলতে হবে। তাহলে হতে পারবেন একজন আদর্শ নারী বা আদর্শ নাগরিক।
৮. ‘পশু’ কে মারতে ভয় পাবেন না :
সমাজে এমন অনেক পশুরুপ পুরুষ রয়েছে যারা রাস্তাঘাটে নারীদের অবমূল্যায়ন করতে দ্বিধাবোধ করে না। এইসব পশুরুপ পুরুষদের মারতে কোনোভাবেই ভয় পাবেন না। নিজেদের অবমূল্যায়নে চুপ করে বসে থাকলে এরা আরও বেশি সুযোগ পেয়ে যায়। এ কারণে যতটা পারেন এই পশুগুলোর প্রতিবাদ করুন।
৯. আপনি যদি খারাপ অবস্থানে থাকেন তাহলে এখনি বের হয়ে আসুন :
খেয়াল করে দেখুন আপনি কোনো ধরনের খারাপ অবস্থানে আছেন কি না। কোনো ধরনের অসহায়ত্বে আছেন কি না। যদি থেকে থাকেন তাহলে সেই অবস্থান থেকে এখনি বের হয়ে আসুন। নিজের অবস্থানকে দৃঢ় করতে নিজেকে আবিষ্কার করুন। শক্তভাবে সব বাঁধা এড়িয়ে চলুন। তাহলে দেখবেন কোনো ধরনের সমস্যাই তৈরি হবে না।
১০. সবসময় হাসুন :
আপনি হতে পারেন একজন অসুখী নারী কিন্তু যতটা পারেন সবসময় হাসিখুশি থাকার চেষ্টা করুন। নিজেকে কখনই অসহায় ভাববেন না। বাঁধাগুলোকে পার করার মত শক্তি নিজের মাঝে রাখুন। এজন্য সবসময় হাসুন।